কিছু বই কিছু কথা ২৪৮ । নীলাঞ্জন কুমার
তুমচড়াই । স্বপন রক্ষিত । নৌকো প্রকাশনী । দশ টাকা ।
অধুনা প্রয়াত কবি স্বপন রক্ষিত - এর দশ বছর আগের কাব্যগ্রন্থ ' তুমচড়াই ' পুণঃপাঠ করতে গিয়ে তাঁর বিচিত্র ধারার ডিকসনের কাছে আবার দাঁড়াতে হয় । বহু পাঠককে এই কবির কবিতা নিয়ে বিরূপ ও কুৎসিৎ মন্তব্য করতে শুনেছি, কারণ তাঁর কবিতার ভেতরে যদি অমগ্ন হয়ে ঢুকতে চেষ্টা করা হয় তবে ধাক্কা মেরে তাঁর কবিতা পাঠকদের সরিয়ে দেবে । কবিতার ভেতরে ঢোকার সিংহ দরজা বেশ মজবুত তাই সেই দরজা দিয়ে ঢুকতে গেলে মগ্নতা একমাত্র গেটপাস । কবির কবিতার বিচিত্র শব্দধারার কিছু উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে : ' লাইব্রেরি গ্রন্থে- গ্রন্থে তুমি পিতামহদের/ মতো
বিভোর হতে কি? ' ( ' বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনে রেখে ') , ' বি এস এফ কম্বলে জড়ানো ভরসা/ গভীরতর । ' ( ' হতাশা খোঁজা : নৈঃশব্দ্যের সর্বনাশ ') ।
কাব্যগ্রন্থের ব্লার্বে যে কথা বলা আছে তাঁর কবিতা ঘিরে তা হল: ' গাঢ়তর নেশায় বুঁদ থাকেন কবিতার শরীর নির্মাণে বিমূর্ত চিত্রকল্প ও শব্দ দ্যোতনায় ধ্বনিত করেন অন্য এক ভাষা ' যার সঙ্গে এই আলোচক সম্পূর্ণ একমত । না হলে তিনি লিখতেন না: ' জড়াতে জড়াতে, স্রোত জাগরণ- মাটি প্রিয় বাংলায়
। / শাদা কাশ কাশ শুচিতা তুমি । ( ' কবি জীবনানন্দ
দাশ এর প্রতি ') , তারপর, জনমুগ্ধ শহর ভালোবাসায় / আকাশ অবগুণ্ঠন খোলে ।'( ' বৃষ্টি মুখরিত : ভাবনায় ')।
আগেই বলেছি, এই কবির কবিতাকে জানতে বুঝতে গেলে সাধারণ পাঠক হওয়া চলবে না । না হলে তাঁকে কটু মন্তব্য করাই সার হবে । তপন ভট্টাচার্যের প্রচ্ছদ কবিতা না বুঝে স্রেফ ' তুম চড়াই ' নামটিকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে । তাতেই বোঝা যায় কবি কতটা দুরূহ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন