বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বিদেহ নন্দিনী~ ২৬ ।। ডঃমালিনী ।। মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদঃ বাসুদেব দাস Bideha Nandini- 26

 বিদেহ নন্দিনী~ ২৬

ডঃমালিনী 

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদঃ বাসুদেব দাস 

(ছাব্বিশ)

ভোর রাতের স্বপ্ন ফলবেই এমন কথা যদিও বিশ্বাস করিনা,ত্রিজটার স্বপ্ন আমাকে কিছুটা মনোবল জুগিয়েছিল। তাই অনেকক্ষণ ত্রিজটার কথাগুলি মনের মধ্যে রোমন্থন করছিলাম। হঠাৎ  কাউকে আস্তে কিন্তু স্পষ্ট কন্ঠে স্বামী রামচন্দ্রের গুণানুকীর্তন করতে শুনলাম। আমি এদিক ওদিকে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে মনের ভুল ভাবলাম। অনাহারে অনিদ্রায় থাকায় আমার মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করছে না বলে মনে হল।  তারমধ্যে দুদিন থেকে আমার  অনবরত বাঁচোখ ,বাহু, দাবনা কাঁপছিল। বোধহয় দুর্বল হওয়ার জন্য  স্নায়ুর  বিকার ঘটেছে। একদিন ত্রিজটাকে  জিজ্ঞাসা করায়  আশ্বাস দিয়ে বললেন -'বাঁ দিকের চোখ কাঁপা ভালো। শুভসংবাদ পাবি।' আমি ত্রিজটার কথায় কিছুই বললাম না। মনে হল তার স্বভাব এরকমই । প্রতিটি কথারই অর্থ খুঁজে পায় । তাছাড়া আমার মনকে ভালো রাখার জন্যই কখনও খারাপ কথা বলে না। কিছুক্ষণ পরে আবার একইভাবে সুমধুর সুরে কাউকে আমাদের অতীত ইতিহাস কীর্তন করতে শুনলাম। কেউ নির্ভুলভাবে স্বামী রামচন্দ্রের জন্ম রহস্য, বিবাহ,রাজা দশরথের দ্বারা  রামচন্দ্রের অভিষেকের আয়োজন, মাসি শাশুড়ির কুবুদ্ধির ফলে  বনবাসে আগমন, বনবাসে রামচন্দ্রের স্বর্ণমৃগের সন্ধানে যাওয়া এবং রাবণ কর্তৃক সীতা হরণ, রামচন্দ্র পত্নীর খোঁজে কীভাবে সর্বত্র তল্লাশি করে বেড়াচ্ছেন এই সমস্ত কিছুই সুললিত স্বরে পাঠ করার মতো বলে চলেছে। আমি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে, গলা বাড়িয়ে এদিকে ওদিকে তাকালাম। হঠাৎ গাছের উপরে একটা ছোট বাঁদরকে দেখতে পেলাম। বাঁদরটা স্থির ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আমি ভাবলাম এটা কে? মায়াবী রাক্ষস নাকি?  আমি বাঁদরটাকে ভালোভাবে নিরীক্ষণ করলাম। ইতিমধ্যে বাঁদরটা গাছ থেকে নেমে এসে আমাকে হাত জোড় করে প্রণাম জানিয়ে ছিল। বাঁদরটাকে দেখে আমার মনে হচ্ছিল এটা মায়ার সাহায্যে বাঁদরের রূপ নিয়েছে ঠিকই কিন্তু রাক্ষস নয়। হলেও আমার বিপদের বন্ধু হতে পারে। আমি মনের ভেতর কথাগুলি চিন্তা করে থাকার সময়ে বাঁদরটা খুব ভক্তিভাবে বলতে শুরু করল- হে মা, আপনি কে? আপনার তপস্বিনীর বেশ, চোখের জল দেখে আমার মনে হচ্ছে আপনি বোধহয় সীতাদেবী, দণ্ডকারণ্য থেকে যাকে হরণ করা হয়েছিল। সকাল থেকে গাছের ডালে নীরবে বসে থেকে সমস্ত কথাবার্তা শুনে আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে। তাই হে মাতা, প্রভু রামচন্দ্রের দূত হয়ে আমি যার অন্বেষণে এখানে এসেছি আপনি সেই সীতাদেবী নন কি?

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বাঁদরটা নিজের পরিচয় দিল- 'আমি প্রকৃতপক্ষে কিস্কিন্দার রাজা সুগ্রীবের মন্ত্রী,মহারাজ সুগ্রীব রামচন্দ্রের পরম মিত্র এবং আমি প্রভু রামচন্দ্রের পরম ভক্ত। আমার নাম হনুমান।আমার পিতা বায়ু দেবতা এবং মাতার নাম অঞ্জনা।' তারপরে হনুমান রাম লক্ষ্ণণের  সঙ্গে কীভাবে দেখা হল, সুগ্রীবের সঙ্গে মিত্রতা হল,সমস্ত কিছু সংক্ষেপে বর্ণনা করল। হনুমানের কথাগুলো শুনে আমার বিশ্বাস হয়েছিল যদিও এখনও সন্দেহ দূর হয়নি। আমার ইতস্ততঃ মনোভাব দেখে বাঁদরটা স্বামী রামচন্দ্রের শরীরের বিভিন্ন চিহ্ন বর্ণনা করল এবং আমরা দুজন আলাপ করা কিছু কথা বলল। যে সমস্ত আমাদের দুজনের বাইরে আর কারও পক্ষে জানার উপায় ছিল না। তবুও আমার মন পরিষ্কার না হতে দেখে বাঁদরটা পুনরায় বলল-হে জনক  নন্দিনী, আপনি আমাকে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করবেন না। আমি এরকম একটা পরিস্থিতির উদ্ভব হবে বলে সন্দেহ করেছিলাম। তাই প্রভু রামচন্দ্র সব সময় পরে থাকা আংটিটা আপনাকে দেখানোর জন্য আমাকে দিয়ে পাঠিয়েছে। স্বামীর নাম চিহ্নিত করা আংটিটা দেখেই আমি চিনতে পারলাম। বিয়ের দিন হোমের গোড়ায় পরানো আংটি। আমার চোখ দিয়ে অশ্রু বইতে লাগল। আমি রুদ্ধ কন্ঠে বললাম-' হে পরম সুহৃদ তুমি রাক্ষসের দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত এই রাক্ষস পুরীতে কীভাবে এসে পৌঁছালে তা ভেবে অবাক হচ্ছি। তুমি যে অসাধ্য সাধন করে আমাকে খুঁজে বের করেছ এটি তোমার দৃঢ়তা,কার্য ক্ষমতা শক্তি এবং অপরাজেয় মনের পরিচায়ক। তোমার প্রভুর তুমি উপযুক্ত দূত। তবে এখানে প্রকাশ্যেই এভাবে কথা বলা সমীচীন হবে না। তাই অতি সাবধানে আমাদের কথা বলতে হবে। আজ আমার কপাল ভালো। ত্রিজটা আমাকে পাহারা দেওয়া সমস্ত রাক্ষসীকে তাড়িয়ে দিয়েছে। হনুমানকে আমার মিত্র বলে জানার পরে আমি স্বামীর বিষয়ে জানার জন্য ব্যগ্ৰ হয়ে পড়লাম।অনেক প্রশ্ন একসঙ্গে মনের মধ্যে ভিড় করে এল। তবুও আমার মনের মধ্যে মাঝেমধ্যে উদয় হওয়া কথাটা জিজ্ঞেস করলাম- 'হে বীরশ্রেষ্ঠ হনুমান,প্রথমেই আমি তোমার কাছ থেকে একটা কথা জানতে চাইছি। আমার স্বামী রামচন্দ্র এতদিন কেন আমাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেনি। তিনি তো ত্রিভুবন কাঁপানো পুরুষ। নাকি চোখের আড়াল হওয়ার  সঙ্গে সঙ্গে আমি মনের আড়ালেও চলে গেছি। অনেকদিন হয়ে যাওয়ায় আমার প্রতি তার স্নেহ কমে গেল নাকি? প্রশ্নগুলি করার সময় আমাকে শোক ঘিরে ধরেছিল। তাই স্পষ্ট কন্ঠে কথাগুলি বলতে পারছিলাম না।

হনুমান আমার কথা বুঝতে পারল। সে আমাকে বিশ্বাস করানোর জন্য বলল-' হে দেবী, প্রভু রামচন্দ্র জানে না যে আপনি লঙ্কাতে আছেন। আমি গিয়ে বললে তবেই জানতে পারবে। তারপরে দেখবেন তিনি সঙ্গে সঙ্গে সাগরে সেতুবন্ধ করে সোজা আপনাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে। আপনিতো দেখেননি প্রভু প্রিয়তমা পত্নীর চিন্তায় কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন। সব সময় আপনার ভাবনায় ডুবে থাকেন। পত্নী সীতাদেবীর গুণের কথা বলতে গিয়ে তার কথা যেন আর শেষ হতে চায় না। হে মাতা, প্রভু রামচন্দ্র এক মুহূর্তের  জন্যও আপনার কথা ভুলে যায়নি। আপনার বিরহে খেতে বা শুতে পারছেন না। মশা কামড়ালেও টের পান না। কখনও কিছুক্ষণের জন্য ঘুম এলেও পরমুহূর্তে আপনার নাম ধরে চিৎকার করে উঠেন।'

স্বামী আমার বিরহে ব্যাকুল হয়ে রয়েছে বলে জেনে অন্তরটা ভরে উঠেছিল। যদিও তাকে এত দুঃখ সহ্য করতে হয়েছে ভাবার সঙ্গে সঙ্গে আমার বুকটা ব‍্যথায় ভরে গেল। তাই হনুমানকে দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া ভালো হবে ভেবে বললাম- 'হে রামভক্ত হনুমান, তোমাকে দুদিনের মতো লুকিয়ে থেকে যাবার কথা বলতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আমি সেই কথা বলতে পারব না। তুমি অতি শীঘ্র গিয়ে স্বামীকে আমার খবর দিয়ে উদ্ধার কাজের ব্যবস্থা কর। না হলে আমার জীবনের অন্তিম কাল ঘনিয়ে আসতে আর মাত্র দুমাস বাকি।  সকালে তুমি গাছের ডাল থেকে রাবণের সমস্ত কথা নিশ্চয়ই শুনেছ। আমার একটা দিনই এক যুগ বলে মনে হচ্ছে। আমি দিন দিন যেভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছি, স্বামী উদ্ধার করার আগেই আমার প্রাণ বায়ু বেরিয়ে যাবে মনে হচ্ছে । আমার কথা শুনে দয়ালু হনুমান অন্তরে বড় দুঃখ পেল। সে আবেগ মিশ্রিত কন্ঠে বলল-' হে মাতা, আপনি চিন্তা করবেন না । আমি গিয়ে প্রভু রামচন্দ্রকে আপনার খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি এসে পড়বেন। আপনি যদি ইচ্ছা করেন,আমি এখনই আপনাকে নিয়ে যেতে পারি। আপনি আমার পিঠে উঠে বসুন, আমি এক লাফে সুবিশাল সমুদ্র পার হয়ে আপনাকে প্রভু রামচন্দ্রের কাছে নিয়ে যাব। হনুমানের কথা শুনে আমার প্রথমবারের জন্য মুখে হাসি বের হল। আমি বললাম -'তুমি কী আশ্চর্য কথা বলছ? এত ছোট বাঁদর একটা আমাকে কীভাবে পিঠে তুলে নেবে? সঙ্গে সঙ্গে হনুমান আমার কাছ থেকে একটু দূরে সরে গেল। কয়েকটি গাছের আড়ালে সে শরীরটা এভাবে বাড়াতে লাগল যে হনুমানের মাথা আকাশ পর্যন্ত গিয়ে স্পর্শ করল। শরীরটা মেরু পর্বতের মতো হল। আমি অবাক হয়ে সেই রূপ দর্শন করলাম।তারপর বললাম-'হে বাছা, তুমি যথার্থই বায়ুপুত্র। তুমি এই মুহূর্তে আমাকে নিয়ে যেতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস হয়েছে। কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে তিনটি কারণে যাবনা। প্রথমটি হল, তুমি উড়ে যাওয়ার সময় আমি হয়তো ঠিক ভাবে বসতে না পেরে সাগরে পড়ে যাব। দ্বিতীয়ত, আমাকে নিয়ে যেতে দেখলে রাক্ষসরা দলবেঁধে তোমাকে আক্রমণ করবে। তুমি আমাকে পিঠে নিয়ে প্রত্যাক্রমণ  করতে পারবেনা। তৃতীয়তঃ তুমি আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলে আমার স্বামী রামের গৌরব হবে না। তিনি নিজে এসে দুরাত্মা রাবণকে বধ করে আমাকে উদ্ধার করুক। তাই তুমি যেভাবে এসেছিলে সেভাবে দ্রুত গিয়ে রামকে আমার সংবাদ দাও। হনুমান বলল-' আমার সঙ্গে যে  আপনার দেখা হয়েছে প্রভু রামচন্দ্রকে সেকথা বিশ্বাস করানোর জন্য কিছু একটা চিহ্ন দিয়ে দিন।'

হনুমানের কথা শুনে আমার চোখে জল এসে গেল। কী চিহ্ন দিয়ে পাঠাব। আমার হাতে কী আছে। যে কয়েকটি অলংকার দেহে ছিল সেগুলিও রাবণ হরণ করার সময় চাদরের আঁচল ছিঁড়ে  বানর দলের মধ্যে এই ভেবে ফেলে দিয়েছিলাম- যেন এই অলংকার গুলি স্বামীকে দেখিয়ে আমার খবর দিতে পারে। এখন চিহ্ন হিসেবে দিয়ে পাঠানোর মতো আমার হাতে কিছুই নেই। তাই ভাবলাম হনুমানকে এমন একটা কথা বলি যা আমাদের দুজনের বাইরে আর কেউ জানে না। কথাটা হল -আমরা চিত্রকূটে বাস কটার সময় একদিন একটা দাঁড়কাক আমাকে বড় বিরক্ত করছিল। সে বারবার আমাকে ঠোকর দিচ্ছিল। আমি তাকে তাড়ানোর জন্য মাটির ঢিল ছুঁড়ে মেরেও কোনো কাজ হচ্ছিল না। স্নান করতে যাওয়ার পরেও ওটা বারবার উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছিল। স্বামী রামচন্দ্র দাঁড়কাকটার কান্ড দেখে বেশ মজা পেয়েছিল এবং আমাকে ক্ষ্যাপাচ্ছিল। আমি অভিমান করে তার বসে থাকা অবস্থায় কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পরে যখন আমি জেগে উঠলাম স্বামী বললেন ‘এখন আমার পালা’ বলে তিনি আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঠিক তখনই দাঁড়কাকটা এল। সে বারবার আমার বুকে ঠোকরাতে লাগল। স্বামীর ঘুম ভেঙ্গে যাবে ভেবে আমি নড়াচড়া না করে চুপ করে বসে রইলাম। দাঁড়কাকটা ঠুকরে ঠুকরে রক্ত বের করে দিল। তখনই স্বামী রামচন্দ্র জেগে উঠলেন। আমার অবস্থা দেখে তিনি দাঁড়কাকটার উপর প্রচন্ড ক্রোধে কুশ বন নিয়ে ব্রহ্মাস্ত্র মন্ত্রে বেঁধে দাঁড়কাকটার দিকে নিক্ষেপ করলেন। ব্রহ্মাস্ত্র দাঁড়কাকের দিকে তেড়ে গেল।  ভয়ে কাকটা ত্রিভুবন ঘুরে বেড়াল। নিরুপায় হয়ে  কাকটা এসে স্বামীর পায়ে আশ্রয় নিল। তখন আমরা জানতে পারলাম, কাকটা প্রকৃতপক্ষে দেবরাজ ইন্দ্রের পুত্র। স্বর্গ থেকে নেমে এসে ছদ্মবেশে নানা দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়েছিল। সমস্ত কিছু জানার পরে রামচন্দ্র বললেন -'তোমার প্রাণ রক্ষা করলাম,কিন্তু ব্রহ্মাস্ত্র কিছু একটা বিনাশ করবেই। তখন কাকরূপী ইন্দ্রপুত্র বলল- 'আমার একটা চোখকে বিনষ্ট করুন।'

প্রাণরক্ষা হওয়ায় ইন্দ্রপুত্র স্বামীকে প্রণাম জানিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেল। ঘটনাটা বলে আমি হনুমান কে অনুরোধ করলাম-' হে বীর, এই কথাটা যে ভাবে বলেছি সেভাবেই গিয়ে রামকে বলবে ,আর বলবে যে আমাকে আঘাত করার জন্য তিনি একটা সাধারন কাককেও ব্রহ্মাস্র  নিক্ষেপ করেছিলেন। এখন রাক্ষসরাজ রাবণ আমাকে হরণ করে এত অত্যাচার করা সত্ত্বেও তিনি কীভাবে সহ্য করে চলেছেন?

আমার কথা শুনে হনুমান আশ্বাস দিয়ে বলল-' হে, মাতা জনক নন্দিনী, আমি আপনার অন্তরের দুঃখ ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছি। আমি সমস্ত কথা প্রভুকে বিস্তৃতভাবে বলব। এখন আমি বিদায় ভিক্ষা করছি।' এ  কথা বলে হনুমান  আমার চারপাশে প্রদক্ষিণ করে প্রণাম জানিয়ে প্রস্থান করল।

কিছুক্ষণ পরে হনুমান পুনরায় ফিরে এসে বলল- 'হে দেবী , আপনাকে একটা কথা বলে যাবার জন্য এলাম।‍ লংকা এসেছি যখন এদের শক্তির সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়ে যেতে চাই। তাই আমি কিছু অঘটন ঘটাব। আপনি ভয় পাবেন না ।'এই বলে সে পুনরায় বিদায় নিয়ে চলে গেল।

কিছুক্ষণ পরে হনুমান  তার দেহটা বিশাল করে রাবণের অশোক বন একদিক থেকে উচ্ছন্ন করে যেতে লাগল। কেবলমাত্র আমার বসে থাকা ঔষধ গাছ এবং তার আশেপাশের কিছু গাছ বাদ দিয়ে বাকি সমস্ত গাছ উপড়ে ফেলে বিশৃংখলার সৃষ্টি করল। আমাকে পাহারা দেওয়া রাক্ষসীরা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এল। ওদের দেখে হনুমান শরীরটাকে আর ও বড় করে তুলল। রাক্ষসীরা আমাকে জেরা করতে লাগল-' সীতা এ কে? এখানে কেন এসেছিল? কে পাঠিয়েছিল? আমাদের সমস্ত কিছু খুলে বলতে হবে।'

আমি নির্ভীকভাবে বললাম-' আমি কীভাবে জানব? তোমাদের এই মায়াপুরীতে  কে কখন কী রূপ ধারণ করে তোমরাই তো জানবে। রাক্ষসীরা পুনরায় বলল-' তোমাকে তার সঙ্গে কথা বলতে দেখেছিলাম।' আমি অবাক হয়ে বললাম -'কী সব বলছ? আমি ওকে দেখে ভয়ে জড়সড় হয়ে পড়েছি। কথা বলতে যাব কেন? রাক্ষসীরা  আমার কথায় বিশ্বাস করল না ।ওরা  দ্রুত রাবণের কাছে গিয়ে নালিশ করল।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...