গল্প
বেঁচে থাক্ , সুখী হ .....
অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়
সার্বভৌম দেশের এর থেকে বেশী গণতান্ত্রিক বাধ্য প্রজা আর কি রকম হবে ! খেতে পেলে খায়, ঘুম না পেলে ঘুমায় না ।থাকার জন্য গাছের তলা কিংবা অব্যবহারযোগ্য কোন শেডের নীচের জায়গাটুকুই যথেষ্ট নয় ? হাঁ, ওরা অনায়াসে এই প্রশ্ন সত্য যুগের বরপ্রাপ্ত বাণের মত ছুঁড়তে পারে । উদাসী ব্যস্ত মানুষের বর্ম এতটাই শক্তিশালী যে, এইধরনের বান মোটেই বিদ্ধ করেনা । কিংবা এতটাই করে যে, কেন্দ্রাতিগ বলের মত অন্য ঠিকানায় অঙ্গুলি নির্দেশ করে । এদের কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই । রেগে যাওয়ারও কোন অধিকার নেই । শুধু অধিকার আছে ভিক্ষে চাওয়ার । জন্ম থেকে কেবল ভয় তাদের পিছু ছাড়ে না । দয়া করে কেউ কিছু দিলে কৃতজ্ঞতায় মন ভরে যায় ।
ঠিক যেমন আজ এক দয়ালু ব্যক্তি কিছু গরম ভাত তরকারি দিয়ে গেলেন । না , কোন ক্যান্টিন থেকে সে জানে না ; জানার কথাও নয় । তিনটে বাচ্চা ছেলে মেয়ের মা প্রণাম করে আশীর্বাদ দিল অপটু বাংলায় ।আবার বিকেলের দিকে ছেলে তিনটের জন্য অন্য দুজন দিয়ে গেলেন জামা প্যান্ট । তাদেরকেও প্রণাম জানাল মা । নিজে শতচ্ছিন্ন মলিন পোশাকে থাকলেও , ভিক্ষে পেয়ে ছেলেমেয়েগুলো তো দুদিন একটু আনন্দে থাকল । তার অনেক কিছু না থাকার মধ্যে ভোটও নেই ।এতটুকু আগ্রহও নেই । তা সত্যি, যে জিনিস যখন তখন কেউ কেড়ে নিতে পারে, তা থাকা না থাকাই তো সমান । মা শুনতে পেল একজন আরেকজনকে বলছেন, শুভ নববর্ষ । যাই হোক , Happy New Year এর মত আর আনন্দ কই ! বাংলা নতুন বছর ক্যামন যেন ম্যাড়মেড়ে । গল্প করতে করতে বাংলা বছরের মত কোথায় মিলিয়ে গেল ।
বাচ্চা তিনটের মা ভাবল, এই গরম ভাত, নতুন জামা কি তাহলে নতুন বছরের জন্য ? নতুন বছর তো খোব ভাল ! তাহলে এবার অনেক কিছুই হবে ....। ছেলে মেয়েগুলো যদি পড়তে পারত .....। আর ইংজিরি শিখে গেলে , আর ভিক্ষে করতে হোত না ।
শেষমেষ সেই মা আশীর্বাদ করে বসল , বাংলা নতুন বছরকেই । বেঁচে থাক্ বাবা নতুন বছর । সুখী হ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন