কিছু বই কিছু কথা - ২৯৫ । নীলাঞ্জন কুমার
জাদুটোনা । দেবান্ঞ্জন চক্রবর্তী । নিউ ভারত সাহিত্য কুটির , কলকাতা- ৯ । একশো টাকা ।
কবি দেবান্ঞ্জন চক্রবর্তীর বাংলা কবিতার জগতে স্থান আছে বলা বাহুল্য ।আমবা তাঁর সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ' জাদুটোনা ' যদি পড়ে ফেলি তবে তার ভূমিকার ভেতর এক অমোঘ সত্য তুলে ধরেছেন তা দেখতে পাই , যা হল: ' কাব্যের মাদকতায় আচ্ছন্ন হলে একদিকে যেমন জীবনে অনেক অতৃপ্তি আসে অন্যদিকে সেটি রঙে-রসে- রূপে- বর্ণে- গন্ধে ভরে ওঠে । ' কবি প্রকৃতার্থে সেই বর্ণে গন্ধে জাদুতে মেতেছেন যা স্রেফ হাতসাফাই নয় । তাঁর পংক্তিতে দেখতে পাই: ' খানিকটা পুষ্টিকর মেঘ আর কুন্ঠাহীন জ্যোৎস্না ও রোদ/ সকলেই পেয়ে থাকে পাখি ও পাথরও ....' ( ' কোটরসর- তীরথগড় ') , ' দারিদ্র্য রেখার নীচে ' যে মেয়েরা গান গায়, খুনসুটি করে/ তাদের প্রশ্ন করি, রঙিন মাছের চাষ কোথায় শেখেন ।' (' দারিদ্র্য রেখার নীচে ') , ' মার খাওয়া বাংলা ভাষা আশ্রয় নিচ্ছে জঙ্গলে/ অপমানে তার পিঠ বেঁকে গিয়ে দেওয়ালে ঠেকেছে/ হেমব্রম সরেন হাঁসদা দের ঘরে ঘরে এখন তার নবজন্মের নামতা ... ( 'ভালো পাহাড় ') ।
কবি দেবান্ঞ্জনের কবিতার চরিত্রে রয়েছে নতুন শব্দের মাধ্যমে নতুন নতুন চিন্তার প্রকাশের কথা ভাবা । কবি বহু দেখেছেন আর দেখেছেন বলে অবলীলায় বলতে পারেন: ' কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের পায়ের শব্দ শিকারী শোনেনি ।/ যুবতীরা ভয়ে রাত জেগে শুয়ে আছে '( দয়াময়) , কোন কোন মানুষও জীবন প্রবাহে/ ছেড়ে দেওয়া ভূতজালে ধরা পড়ে, বন্দী থাকে আজীবন .....' ( ' 'ভূতজাল')।
কবির এই ভাবনা যে এই আলোচককে তাড়িত করবে একথা সঠিক । তাঁর পরবর্তী কাব্যগ্রন্থের দিকে তাকিয়ে রইলাম । প্রচ্ছদ কবিকৃত । আরো ভাবনার অবকাশ ছিল ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন