সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৮৫.
কবিতাপাক্ষিক ২৭৭ - এ ছিল শান্তিনিকেতনে নোবেল পদক চুরি।তার কথা গতকাল লিখেছিলাম। আজ লিখছি দ্বিতীয় পর্বের কথা।
পর্বটির নাম : মহুয়া : নাম্নী
মলাট-কথায় লিখেছিলাম :
' ১৩৫৫ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ থেকে পৌষ মাসের মধ্যে মহুয়া কাব্যগ্রন্থের অধিকাংশ কবিতা লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমরা মহুয়া থেকে নাম্নী অংশের ১৭টি কবিতার শিরোনামগুলিকে ব্যবহার করে কবিতা লেখার চেষ্টা করেছি। অবিনির্মাণ নয়। সঙ্গে মহুয়া কাব্যগ্রন্থের ভূমিকাও ছাপা হল।
রবীন্দ্রনাথের নাম্নী-র পর্যায়ক্রম ছিল : শামলী কাজলী হেঁয়ালি খেয়ালী কাকলী পিয়ালী দিয়ালী নাগরী সাগরী জয়তী ঝামরী মুরতি মালিনী করুণী প্রতিমা নন্দনী উষসী।
এই নামগুলিকে ব্যবহার করে লিখেছেন প্রভাত চৌধুরী নাসের হোসেন দীপ সাউ সুমিতেশ সরকার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায় শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায় মুরারি সিংহ গৌরাঙ্গ মিত্র ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যায় রুদ্র কিংশুক।
আমি এখন রবীন্দ্র-নামের কবিতাগুলি কী ভাষায় লিখতে সমর্থ হয়েছিলাম , তার কিছু কিছু নমুনা পেশ করছি । এখান আমাদের নামগুলি উল্লেখ করছি না। যাঁদের বাসনা হবে কপা ২৭৭ সংখ্যাটি খুলে দেখে নেবেন।
১॥ শামলি
অজানা কোনো এক গ্রামের মধ্যে কখন যে এসেছিল স্বচ্ছ সেই নদী , / তার ক্ষীণ শরীরের চারপাশে মৌমাছিদের গুঞ্জন , সমগ্র আকাশ/ মুখ রাখে তার মুখে ।
২ ॥ কাজলি
কাজললতার পাশে কিছুতেই কাজলদিঘিকে বসাতে পারি না, যদিও / পৃথিবীর প্রতিটি দিঘির পাশে কোনো না কোনো লতা-র সন্ধান/ পাওয়া যাবে,
৩ ॥ হেঁয়ালি
রবীন্দ্রনাথ নাম্নী-পর্বে যে হেঁয়ালির কথা লিখেছিলেন তাঁকে / সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ থেকে নির্বাচন করেছিলেন কিনা তা আমার জানা / নেই ,
৪ ॥ খেয়ালি
উইয়ের বাসার মতো স্বনির্মিত অন্ধকারে ওই
শুয়ে আছ তুমি।
৫ ॥ কাকলি
পুরুষ্টু ঠোঁটের থেকে শব্দবাণ নির্গত হয়, যেন তা প্রাণোচ্ছল / হাসিমাত্র।
৬ ॥ পিয়ালি
বরফ জমা হ্রদের নীচে মাছ হয়ে ঘুরে বেড়াই আজকাল/ আমার শীত করে না
৭ ॥ দিয়ালি
আমরা দীপাবলির কথা জানি, দীপাবলি-কে দিয়ালি করতে হয় / তা জানি না,
৮ ॥ নাগরি
নাগরির তুলারাশি যদি, নাগরের মীনরাশি
ছটফট করে পুরুষ উত্তম, চাঁদ নামে, আমি
চঞ্চল হে ...
৯ ॥ সাগরী
সাগরকন্যা/ সাগরী হয়ে দিগন্ত আঁচলে জড়ায়। মাঘঋতু পার হয় / তালসারিতে একা
১০ ॥ মুরতি
' মূর্তি' -কে কোমল করে বললে ' মুরতি ' শোনা যায়,
১১ ॥ মালিনী
ফুল বা মালা জোগান দেয় যে- নারী তাকে আমরা মালিনী / নামে চিনি , যে মালা গাঁথে সে-ও কি মালিনী?
১২ ॥ করুণী
নারী , আমি তোমাকে করুণী করুণা ,
কখনো দাক্ষায়নী নামে জানি ...
১৩ ॥ প্রতিমা
আকাশের অনেক দূর দূর পর্যন্ত তার আঁচল উড়ছে,
যেন- বা পরি।
১৪ ॥ নন্দিনী
আসলে তো নন্দিনী সেই মেয়ে /যার কাছে, কোনো স্বপ্ন নয়, বিষণ্ন দীর্ঘশ্বাস শুধু / পৌছোতে পারে
১৫ ॥উষসী
সারাটা শরীর তার এমনই আবৃত;/ গা বেয়ে নীচে নেমে গেলে জলধারা / সন্তর্পণে বয়ে চলে, ফাঁকে ফাঁকে নুড়ি- জটলা।
এক লাইন/ দু লাইন দিয়ে কিছুই বোঝানো সম্ভব নয়। সব কবিতা একত্রে কপা-র আগামী কোনো সংখ্যায় ছাপা যেতে পারে। এখানে কেবলমাত্র আমাদের উদ্যোগের ব্যাপারটা উপস্থিত করলাম মাত্র।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন