রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

পাখিদের পাড়া পড়শী ২/১০ পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ-বাসুদেব দাস, Pankaj Gobinda Medhi, Pakhider para porshi

 পাখিদের পাড়া পড়শী ২/১০

পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি   

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ-বাসুদেব দাস,  

Pankaj Gobinda Medhi, Pakhider para porshi



দ্বিতীয় অধ্যায়, ২/১০

একটি গাড়ি থেকে নেমে বনরক্ষীটি জোরে জোরে চিৎকার করে কিছু একটা বলছে। উদয়শঙ্কররা তার ভাষা বুঝতে পারছ না। গাড়ির চালক লীনা কে উদ্দেশ্য করে বলল–' ম্যাডাম।অনুগ্রহ করে চিৎকার করবেন না।'

ভয়ে কাঁপতে থাকা লীনা চালককে উষ্মার সঙ্গে বলল – আপনারা গাড়িগুলি জোড়ে চালিয়ে দিচ্ছেন না কেন।

লীনার মুখমন্ডল এবং প্রকাশ ভঙ্গিমায় আতঙ্কের ছাপ।

—না না। আপনি বলার মতো হয় না। কোন একটি গাড়ি অসুবিধাবশত থেকে গেলে আর হাতিটা কোনোভাবে সুবিধা পেলেই সেই গাড়িটিকে আক্রমণ করবে। আমাদের হাতিটাকে বোঝাতে হবে যে আমরা তার কোনো অনিষ্ট করব না। অন্যথা তাকে ভীতিগ্ৰস্ত করে তুলতে হবে। আমাদের সঙ্গে পাল্লা মেলাতে গেলে তা তার পক্ষে ভারী হবে সেটা জানাতে হবে ।

বনরক্ষীটি চিৎকার করে বলা শব্দগুলিতে হাতিটা কিছুটা আশ্বস্ত হল। কিছুক্ষণ পরে সে শান্ত হল এবং সাধারণভাবে দলটির দিকে তাকিয়ে রইল।

ধীরে ধীরে গাড়ির শোভাযাত্রা এগোতে লাগল। সাধারণত চালকরা নিয়মমাফিক গাড়ি চালায়।

ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়া গাড়ির সামনে দিয়ে হঠাৎ একটা উলুমরা পাখি পার হয়ে গেল। ইংরেজিতে পাখিটাকে বেঙ্গল ফ্লোরিকান বলে। বৈজ্ঞানিক নাম 'হোবার'পছিছ বেংগেলেনেছিছ'। পাখিটা দেখে উদয়শঙ্কর আপ্লুত হয়ে পড়ল। অভয়ারণ্যে দেখতে পাওয়া প্রতিটি বন্যপ্রাণীর গতিবিধি লক্ষ্য করার আমেজ আলাদা। উলুমরা পাখির পুরুষ-নারী বোঝা সহজ। পুরুষগুলির ডানার কাছে একটা স্পষ্ট সাদা দাগ থাকে। কালো ঠোঁট, ঠেং হলদে রঙের। নারীরা আবার বাদামী রঙের,তাতে কালো কালো দাগ আছে।কালো ডানা। উলুমরার মুখ্য বাসস্থান ঘাসবন। পাখিটাকে নিঃসঙ্গভাবে বিচরণ করতে দেখা যায়। পোকা-পতঙ্গ, ব্যাঙ, ছোট সরীসৃপ, গাছের গুটি, ঘাসের বীজ এদের মুখ্য খাদ্য। মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রজননে লিপ্ত হওয়া পাখিটা ঘাস পাতার তৈরি বাসায় দুটো ডিম পাড়ে।

পার হয়ে যাওয়া উলুমরা পাখিটা নারী।

প্রতিটি অংশগ্রহণকারী উঠে দাঁড়িয়ে পাখিটাকে দেখার চেষ্টা করায় পাখিটা রাস্তা পার হয়ে ঘাসের মধ্যে লুকিয়ে পড়ল।

গাড়ির শোভাযাত্রা এগিয়ে চলেছে কেরাছিঙের দিকে।

ওরা এগোতে এগোতে ডাফলং নিরীক্ষণ স্তম্ভের কাছে পৌঁছাল। স্তম্ভটির ওপরে দলটি সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেছে। দূরের দিকে তাকালে এই নিরীক্ষণ স্তম্ভ থেকে কাজিরাঙ্গার এক- বিস্তৃত অংশ দেখতে পাওয়া যায়। ছোট ছোট ঝোপ এবং উচ্চ গাছপালা ।অংশগ্রহণকারীরা নিরীক্ষণ স্তম্ভের ওপর থেকে দূরের দিকে তাকাচ্ছে । ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক শব্দে পরিবেশ আনন্দ মুখর হয়ে উঠেছে।

সেই সবের প্রতি উদয়শঙ্করের ভ্রুক্ষেপ নেই। সে কেবল অরণ্যের উদারতার মধ্যে নিজেকে বিলীন করে দিতে চেষ্টা করছে। সত্যি কথা বলতে গেলে সে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে এই মুক্ত আরণ্যক পরিবেশের মধ্যে। উদ্যোগ এবং বাণিজ্যিককরণ মানুষকে কৃত্রিম ভাবে বেঁচে থাকায় স্বাচ্ছন্দ প্রদান করেছে। তার বিপরীতে প্রকৃতির মুক্ত পরিবেশের সান্নিধ্যে অনুভূতি সম্পন্ন মানুষের জন্য মানব সভ্যতার অতীতের হারানো উৎসের সন্ধান লাভ করার সহায়ক হয়। প্রকৃতির সাহচর্য ছেড়ে আসা মানুষ সেই জন্যই প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করলেই আপ্লুত হয়ে পড়ে।

ডাফলং পার হয়ে গাড়ির শোভাযাত্রাটা ডুবল নদীর তীর ধরে অতি ধীর গতিতে মনাবিলের দিকে এগিয়ে চলেছে ।

নদীর জল ক্রমান্বয়ে শুকিয়ে আসছে। নদীতে পড়ে থাকা একটা গাছের ডালে কাছিমের একটা ঝাঁক রোদের আমেজ নিয়ে বিশ্রাম করছে।মাথাটা সূর্যের দিকে করে বসে থাকা একটা কাছিমের পেছনে একই ভঙ্গিমায় অন্য একটি তার পেছনে অন্য একটি কাছিম। ছয়টা কাছিমের সারিকে দেখতে মালা গেঁথে রাখার মতো মনে হচ্ছে।গাড়ির শোভাযাত্রাটা নদীতীরের এই নির্দিষ্ট জায়গাটিতে কাছিম দেখার সুবিধার জন্য কিছুক্ষণ এখানটাতে দাঁড়াল। দু'একজন গাড়ি থেকে মালাগাঁথা কাছিমের সারিটির আলোকচিত্র নেবার চেষ্টা করল। রৌদ্রস্নাত কাছিমগুলি সম্ভবত মানুষগুলির উপস্থিতির আভাস পায় নি। পেয়ে থাকলে গাছের ডাল থেকে টোপ টোপ করে খসে পড়ার মতো ওরা জলে ঝাপিয়ে পড়ত।

ধীরে ধীরে গাড়ির শোভাযাত্রাটা সামনের দিকে এগিয়ে চলল।

রাস্তার পাশে ঘাস এবং মাঝে মধ্যে দুই একটি ছোট ধরনের গাছ।অভিজ্ঞতা থেকে কোন জায়গায় জন্তুর উপস্থিতি সম্ভবপর তা চালকদের জ্ঞাত। তারা সেইমতো গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

ঘাসের মধ্যে ঘোক ঘোক শব্দ শুনে চালক গাড়ির গতি বেগ পুনরায় কমিয়ে দিল। ঘাসের মধ্যে মুক্ত জায়গাটিতে একটি বন্য শুয়োর আপন-মনে খাদ্যের সন্ধান করে বেড়াচ্ছে। হাতির মতো বেরিয়ে আসা দাঁত দুটির জন্য শুয়োরটাকে পুরুষ বলে অনায়াসে শনাক্ত করা যায়। বন্য শুয়োরগুলি গৃহপালিত শুয়োরের মতো একই আকার এবং আকৃতির। কেবল ওদের গায়ের লোম গুলি খাড়া এবং অত্যন্ত পাতলা। লোমগুলি এত পাতলা যে কালো চামড়ার ওপরে এই লোমগুলি আছে কিনা তা বুঝতেই পারা যায় না। অন্যদিকে শুয়োরটির মাথার সামনের ভাগ থেকে মেরুদণ্ডের ওপর দিয়ে দীর্ঘ লোমের এক শৃঙ্খলা বিরাজমান।

চাচস্ক্রফাকৃষ্টেটাচ প্রজাতির শুয়োরগুলির এই প্রতিনিধিকে সামনে দেখতে পেয়ে উদয়শঙ্করের ভালো লেগে গেল। প্যালিওলিথিক থেকে এই প্রজাতিটি আজ পর্যন্ত আদিম প্রাণীকুলের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে। ভীমবেতকর গুহা চিত্রে দেখতে পাওয়া শুয়োরটাই এই বন‍্য শুয়োরের পূর্বজ। ব্রাহ্মণে যে লেখা আছে অসুরের কাছ থেকে ইন্দ্র একটা শুয়োর চুরি করেছিল এবং বিষ্ণুকে প্রদান করেছিল ভগবানকে অর্পণ করার জন্য– সেই শুয়োরটা এটারই পূর্বজ। চরক সংহিতায় উল্লেখ থাকা অতি অতীতকালে জলের মাঝখান থেকে পৃথিবীকে প্রজাপতি হয়ে তুলে আনা শুয়োরটাই উদয়শঙ্কর দেখতে পাবা শুয়োর প্রজাতির আধ্যাত্বিক রূপ। রামায়ণ এবং পুরাণে বিষ্ণুর অবতার ধারণ করা বরাহ — অন্য শুয়োরের প্রজাতি নয়, সেটাই ছিল চাচস্ক্রফাকৃষ্টেটাচ প্রজাতির এই বন‍্য শুয়োরটার পূর্বজ।

কাজিরাঙ্গায় দেখতে পাওয়া অন্য বন্য জন্তুর চেয়ে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বিরাজ করা এই বিশেষ প্রতিনিধিকে দেখতে পেয়ে উদয়শঙ্কর সন্তুষ্ট।নিবিষ্ট মনে খাদ্যের সন্ধান করতে থাকা শুয়োরটি মানুষের সমাগম দেখতে পেয়ে দৌড়াদৌড়ি করে ঘাস বনের মধ্যে প্রবেশ করে অন্তর্ধান করল। পেছনের গাড়ি কয়েকটি থাকা দলটির সদস্যরা শুয়োরটাকে দেখতে পেল না।তারা একে অপরকে প্রশ্ন করতে লাগল— কী?কী?

পেছনের গাড়ি কয়েকটিতে আসা সদস্যদের কেউ বলতে পারল না– ব্যাপারটা প্রকৃতপক্ষে কি।

তাদের মাঝখানের কোনো একজন অনুমান করে বলল – দেখেছি ।দেখেছি ।

–কী দেখেছ?

অন্য একজন জিজ্ঞেস করল।

— একটি হরিণ।

মনাবিল পার হয়ে কেরাছিঙ থেকে দলটা ফিরে এল।কেরাছিঙের নিরীক্ষণ স্তম্ভ থেকে কাজিরাঙ্গা দেখার সুযোগ তারা হারাল না। নিরীক্ষণ স্তম্ভে উঠে তারা কোনো জন্তু ইত্যাদি নিরীক্ষণ করার সুযোগ পেল না। বনরক্ষীর বক্তব্য অনুসারে এই সময়ে এই জায়গায় বন্যজন্তু দেখতে পাওয়া যায় না। একেবারে সকালের দিকে অথবা বিকেলে এখানে জন্তু দেখতে পাওয়ার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে।

কেরাছিঙ থেকে ফিরে আসার সময় দলটি গণ্ডার দেখতে পেল। ততক্ষণ পর্যন্ত তারা কাজিরাঙ্গার ভেতরে একটাও গন্ডার দেখতে পায়নি বলে যাত্রাটা অসার্থক হওয়া বলে ভেবেছিল। দলের মধ্যে যে কয়েকজন প্রথমবারের জন্য কাজিরাঙ্গা দর্শনের সুবিধা পেয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই কাজিরাঙ্গার ভেতরে যে কোনো জায়গাতেই যে কোনো সময় গন্ডার দেখতে পাওয়া যাবে বলে একটা ধারণা মনের মধ্যে নিয়ে এসেছিল। সেই ধারণা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হতে তাদের খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হল না। গন্ডার দেখতে না পাওয়ার জন্য তাদের মনে অসন্তোষ দেখা দিল। কাজিরাঙ্গা এসে যদি গন্ডারই দেখতে না পায়, তাহলে কাজিরাঙ্গা এসে কী লাভ হল!

পূর্ণবয়স্ক একটা গন্ডার রাস্তার পাশে জঙ্গলের মাঝখান থেকে ঘাসগুলি ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছিল। গাড়ির শোভাযাত্রা থেকে গন্ডারটির দূরত্ব মাত্র কয়েক মিটার। দলটির সঙ্গে আসা বনরক্ষী এবং চালকরা অভিজ্ঞ। তবুও গন্ডারটিকে খুবই কাছে দেখতে পেয়ে তারা যথেষ্ট সাবধান হল। কাজিরাঙ্গার ভেতরে পর্যটককে গন্ডার আক্রমণ করার ঘটনা অনেকবার হয়েছে। সেরকম আক্রমণে বিদেশি পর্যটক নিহত হওয়ার খবর খবরের কাগজে পড়ার কথা উদয়শঙ্করের মনে আছে।

উদয়শঙ্কর কাজিরাঙ্গা আসবে বলে জানতে পারার পরে কথাপ্রসঙ্গে সমীরণ কলিতা বলেছিল– কাজিরাঙ্গায় পর্যটককে দেখাতে নেওয়া গন্ডার হাতিগুলি একেবারে ' ফার্ম এনিমেল'র মতো হয়েছে। বছর বছর ধরে পর্যটককে দেখে ওরা এখন অভ্যস্ত। মানুষকে দেখলে গুরুত্বই দেয় না। কচ্চিৎ দু একটা ঘটনা ঘটে। আপনি নিজের বাড়ির বাথরুমের মেঝেতে পিছলে পড়ার মতো ঘটনা।

গন্ডারটাকে দেখে প্রথমেই সমীরণ কলিতার কথা মনে পড়ল। তার মানে এই গন্ডারটিও কাজিরাঙ্গার 'ফার্ম এনিমেল'!

গন্ডারটি দলটির গাড়ির শোভাযাত্রার দিকে একবার তাকাল এবং একান্ত মনে ঘাস খেতে লাগল। উদয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে গন্ডারটির শরীরের প্রতিটি অংশ দেখতে পেল। দেখতে পেল ওদের দিকে তাকানোর সময় গন্ডারটির কানদুটি এবং খর্গটি এক বিশেষ জ্যামিতিক অবয়ব উপস্থাপন করছে। সে দেখতে পেয়েছে খর্গটির শীর্ষে মাটির একটি ছোট খন্ড লেগে আছে। সম্ভবত মাটির ঢিপি অথবা সেরকম কোনো উঁচু স্থানে গন্ডারটি খর্গ দিয়ে খুঁচিয়েছে। গন্ডারটির মোটা চামড়ায় লেগে আছে শুকিয়ে যাওয়া মাটির প্রলেপ। এত কাছ থেকে গন্ডারটিকে দেখতে পাওয়ার সুযোগ লাভ করে উদয়শঙ্করের ভালো লেগে গেল। চিড়িয়াখানার কথা আলাদা, বন‍্য অবস্থায় জন্তুকে দেখতে পাওয়ার আনন্দই আলাদা।

গন্ডারটির খড়্গটি দেখে উদয়শঙ্করের মনে প্রশ্ন জাগল খর্গ মানে কি!

উত্তর উদয়শঙ্করের মনে মজুত ছিল– কেবল চুলের সমষ্টি।

এই নিরীহ গন্ডারটির খর্গ কেটে নেবার জন্য একদল মানুষ যে কীভাবে এত উদ্দাম হয়ে উঠতে পারে। একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে কেনিয়ার মতো আফ্রিকীয় গন্ডার থাকা দেশ কয়েকটি। একমুঠো চুলের প্রতি মানুষের এত দরদ, অন্ধ বিশ্বাসের বাণিজ্যিক প্রসার।

একটা সময়ে পৃথিবীতে বিচরণ করা গন্ডার আজকের দিনে আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মাত্র কয়েকটি দেশে পাওয়া যায়। এশিয়া মহাদেশের তিন প্রজাতির গন্ডার পাওয়া যায়। এক খর্গযুক্ত ভারতীয় গন্ডার যার বৈজ্ঞানিক নাম রাইনোসরাস ইউনিক'র্নিস এবং অন্য দুই ধরনের এক ধরন হল সুমাত্রা বা জাভার এক খর্গযুক্ত গন্ডার, রাইনোসেরাস সোনডাইকাছ এবং অন্যটা হল এশিয়ার দুই খর্গযুক্ত গন্ডার ডিডারম'সেরাছ সুমাত্রেনছিছ । কয়েক বছর আগে নাকি এই দুই খর্গযুক্ত গন্ডার অসমের অরণ্যেও পাওয়া যেত।দুই খর্গযুক্ত গন্ডার যদি এখনও অসমে থাকত! কী হত- দুষ্ট বনরক্ষী অফিসার এবং চোরাশিকারির ভোজ লেগে যেত। উদয়শঙ্কর দুই খর্গযুক্ত গন্ডারের চিন্তা থেকে সরে এসে কাজিরাঙ্গার মুক্ত অঞ্চলে উপস্থিত হল।

মিহিমুখ থেকে কেরাছিঙের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। আসা যাওয়া– দ্বিগুণ দূরত্ব অতিক্রম করে কাজিরাঙ্গা দর্শন করার জন্য দলটির প্রয়োজন হল প্রায় চার ঘন্টা। সৌম্যদা ওদের সঙ্গে যায়নি । ওরা শিবিরে ফিরে আসার সময় তিনি শিবিরের বারান্দায় একজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন ।

শিবিরের আজ অন্তিম দিন । কথাটা ভেবে উদয়শঙ্করের খারাপ লেগে গেল । কিন্তু শিবির যখন শেষ হবেই তাড়াতাড়ি যাবার জন্য অংশগ্রহণকারীরা তাড়াহুড়ো লাগিয়েছে । ভাত পর্বের শেষে প্রত্যেকে নিজের নিজের জিনিসপত্র নিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত হল।

বিদায় পর্বে সৌম্যদা প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে পুনরায় কিছু স্টিকার এবং পোস্টার অর্পণ করল ।বলল – এসব বিক্রি করলেও করতে পার। একটা পঞ্চাশ টাকা করে। আজ আমি বিদায় নেব এবং খুব দ্রুত আবার আমাদের দেখা হবে। এবার মানস রাষ্ট্রীয় অভয়ারণ্যে।

উদয়শঙ্কর সৌম্যদাদের সঙ্গে কথা বলে বোকাখাতে গিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে তিনসুকিয়া যাত্রা করল। মনের মধ্যে ভীষণ আলোড়ন অলেখ প্রতিক্রিয়া।

)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...