কিছু বই কিছু কথা ২৭১ । নীলাঞ্জন কুমার
দুঃখ আমার গর্ভজাত । জগদীশ পাল । কবিতিকা । একশো টাকা
কবি জগদীশ পালের কাব্যগ্রন্থ ' দুঃখ আমার গর্ভজাত ' র ব্লার্বে লেখা হয়েছে: ' যা ছিল যা নেই এ দুয়ের হিসেব মেলাতে গিয়ে কবি এক আদ্যন্ত কবিতার বলয় নির্মাণ করেছেন । ' এ কথার সঙ্গে গোটা বইটি পড়ে একমত না হলেও তবু বলা যায় তাঁর কবিতার ভেতর নিজের চেতনা মিশিয়ে দিতে তিনি সচেষ্ট আছেন । যার প্রমাণ:
' কাশির ঝলকে ঝলকে আমি যখন অন্ধকারে মিশে যাব/ দেখবে কানায় কানায় ভরে উঠেছে- /তোমার বকশিশের গামছা ' ( ' বকশিশের গামছা '), ' অন্ধকারের ঐশ্বর্য ভাঙতে ভাঙতে/ তোমার কাছে এসেছি ' ( স্বদেশ) এর মতো উচ্চারণ ।
সে অর্থে জগদীশের কবিতা ভালোবাসতে পারা যায় কিন্তু তবু মনে হয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিসরলীকরণ, অতি কথা, অতি আবেগীয় দিক পরিহার করতে পারলে তিনি বিশেষ জায়গায় পৌছোতে পারবেন ।
বুঝতে হবে কবিতা লিখতে গেলে তার প্রাথমিক শর্তই ' বিন্দুতে সিন্ধুর স্বাদ ' আনা । যা তাঁর কবিতায় ' মেছনীর বেশে তখনও/ তোকে বুঝতে পারিনি/ আজ হৃদয়ে কালকেউটের বিষ/ তুই একবার বেহুলা হবি না! ' ( সুজাতা ') মতো অগুনতি পংক্তির ভেতরে মেলে না । অগাধ স্বপ্ন, প্রতিবাদ, বোধের কিছু কিছু উৎকৃষ্টতা লক্ষ্য করলেও কবিতা পিপাসুদের তেমনভাবে মুগ্ধ করতে পারবে না ।
আসলে এতো কথা বলার কারণ, কবির কবিতার সম্ভাবনা আছে বলেই । কবিকে স্থিত হতে হবেই, নাহলে সম্ভাবনা সম্ভাবনাই থেকে যাবে । আমি তাঁর বিকাশ চাই, মুগ্ধ হতে চাই কবিতায় । সৌরভকুমার ধবলদেবের কৃত প্রচ্ছদে মন ভরে না । যদিও জল রঙের কাজ সন্তোষজনক ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন