কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
অনৃতভাষণ । আবদুস শুকুর খান । কবিতা পাক্ষিক । দশ টাকা ।
' মা ; কতদিন পরে; আঃ কতদিন পরে/ উড়ে এলে আত্মার পাখি হয়ে নির্ঘুম রাতে । ' ( ' মা ') এর ভেতর দিয়ে কবি আবদুস শুকুর খান যে সন্ধান করে যান, তার ব্যাখ্যা দেন আর মন্ত্রমুগ্ধ করেন তাঁর আঠারো বছর আগের কাব্যগ্রন্থ ' অনৃতভাষণ ' এর মাধ্যমে । যাকে পুনঃপাঠ করতে গিয়ে পেয়ে যাই এধরনের অলঙ্ঘ অথচ সহজ উচ্চারণ: ' বুঝি, কী একাত্মে কারা যেন লঘু পায়ে/ এগিয়ে যাচ্ছে কবরভূমির দিকে ।/ কে যেন ডাকছে শূন্য থেকে শূন্যের ভিতরে ...( ' সন্মোহন ') , ' সুন্দরের সুন্দর হবো শত ইচ্ছা আমার/ কুঁড়িতে ঝরে যায় স্বপ্ন, তোমার আমার ।' ( 'সুন্দরের গন্ধ ') তন্নিষ্ঠ করে তোলে ।
আবদুস শুকুর সেই জাতের কবি যিনি ভীষণভাবে সংযমিতার পরিচয় দেন তাঁর কবিতায় । বিভিন্ন কবিতা তাঁর পড়তে পড়তে বুঝে নিই যে তাঁর ভেতরের গভীরতা মগ্ন পাঠকের জন্য গচ্ছিত রাখেন ।অমগ্নদের সন্তুষ্ট করার দায় কোনমতে নেই । ' তুমিই পার/ পৃথিবীর স্মরণযোগ্য মৃত্যু তুলে দিতে/ তুমিই পার/ শাশ্বত প্রেমিক করে নিতে । ' ( ' যাবার বেলা ') -র সহজতা বশ করে পাঠককে । তখন নিজেকে ভেতরে ভেতরে ভাবতে শুরু করতে হয় । যা ধীরে ধীরে শুদ্ধ করে ।
কবির কবিতার দীর্ঘ পরিক্রমা সে কারণে সুখকর হয়ে ওঠে । তাঁকে আলাদা করে চিনতে সাহায্য করে । 'অনৃতভাষণ ' বয়ে আনে সেই স্নিগ্ধ হাওয়া যা একান্ত অনুভবী। দীপান্বিতা হালদারের কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রচ্ছদ হতাশা জোগায় । প্রচ্ছদের কাগজের ও ছবির রঙ কোনমতেই সুসমন্ঞ্জসপূর্ণ নয় ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন