কিছু বই কিছু কথা - ২০৫ || নীলাঞ্জন কুমার
শিরোনাম নেই শিরোপাও || সুবোধ সেনগুপ্ত || সাংস্কৃতিক খবর ত্রিশ টাকা ।
এমন কিছু কবিতার বই প্রকাশ করা হয় যার সব কবিতা মাথার ওপর দিয়ে যায় । অপরিপক্ক ছন্দের যন্ত্রণা বিঁধে থাকে বইটির শরীরে। যা মনে এলো তাই লিখবো এই চিন্তাভাবনা নিয়ে গড়ে ওঠা বই পড়া যে কি কষ্টের তা কবিতাপ্রেমী বেশ বোঝেন।তবু অভ্যাসবশতঃ
পাঠক পড়েন ' পাইলে পাইতে পারো অমূল্য রতন 'চিন্তা ভাবনার কারণে । অবশ্য সুবোধ সেনগুপ্ত তাঁর কাব্য প্রয়াস ' শিরোনাম নেই শিরোপাও ' তে নিজেই যখন অক্লেশে বলেন : ' আমি যা লিখি তা কেউ বুঝতে পারেন না । এলেবেলে লেখা । অপরিপক্ক ছন্দ ও তার ব্যন্ঞ্জনা । কারো কারো মতে একটু ধ্যান দিলে কবিতা হয়ে যেতে পারতো । যাঁরা বলেন তাঁরা কিন্তু সকলেই কবিতার আসরে নামজাদা । ' তখন এই সত্যকথনকে হাত তুলে সমর্থন জানাতেই হয় । কারণ ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত উক্ত গ্রন্থটির ১৫২ টি কবিতার মাথামুণ্ডু না বুঝলেও তার ভেতর বেজে ওঠার মতো ব্যন্ঞ্জনাটুকু বিন্দুমাত্র নেই । ' এতেই কি পাড়ি দেবে অন্যজন কোথায় শ্রবণ/ নীলশূন্যে চেয়ে দেখে নীলের মমতা বন্দি সে ।' ( ' নীলের মমতা বন্দি '),' কেউ এসে গেছে কি লামাকে/ খবর খুঁড়ে তুলে? '( খুঁড়ে) , ' পাঁচ তারা জ্বলে ওঠে/ অহ্ন ঘেঁটে নিজস্ব ধারায়? ' ( ' ষাট বৎসর পূর্তি উৎসব ')কবিতা পংক্তি পড়লে মাথা আগডুম বাগডুম করে ,তবে পুরো বইটি পড়ার পর পাঠকের কি ঘটতে পারে তা ভেবে আতঙ্কিত হই ।
সত্তর দশকের একশ্রেণীর কবি বাংলা সাহিত্যে দুর্বোধ্য কবিতার যে চল করেছিল, বর্তমানে তা প্রায় নিশ্চিহ্ন । কারণ মাথার ওপর দিয়ে চলে যাওয়া কবিতা মানুষ কিছুতেই পছন্দ করেন না তা আমরা দুর্বোধ্য যুগের মাধ্যমে শিক্ষালাভ করেছি । আবার যাঁরা কবিতা
শীর্ষশিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেন এই ' যা খুশি তাই 'কবিতা তাঁদের খুশি করে না । আর ' আমার কবিতা খুব খারাপ ' বলে এই কবির মতো যারা প্রকাশ্যে আহ্লাদ করে নিজেকে নিয়ে, তাদের কবিতা প্রকাশক বের করতেই পারেন কিন্তু তা পোকায় কাটবে বলা বাহুল্য ।তপন আদিত্য- র প্রচ্ছদটি সামান্য হলেও অন্য ধরনের ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন