সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৯০.
একই পরিক্রমা চলছে। বদলে যাচ্ছে সাব-হেডিং।
□ ৬০ + ৬০ = ১২০টি গোলাপের দুটি স্তবক
কলকাতা থেকে আমি যেদিন গণদেবতা ধরে কাদাকুলি-ছান্দারে পৌঁছেছিলাম , তার পরের দিন একই ট্রেনে যূথিকা , আমার বোন দুর্গা এবং আমার মা এসেছিল। উৎপল চক্রবর্তী-র অভিব্যক্তি-র পাশের জমি ও পুকুর আমাদের। অভিব্যক্তি-র পাশেই কবিতাচর্চাকেন্দ্র-র মাদল ঘরটি। যার দেওয়ালগুলিতে খুব দ্রুতটানে চমৎকার সব ছবি এঁকে দিয়েছিলেন ছোটদা বা উৎপল চক্রবর্তী। ঘরের চারপাশে ছায়া-সুশীতল ছাউনি। ১৫ জৃন সকাল ৯টা। আকাশে বর্ষার মেঘ , যদিও আষাঢ় এখোনো আসেনি। বৃষ্টি মাঝেমাঝেই জোরে পড়ছে। সেই ছাউনির নীচে কয়েকটি চেয়ারে বসেছিলেন আমার মা শঙ্খ ঘোষ জ্ঞানশঙ্কর মিত্র ছোটদা প্রদীপ এবং ছিল যূথিকা বিশাল ভদ্র ঠাকুরদাস নমিতা মধুছন্দা গৌরাঙ্গ দুর্গা মুরারি শুভাশিস সৌমিত্র পাপড়ি হীরক শান্তনু নিখিল সমরেন্দ্র অভিজিৎ লীনা নাসের এবং আমিও।
নাসের হোসেনের ঘোষণায় আমার ষাট বছর পূর্তি জন্মদিনের ৬০ খানি গোলাপের স্তবক আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন শঙ্খ ঘোষ । এবং তারপর আরো একটি ৬০- গোলাপের স্তবক শঙ্খদার হাতে তুলে দিয়েছিলাম আমি। দুটি ৬০- গোলাপের স্তবকের উদ্ভাপক ছিল নাসের ও বিশাল। শুভাশিস সৌমিত্র প্রমুখ কয়েকজন ফোটো তুলেছিল। যেখানে এই ছোটো অনুষ্ঠানটি হয়েছিল তার সামনেই মোরাম ফেলে একটা অস্থায়ী রাস্তা বানানো হয়েছিল এবং একপাশে স্বর্ণচম্পক গাছটিকে স্থান দেবার আয়োজন সমাপ্ত। সাড়ে এগারোটায় রোপণ-পর্বের সময় । এক ফাঁকে আমার বাবার প্রতিষ্ঠিত করুণাময়ী কালীর মন্দিরটি পুকুরের অন্য পাড়ে গিয়ে দেখে এসেছিল নাসের এবং শান্তনু।পুকুরে তখন অনেকগুলি রাজহাঁস , যেগুলি ছোটদার বা অভিব্যক্তির।
নাসেরের লেখায় ঠিক যা যা ছিল তার সবটাই আমি এই লেখায় গ্রহণ করেছি । উদ্ধৃতিচিহ্ন দেবার প্রয়োজন বোধ করিনি। কেননা এই অংশের আমার আত্মজীবনীর সঙ্গে নাসের যেভাবে যতটা যুক্ত , সেই পরিস্থিতি এবং পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা করে প্রমাণ করতে পারি উদ্ধৃতি-বিহীন নাসেরের লেখা আমার লেখা হিসেবে ব্যবহার করাটা দোষণীয় নয়।
অনেকদিন পরিস্থিতি এবং পরিপ্রেক্ষিত শব্দদুটি ব্যবহার করলাম। যেরকমটা আমার কমিউনিস্ট-সান্নিধ্যে লিখতাম। সেটাও যে খুব দোষের , এমনটাও বলছি না। এরপর নাসেরের হেডিং :
□ প্রভাতদার জন্মদিনে মহিলাদের ফুলসাজ ও চমৎকার জলখাবার
জন্মদিনের গোলাপস্তবক প্রদানপর্বের পরে আমার হাতে আরো কয়েকজনের উপহার জমা পড়েছিল। নিখিলকুমার সরকার ও সমরেন্দ্র রায় পুকুর থেকে তুলে এনেছিল টাটকা লাল পদ্ম। অন্য কয়েকজন কতরকমের ফুল।গৌরাঙ্গ মিত্র দিয়েছিল পার্কার কলম। এরকম নানাজনে নানাকিছু। আমার বোন দুর্গা এইসব ফুলগুলি নিয়ে নিজের , তার বউদির এবং অন্য মহিলাদের খোঁপায় সাজিয়ে দিয়েছিল।
অভিব্যক্তি-র লতাবিতান থেকে ছোটদার ডাক এল । মোরামের সিঁড়ি বেয়ে এবং চেয়ারগুলি নিয়ে সেখানে বসা হল। আমার বাড়ির পায়েস , সেই সঙ্গে কচুরি আর চা। শঙ্খদা জ্ঞানশঙ্কর মিত্রসহ আমাদের সকলের সকালের সেই আড্ডা বেশ জমে গিয়েছিল। চমৎকার জলখাবার থাকায় তা সোনায় সোহাগা।
বাকিটুকুর জন্য অপেক্ষা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন