কিছু বই কিছু কথা ২৩০ । নীলাঞ্জন কুমার
সান্ধ্যভাষা । অমলেন্দু বিশ্বাস । নৌকো । বারো টাকা
কবি অমলেন্দু-র শিরোনামহীন চোদ্দটি আবেশ জাগানো পয়ারভিত্তিক কবিতার কাব্যগ্রন্থ ' সান্ধ্যভাষা ' র ভেতর দিয়ে হাঁটতে গিয়ে খুঁজে পাই সেই সত্য, যা দাঁড় করায়: ' গোধূলির সান্ধ্যভাষা ঝুলে আছে গাছে/ এ মুহূর্তে নির্বান্ধব । হাঁটা পথে আর তোমাকে পাইনি কাছে । ' - র মতো পংক্তির কাছে । কবি অমলেন্দু দীর্ঘদিন লিখে যাচ্ছেন তাঁর মতো করে, নিজস্ব অনুপ্রেরণায়, স্বাতন্ত্রতা নিয়ে । কোন ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করে তিনি অক্লেশে বলতে পারেন বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে: ' গেরুয়া আলোয় ফেরা নীল সান্ধ্যভাষা/ ভেসে যেতে থাকে ভালোবাসার সাম্পানে '।
সান্ধ্যভাষা ভিত্তিক কবিতার এই সিরিজ সেই কবিতার জন্ম দেয় যেখানে কবি সান্ধ্যভাষার মতো আধো অন্ধকার করে রাখেন না তাঁর কবিতা । বোঝা যায় কবির চেতনা, যার ভেতরে কবিকে তাড়িত করে নিসর্গ প্রেম, দুঃখ, করুণা, অধ্যাত্ম দর্শন । তাই কবি বলতে পারেন: ' লাল পাড় শাড়ি আর রক্তরাঙা টিপ/ ধীরে ধীরে উঠে আসে ত্রিলোচন লোকে ', ' দুঃখের গভীর নীল নৌকা যায় চলে/ নীরব ভাষার নিচে আলোবীজ বাড়ে .... ' ।
অমলেন্দু সেই রকম কবি , যে প্রতিটি কাব্যগ্রন্থে আলাদা আলাদা ভাবনা এনে আমাদের চেতনাতে ছড়িয়ে দেয় । সে অর্থে তাঁকে পড়ার জন্যে অপেক্ষা থাকে, ভালো কিছু পাবার আশায় । অমলেন্দুর কবিতাতে আছে কিছু স্নিগ্ধতা, যা আজকের জাগলিং সর্বস্ব কবিতা থেকে অনেক আলাদা । তাপস ভট্টাচার্যের প্রচ্ছদে কালার কম্বিনেশন খুব খারাপ , তবে অঙ্কন সুন্দর । কালারের কারণে ' সান্ধ্যভাষা ' নামাঙ্কন ঠিকঠাক পড়া যায় না । যা প্রচ্ছদে অভিপ্রেত নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন