কিছু বই কিছু কথা- -২৯৬। নীলাঞ্জন কুমার
বায়োপলিটিক্স । পাপড়ি গুহ নিয়োগী । বৈভাষিক, ভদ্রকালী হুগলি । একশো কুড়ি টাকা ।
কবি পাপড়ি গুহ নিয়োগীর ' বায়োপলিটিক্স ' বইটি কোচবিহারের এক অনুষ্ঠানে উপহার পেয়ে ও পড়ে বিশেষ উপকৃত হয়েছি বলা যায় । কবি পাপড়ির কবিতা র তীব্রতা ও তীক্ষ্মতা তাকে বিরাট স্প্যানে দাঁড় করিয়ে দেয় । যদি এই কবির কবিতার ভূমিকা কাব্যগ্রন্থে প্রকাশ করা স্রেফ বাহুল্য মাত্র তবু যিনি এর ভূমিকা লিখেছেন তিনি এই কবিকে ঠিকঠাক ধরতে পেরেছেন বলে বাহবা দিতে হয় । ভূমিকাকারের কথায় ' কবিতা তো আসলে একটা বিদ্রোহ ' কিংবা ' শাসকের চোখে চোখ রেখে গর্জে ওঠেন তিনি তাঁর ' বায়োপলিটিক্স ' কাব্যগ্রন্থেরপ্রতিটি কবিতায় ' কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায়,' এ কথা কাব্যগ্রন্থটি পড়তে পড়তে সহমত হতে হয় । ' মাদারচোদ এখন ছেলেমেয়েদের লিরিক 'এর মতো কবিতার লাইন পাপড়ির কবিতার প্রতিবাদী দিকটি বিশেষভাবে চিনতে সাহায্য করে।
কাব্যগ্রন্থের শেষ কবিতাটি আমায় তন্ময় করে: ' মৃত্যু/ ঠিক আছে/ মৃতদেহ! ' ( ' খেদ ') বর্তমান বাস্তবকে ঠিকরে সামনে তুলে আনে ।এছাড়াও তাঁর কবিতায় জ্বালাময়ী পংক্তি পাই: ' ওরা অন্ডকোষের ঘা চেটে/ বগল চেটে/ হাতল তৈরি করে ' ( জবাতন্ত্র '), ' মানুষের বাজারে সব যখন জট পাকিয়ে যায়/ সম্পূর্ণ নগ্ন আমরা ধীরে ধীরে দালাল হয়ে উঠি '( ' দেশদ্রোহীর ডায়েরি -৭') , ' ঈশ্বরকে আলিঙ্গন করে দেখিয়ে দেব/ মানচিত্রে অস্ত্রোপচারের ভিডিও ' ( ' দেশদ্রোহীর ডায়েরি- ৬) , 'আজকাল থুথু গিলে/বাক্ স্বাধীনতা নিয়ে আত্মহত্যা আঁকি ' ( সেলিব্রেশন '), ' ক্রমাগত আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি/ জ্বর, কাশি শ্বাসকষ্টের চেয়েও/ আজকাল পেটকে ভয় করে ' ( ' একটু শুনবেন স্যার ') সত্যি সত্যি তিনি সমাজের হৃৎপিন্ড উপড়ে আমাদের সামনে দেখাতে চেষ্টা করেছেন । হিরণ মিত্রের করা প্রচ্ছদ বর্তমান সময়ের কথা আমাদের শোনান তাঁর মুন্সিয়ানা দিয়ে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন