কিছু বই কিছু কথা ২২১। নীলাঞ্জন কুমার
পথও পাগল জানে না উন্মাদ । উৎপল মান । নাটমন্দির । পন্ঞ্চাশ টাকা ।
' যা আজ সকালে ছিল গান তাই দেখি হিংস্র প্রলাপ ।' - এর মতো কবিতার উচ্চারণ যাঁর, তাঁকে বারবার পড়তে যাওয়া যে কতখানি আনন্দের বলে বোঝানো যাবে না। কবি উৎপল মানের বারো বছর আগের কাব্যগ্রন্থ ' পথও পাগল জানে না উন্মাদ ' -এর মতো উজ্জ্বল কাব্যগ্রন্থ থেকে পাওয়া যায় সেই দ্যোতনা যা কেবলমাত্র উৎপল মানের । তাই আরো পাই: ' নিঃশ্বাস খুলে প্যাডেলের পা পার হয় জনপদ/ খুঁজতে থাকে খুঁজতেই থাকে জল, কবিতা, মদ .... ' ( ' জল, কবিতা, মদ ), ' তাকে আজ মুগ্ধ মিথ্যার মতো/ অসাধারণ খাদ্যবস্তু ভেবে/ পান করছি, বেহিসেবি বন্ধুর উঠোনে ( ' ত্রিকোণ ') , ' জ্যোৎস্না ভরা তীব্র গেলাস দাও- পান করুক, পিপাসু কবির/ ভূতে পাওয়া মগ্নতা ...। ' ( ' চাঁদে পাওয়া ') -র মতো উচ্চারণের মাধ্যমে ।
কবি উৎপল বোঝে কবিতার ভেতর দিয়ে কিভাবে ঢোকা যায় গভীর থেকে গভীরতর অবস্থানে। কবি জানে রক্তে ঘা দেওয়ার কৌশল । কোন তত্ত্ব নয় ,স্রেফ আটপৌরে জীবনের স্বচ্ছন্দ স্বপ্নের কাছে গিয়ে নিহিত অক্ষরচর্চার মাধ্যমে ছুঁয়ে থাকে মনন ।
উৎপলের কবিতার স্তর বুঝিয়ে দেয় তার কবিতার শব্দ ও লাইনগুলো, যেমন: ' চুপিচুপি বলি, সাড়া দেনা প্লিজ রীতা/ নিমরসে আজ প্রেমকে ভিজিয়ে ছোটা ' ( ' কবিতাভূত ') , ' অক্ষরে অক্ষরে গাঁথা অভিঘাত ভাষাবদল/ এবং চাকরির কাগজ , সোজা ও সহজ খুনসুটি ' ( ' সব আজ ভালো ')-র ভেতরে ছুঁই পরম মমতায় । জিশান রায়ের প্রচ্ছদ পরিপাটি, মর্মার্থ নিয়ে ভাবনাও আছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন