পূরবী~ ৫৮
অভিজিৎ চৌধুরী
তীর্থের আজকে ম্যাজিস্ট্রেট ডিউটি।ইনকোয়েস্ট বা সুরত হাল।এই বসুন্ধরায় থাকতে না পেরে কারুর অকালে চলে যাওয়া।আত্মহনন বা খুন।
মৃত্যু কখনও অভিপ্রেত নয় তবে সে এক অপ্রতিরোধ্য শাসক।স্বাভাবিক নিয়মে চলে গেলে শরীর একটু আধটু জানান দেয়।ট্যাক্সিডার্মি করতে আর কিছুই হয় না।
বাইশে শ্রাবণ এগিয়ে আসছে।হাওয়ায় ভাসছে আমি যে গান গেয়েছিলেম জীর্ণ পাতার ঝরার বেলায়।
পাতা জীর্ণ হলে ঝরে পড়ে।গাছে আবার নতুন পাতা আসে! মানুষের কি তেমন হয়! পুরোনো হাঁটু বিদায় নিয়ে নতুন হাঁটু।চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে হয়ইতো।জীবক ভদ্র তো কতো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লতা পাতা দিয়েও প্রতিস্থাপন করতেন।তখন গৌতম বুদ্ধ জরায় আক্রান্ত।জীবক বললেন,মহাত্মন্, আপনি চাইলে আরো কয়েক বছর আপনাকে রেখে দিতে পারি।থাকবেন!
তথাগত বললেন,না।আমি ফেলে আসা অযুত জন্ম দেখতে পাচ্ছি।আর নয়।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,আমি প্রকৃতির সন্তান।আমাকে গাছের পাতার মতোন ঝরে পড়তে দাও।
অস্ত্রোপচারে লাগছে তাঁর।ডাক্তার বললেন,ওঁর এসব মনের রোগ।লাগতে পারে না।
অবন ঠাকুর ফিরে গেলেন।রবিককাকা নিশ্চল শুয়ে রয়েছেন, এ তিনি সহ্য করতে পারবেন না।
তারপর কি বলতে পেরেছিলেন- মনেরে আজ কহো যে,/ ভালো মন্দ যাহাই আসুক/ সত্যেরে লও সহজে।
কখন যেন লিখেছিলেন,জীবনকন্টকপথে যেতে হবে নীরবে একাকী/সুখে দুঃখে ধৈর্য ধরি,বিরলে মুছিয়া অশ্রু আঁখি.....
তারপর ছিন্নপত্র আসে একালের কবির কাছে।মনে পড়ে যখন বোটে বসে লিখতুম,চারিদিকে জল বয়ে চলেছে মৃদু কলধ্বনিতে,দূরে দেখা যায়বালির চর ধূধূ করছে,আমি লিখেই চলেছি...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন