কিছু বই কিছু কথা ২১৪ । নীলাঞ্জন কুমার
কোন কোন কবিতার ভেতরে বেশ গোলকধাঁধা থাকে । ভুলভুলাইয়ার মধ্যে দিয়ে ঘুরে বেড়াতে বেশ মজা লাগে , তেমন এর ভেতর ঢুকে পড়লে বেরনোর কথা তেমন মনে থাকে না । কবি ধীমান চক্রবর্তীর কবিতাও তেমন । তাঁর '৯৮ সালের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ' জ্যোৎস্নাকলস ' -এ তাই প্রথম কবিতায় পাই: ' বুনো আপেলে ব্রেকডাউন সারাতে গিয়ে/ দেখি বাঘের শরীরে ফুটে উঠছে/ কিছু মুথাঘাস অরণ্যসুড়ঙ্গ । ' ( ' বাঘ ও আপেল ') সব চেনাজানা বিষয় ও ভাবনা নিয়ে অন্য ভাবনায় পৌঁছে দেওয়ার কৌশল সব কিছুর ভেতরে মানবিক দিক ফুটিয়ে তোলে । সে কারণে এই কবির কবিতা পড়ার আগ্রহ চেপে বসে , কারণ পংক্তিতে পংক্তিতে আমাদের রুটিন ভাবনার বাইরের ভাবনা ছড়ানো আছে বলে ।
বৃষ্টি ফিতেয় মাপি হরমোন, / চাঁদের বিরল শস্য বর্গ্ । রক্তরেখা মাখামাখি পিচবাগিচায় এগোয় / হলুদ গাছ , পুরনো জীবন খুলে গেল । ' ( ' সমুদ্রচিকিৎসা ') , ' ছায়ার মাথায় এসে ছায়া পড়ছে/ ছোটবেলা ঘুমপাড়ানি । ' ( ' ক্ষুর ') , ' মর্চে পড়া ডিম ফাটিয়ে ক্রমাগত/ দ্রবীভূত করে বেগুনিআলো বালি- কাগজ।'
( মর্চে পড়া ডিম) ইত্যাদির সামনে দাঁড়িয়ে এই সব কবিতার গঠনের মধ্যে থেকে ব্যন্ঞ্জনা বের করে আনার কৌশল ভাবতে ভাবতেই সময় চলে যায় । তবে আশ্চর্য কোন কিছুই মাথার ওপর দিয়ে যায় না । কবিতার আলাদা উচ্চারণ ও ভাবনা করে যাচ্ছেন কবি ধীমান , সেখানে হয়তো এই আলাদা উচ্চারণের জন্য রয়ে যাবেন পাঠকমনে ।
কবি অরুণাংশু ভট্টাচার্যের প্রচ্ছদ বইটির মেজাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি করা । প্রচ্ছদের বিমূর্ত উপলব্ধি তৃপ্ত করে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন