বিদেহ নন্দিনী
ডঃমালিনী
মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদঃ বাসুদেব দাস
(সাত)
ভরতেরা মামার বাড়ি পৌঁছে যাবার কয়েকদিন পরের কথা। আমি এবং স্বামী রামচন্দ্র সকালের কোমল রোদে বসে কথা বলছিলাম। তখনই প্রহরী এসে সংবাদ দিল যে মন্ত্রী তথা সারথি সুমন্ত্র স্বামী রামচন্দ্রের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। স্বামী নিজেই তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য উঠে গেলেন। দুজনেই রীতি অনুযায়ী পরস্পরকে সম্ভাষণ জানালেন।
মন্ত্রী সুমন্ত্র বললেন,-‘হে,রাজকুমার রাজা এই মুহূর্তে আপনার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। আপনাকে এখনই আমার সঙ্গে রাজসভায় যেতে হবে।’ স্বামী বুঝতে পেরেছিলেন যে দূত বা বার্তা বাহকের মাধ্যমে খবর না পাঠিয়ে মন্ত্রীকে যখন পাঠিয়েছেন নিশ্চয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচনার করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন। তিনি বিন্দুমাত্র বিলম্ব না করে মন্ত্রীকে অনুসরণ করলেন। কিছুক্ষণ পরে স্বামী রামচন্দ্র ফিরে এলেন। আমি তার মুখের দিকে তাকালাম। অবশ্য তার মুখের দিকে তাকিয়ে মনের ভাব বোঝা যায় না। সবসময় প্রফুল্ল মনে থাকার একজন মানুষ। তিনি আমাকে কাছে ডেকে বললেন, ‘জানকী, পিতা রাজা দশরথ আমাকে রাজ্যভার দিতে চেয়েছেন। তাই দু-একটি উপদেশ মূলক কথা বলার জন্য ডেকে পাঠিছিলেন।’
আমরা দুজন কথাটা সম্পূর্ণ বলতে না বলতেই মন্ত্রী সুমন্ত্র পুনরায় এসে জানালেন যে রাজা রামচন্দ্রকে এক্ষুনি আরেকবার ডেকে পাঠিয়েছেন। স্বামী তখনই মন্ত্রীর সঙ্গে পুনরায় বেরিয়ে গেলেন।
আমি কিছুটা অবাক হলাম। মনে হল হয়তো রাজার মন অস্থির হয়েছে। তাই কিছু সিদ্ধান্ত একা নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। বোধহয় এই জন্যই পুনরায় ডেকে পাঠিয়েছেন।’ কিছুক্ষণ স্বামীর আসার পথ চেয়ে আমি একই জায়গায় বসে রইলাম। তার আসতে দেরি হওয়ায় আমি আমার কাজ করতে লাগলাম।
বেলা পরে আসছিল। তবু স্বামী ফিরে না আসায় আমি কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। ঠিক তখনই লক্ষ্ণণ এসে উপস্থিত হল। সে আমাকে প্রণাম জানিয়ে বলল,‘ বৌদি শুভ সংবাদটা নিশ্চয় পেয়েছেন। ‘হ্যাঁ পেয়েছি’। রাজা অতি দ্রুত জ্যেষ্ঠ রাজকুমারের হাতে রাজ্যের ভার অর্পণ করতে চলেছেন। সংবাদটা তিনি নিজের মুখে স্বামী রামচন্দ্রকে দেবার পরে পুনরায় কেন ডেকে পাঠালেন সেটাই বুঝতে পারছি না, আমি বললাম। লক্ষ্ণণ সন্তোষের হাসি হেসে আমাকে বলল,‘অতি দ্রুত নয়, আগামীকালই দাদার রাজ্য অভিষেক অনুষ্ঠিত করার জন্য রাজা মনস্থ করেছেন বলে আমি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি। প্রতিবেশী রাজ্যের রাজাদের এবং কোনো কোনো রাজ্যের প্রধান প্রধান ব্যক্তিদের দ্রুত সংবাদ পাঠিয়ে নিমন্ত্রণ করেছেন। ইতিমধ্যে আজ রাজসভায় সভাসদদের সামনে মনের ভাব ব্যক্ত করে বলছিলেন-‘পরম আদরের সজ্জন, আপনারা জানেন আমার পূর্ব পুরুষরা কীভাবে দেশের এবং প্রজার কল্যাণের জন্য কাজ করে গেছেন আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে দেশের মঙ্গলের অর্থে কাজ করে প্রজাগণকে পুত্রের মতো পালন করে আসছি। এখন আমি আমার শরীরকে বিশ্রাম দিতে চাই। তাই আপনাদের সবার অনুমতি নিয়ে প্রজার মঙ্গলের অর্থে আমার জ্যেষ্ঠপুত্র রামচন্দ্রকে রাজ্যভার অর্পণ করে রাজকার্য থেকে অব্যাহতি নিতে চাইছি। আমি অতি ভাগ্যবান যে আমার পুত্র রাম সবদিক থেকেই শ্রেষ্ঠ। আমি আশা করছি যে রামের রাজত্বকালে দেশের জয়জয়কার হবে। আগামীকাল অত্যন্ত শুভ দিন। পুষ্যা নক্ষত্র যোগ। সমস্ত শুভ কাজের জন্য উত্তম। তাই আগামী কাল প্রাতঃকালে আমি রামকে যুবরাজ পদে অভিষিক্ত করতে চাইছি।এখন আপনাদের অনুমতি পেলে আমি অভিষেক কার্য এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’ রাজার বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সভাসদদের মধ্যে হর্ষধ্বনি হল। প্রত্যেকেই রাজাকে সমর্থন জানিয়ে ইতিমধ্যে কাজকর্মে লেগে পড়েছে। বোধহয় সেই জন্যই দাদার কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমি কৌশল্যা মায়ের কাছে এই শুভবার্তাটা আগে থেকে দিয়ে রাখলে ভালো হবে। ইতিমধ্যে মাতা সুমিত্রা কৌশল্যা মায়ের কাছে। আমি দাদাকে নিশ্চয় মায়ের প্রাসাদে পাব।’ আমি লক্ষ্ণণের কথায় সায় দিয়ে বড় শাশুড়ি কৌশল্যার প্রাসাদে গেলাম।
আমরা স্বামীর রাজ অভিষেকের কথা বার্তা বলতে থাকার সময়ে স্বামী রামচন্দ্র এসে উপস্থিত হলেন। তিনি প্রথমেই মাতাকে প্রণাম করে শুভখবরটা জানালেন-‘ হে মাতৃদেবী, পিতা রাজা দশরথ আমাকে রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করতে চাইছেন। তিনি অভিষেক আগামীকাল সম্পন্ন করতে চাইছেন। কারণ জ্যোতিষীরা আগামীকালের দিনটিকে অত্যন্ত শুভ বলেছেন। তাই আমাকে আর সীতাকে আজ রাতে উপবাসে থেকে আগামীকাল স্নানের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আজ রাতে দুব্বোর শয্যায় শুতে হবে।’
শাশুড়ি কৌশল্যা স্বামীকে আশীর্বাদ জানিয়ে বললেন, ‘পুত্র এই খবর আমি ইতিমধ্যেই পেয়েছি। তুমি দীর্ঘায়ু হও। তোমার কল্যাণ হোক। একজন সুশাসক হয়ে দেশ রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে প্রজা এবং জাতি বর্গের কল্যাণ সাধন কর। তুমি পিতাকে যেভাবে সন্তোষ দিতে পেরেছ সেভাবেই যেন প্রজা,জাতি বর্গ, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে সেরকম সন্তোষ দিতে পার এটাই আমার ভগবানের কাছে প্রার্থনা।’ তিনি আমাকেও সুখে-দুঃখে সমগ্র জীবন যাতে স্বামীর সঙ্গী হতে পারি তার জন্য আশীর্বাদ করলেন। তারপরে আমরা দুজনে মেজমা সুমিত্রার চরণ স্পর্শ করলাম। মেজো মা আমাদের দুজনকে বুকে টেনে নিয়ে মন ভরে আশীর্বাদ করলেন।
তারপরে স্বামী লক্ষ্ণণের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন- ‘আমার স্নেহের ভাই লক্ষ্ণণ, একমাত্র তোমার জন্যই আমি এই জীবন এবং রাজ্যলাভ কামনা করেছি। প্রকৃতপক্ষে এই বিশাল রাজ্য তুমিই শাসন করবে। রাজ্য লাভের ফল তুমিই ভোগ করবে। আজ যে রাজলক্ষ্মী প্রাপ্তির খবর শুনেছ এই রাজলক্ষ্মী প্রাপ্তি ঘটেছে তোমার।’- এভাবে মধুর বচন বলে স্বামী লক্ষ্ণণকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপরে আমরা দুই মাতা আর লক্ষ্ণণের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমাদের প্রাসাদে প্রবেশ করলাম।
আমার মনে বারবার প্রশ্ন জাগছিল-‘রাজা দশরথ হঠাৎ আগামীকাল অভিষেক অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? চৈত্র মাস পবিত্র মাস বলে তো সবাই জানে। গাছ-লতা,তরু-তৃণ, সবকিছুই বসন্তকে বরণ করে নেবার জন্য নতুন সাজে সজ্জিত হয় । পুষ্যা নক্ষত্রের যোগ তো আর হঠাৎ এসে হাজির হয়নি। পুষ্যা অথবা অষ্টম নক্ষত্রের অবস্থান কাল জ্যোতিষীরা এত দিন জানতেন না। মনের অস্থিরতা দূর করার জন্য স্বামীকে খুব সাধারণভাবে জিজ্ঞেস করলাম-‘হে নাথ, শ্বশুর রাজা দশরথ আগামীকাল এতবড় একটি উৎসব পাতার সিদ্ধান্ত কেন গ্রহণ করলেন?’
স্বামী স্থির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন-‘পিতা দশরথ গতরাতে একটা বড় দুঃস্বপ্ন দেখেছেন। জ্যোতিষীরা স্বপ্নের ফল কী হতে পারে গণনা করে মন্তব্য করেছেন যে রাজার দিন বড় খারাপ যাচ্ছে। গভীর শোকে তার অন্তর দগ্ধ হবে। সেই শোকে এমনকি তার মৃত্যুও হতে পারে। তাই জ্যোতিষীরা আগামীকালের দিনটি শুভ বলে বলায় শুভ কাজটা দ্রুত সম্পন্ন করতে চাইছেন।’
ইতিমধ্যে কথাটা মানুষের মধ্যে প্রচারিত হয়েছে। প্রজারা আনন্দিত মনে নগর সাজাতে লেগে পড়েছে। আমাদের কুলগুরু বশিষ্ঠ অভিষেকের জন্য কী কী করতে হবে এবং কী ধরনের সামগ্রী আবশ্যক সেই সমস্ত জোগাড় করার জন্য তিনি পরিচালকদের নির্দেশ দিলেন। তাঁরা সমস্ত ধরনের রত্ন, সাদা ফুল এবং মালা, ওষুধি গুণসম্পন্ন সামগ্রী,আখৈ, পৃথক পৃথক পাত্রে ঘি,মধু নতুন বস্ত্র, সমস্ত প্রকারের অস্ত্র-শস্ত্র, সুন্দর চেহারার হাতি,রথ,শ্বেত ছত্র,একশত সোনার কলস,শিঙে সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়া একটি ষাঁড়,পূর্ণবয়স্ক একটি বাঘের ছাল সহ অভিষেকের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস সংগ্রহ করে যজ্ঞশালে রাখল।
ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠ তার অনুচরদের আরও নির্দেশ দিলেন যে আগামীকাল ব্রাহ্মণদের জন্য যে অন্ন প্রস্তুত করা হবে তা হতে হবে সুমিষ্ট এবং উত্তম। দধি দুগ্ধ এবং ঘি দিয়ে তৈরি সেই অন্ন এক লাখ ব্রাহ্মন ভোজন করতে পারার মতো হতে হবে। তিনি আরও নির্দেশ দিলেন যে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলাচরণ হবে। তাই ব্রাহ্মণদের নিমন্ত্রণ করে বসার জন্য আসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্রাহ্মণদের দক্ষিণার সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণ ঘি,দই এবং খৈ দিতে হবে।প্রজারা উৎসাহে কাজগুলি একাদিক্রমে করে গেল। কেউ নগরের রাজপথ পবিত্র জলে ধুয়ে দিল। কেউ মূল দরজাগুলি চন্দন এবং ফুলের মালায় সাজাল। নগরে রঙ্গিন পতাকা উড়ানো হল।
আমরা পতি পত্নী দুজনেই আমাদের প্রাসাদের ঝুলানো উদ্যানে বসে কাজকর্ম নিরীক্ষণ করতে করতে আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। ঠিক তখনই একজন দূত এসে বলল –‘হে প্রভু রাজসভার সবাইকে বিদায় দিয়ে রাজা একা তার অন্তঃপুরে রয়েছেন। তাই আপনাকে একবার দেখা করতে বলেছেন।
যদিও রাজা কেবল স্বামীর সঙ্গেই দেখা করতে চেয়েছন তবু এই শুভ মুহূর্তে তিনি আমাকে একা ছেড়ে যেতে চাইছিলেন না। তাই আমাকে সঙ্গে নিয়ে এলেন। অবশ্য রাজার অন্তঃপুরে স্বামী একাই গেলেন এবং আমি বৈঠকখানার বাইরে বসে রইলাম। রাজা হর্ষ মিশ্রিত কণ্ঠে বলা কথাগুলি আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম। তিনি বলছিলেন-‘পুত্র রাম, তোমার অভিষেকের সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে বলে এইমাত্র ঋষি বশিষ্ঠ খবর দিলেন। তোমাকে আমি ইতিমধ্যেই বলেছি এই কার্য কেন আমি দ্রুত সম্পন্ন করতে চাইছি। রাতের অমঙ্গল স্বপ্ন গুলির সঙ্গে কাল আমি দিনের বেলায় ভয়ানক শব্দে উল্কাপাত হতে দেখেছি। জ্যোতিষীরা বলেছেন আমার জন্ম নক্ষত্র সূর্য গ্রহণের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। যে কোনো সময় যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আগামীকাল শুভ দিনটি থাকার জন্য তোমার অভিষেক সম্পন্ন করিয়ে যুবরাজ পদে বসাতে চাইছি। তার পরে তিনি কণ্ঠস্বরটা আগের চেয়ে একটু নিচু করে বললেন- আরেকটি কথা,ভরত মামার বাড়িতে থাকার সময়টা তোমার অভিষেকের জন্য উত্তম সময় বলে ভেবেছি। অবশ্য আমি জানি ভরত অত্যন্ত সৎ, ধার্মিক দয়ালু এবং জিতেন্দ্রিয়। সে তার জ্যেষ্ঠভ্রাতাকে যুবরাজ হিসেবে পেতে খুবই ইচ্ছুক। তথাপি মানুষের মন বোঝা কঠিন। পুঁটি মাছের মতো ছটফটে। কখনও এপাশ কখনও ওপাশ। কখনও কখনও ধর্মপরায়ণ পুরুষকেও হিংসা-বিদ্বেষে লিপ্ত হতে দেখা যায়।’
আমি শশুরের কথাগুলি শুনে চমকে উঠলাম। আমার কান মাথা গরম হয়ে গেল। মনে মনে ভাবলাম যে-‘ভরতের মতো একজন পুত্রকে পিতা এভাবে কেন সন্দেহ করছেন? যদি বাবাই ছেলেকে এতটা সন্দেহের চোখে দেখে তাহলে বউ, ভাতৃবধূ, মাসির কথা আর কী বলব?’
রাজা দশরথের কথাগুলি আমার মনে আলোড়ন সৃষ্টি করল। আমার উৎসাহ মুহূর্তের মধ্যে নাই হয়ে গেল। কিন্তু আমার মনের ভাব কাউকে জানাতে পারছি না। এমনকি স্বামীকেও। তাই অশান্ত হয়ে পড়া মনকে এভাবে শান্ত করলাম-‘প্রকৃতপক্ষে রাজা ভরতের কথা কিছুই বলেনি। আমিই কিছু ভুল শুনেছি।’
স্বামী এবং পিতা শ্বশুরের কথা শুনব না বলে ভেবেও আবার কান খাড়া করে রইলাম। রাজা তখন স্বামীকে আমাদের ব্রত পালনের বিষয়ে বলছিলেন-‘তোমার এবং বৌমা সীতার ব্রত বিকেল থেকেই আরম্ভ হবে। কুলগুরু বশিষ্ঠ তোমাদের উপবাসের মন্ত্র পাঠ করাবে। আজ রাতটা ইন্দ্রিয় সংযম করে উপবাসে থেকে কুশ শয্যায় শয়ন করবে। তোমার বন্ধুরা আজ রাতটা তোমাকে রক্ষণাবেক্ষণ দেবে। কারণ দিন খারাপ থাকলে শুভকাজে কখনও কখনও বাধা আসতে পারে।’
তারপরে শ্বশুরমশাই স্বামী রামচন্দ্রকে আশীর্বাদ করে বিদায় নিলেন।
স্বামী বেরিয়ে এলে আমরা দুজনেই প্রাসাদে ফিরে এলাম। পিতা তাকে কেন পুনরায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন সেই বিষয়ে স্বামী আমাকে কিছুই বললেন না। আমিও জানার আগ্রহ দেখালাম না।
বিকেলের আগে আগে ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠ আমাদের প্রাসাদে এলেন। আমরা দুজনেই তাকে অভ্যর্থনা জানালাম। ব্রহ্মর্ষি আমাকে ব্রত এবং উপবাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্র পাঠ করালেন। আমাদের প্রাসাদের পূজাস্থলীর কাছে আমরা রাতে শোবার জন্য দুব্বো ঘাসের শয্যা তৈরি করিয়ে নিলাম।
ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠের উপদেশ মতো আমরা নীতি নিয়মের মধ্য দিয়ে ভগবানের চিন্তা করে দুব্বো ঘাসের শয্যায় শুয়ে পড়েছিলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন