কিছু বই কিছু কথা ২০৮ । নীলাঞ্জন কুমার
বেঁধে নাও আমার প্রপাত । অঞ্জনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় । সমাকৃতি প্রকাশন । দেড় টাকা ।
' ঢেউ স্পর্শ করে যায় তোমার দু-পা/ কেউ স্পর্শ করে যায় তোমার দু- পা ' - র মতো সাবলীল অথচ ব্যন্ঞ্জনা সমৃদ্ধ কবিতা অনেকেই লিখতে পারেন, কিন্তু অন্ঞ্জনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেড় টাকা দামের এক ফর্মার অতি চটি বইটির ভেতরে আরো কিছু পাওয়ার তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয় ।শিরোনামহীন বারোটি কবিতার এই কাব্য পুস্তিকা ' বেঁধে নাও আমার প্রপাত ' তে সেরকম কবিতা পাই : ' তোমার সঙ্গে একা একা কথা বলি হেমন্তের রাতে/ অন্ধকার! অন্ধকার! / চাপ চাপ অন্ধকার পড়ে আছে চাঁদের করাতে । ' , ' আগুন অনেক পারে ; / কিন্তু পারেনা শুধু/ ভেঙে নিতে সম্যক
আঁতাত । '
এত সত্বেও তবু একটা কথা বলতে হয়, এই ছোট্ট ছোট্ট কবিতাগুলোর ভেতরে ভালো কবিতা থাকা সত্বেও কি করে: ' আমি ভাবতাম একদিন তবে ঠিক/ আমার দু-হাত তুমি ছেড়ে দিতে যদি ' কিংবা,
' আমাদের প্রথম আলাপ ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরে ' - র মতো সাদামাঠা পংক্তিগুলিকে নির্বাচন করা হল বোধগম্য নয় । ফলে বইটির ভেতরে টিউনিং- এর অভাব অনুভব করি । আফশোস ১৯৯৭সালের এই পুস্তিকার ভেতরে আরো কিছু ভালো পংক্তি থেকে বন্ঞ্চিত হলাম ।
অঞ্জন বাবুর কবিতার ভেতরে যে চেষ্টা আছে তাকে সন্মান জানাতে হয় । তাঁর পংক্তির পরিণত রূপ (কিছু কিছু ক্ষেত্রে) তন্নিষ্ঠ করে তোলে, তখন মনে হয় ভালো কবিতার কাব্যগ্রন্থ পাঠ করার আগ্রহ না পাওয়ার এই আকালের যুগেও কিছু ব্যতিক্রমী কাব্যসম্ভারও মজুত আছে । তবে বহুদিন এই কবির কবিতা পাওয়া যাচ্ছে না ।খারাপ লাগে যখন ভালো কবিরা কেন যে নিজেদের গুটিয়ে যেতে দেন! তার ফলে বাংলা সাহিত্যের কতখানি ক্ষতি হয় তা সিরিয়াস কবিতা পাঠক বর্গ ভালো বোঝেন । উৎপল চক্রবর্তীর প্রচ্ছদ ভালো লাগে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন