চিত্রকিছু বই কিছু কথা ১৯৫ । নীলাঞ্জন কুমার
জ্যোৎস্না জরিপ । খগেশ্বর দাস । সাংস্কৃতিক খবর। কুড়ি টাকা ।
'খাদের পাশে পরিত্রাতা তুমি/ তোমার হাতে এই রেখেছি হাত ।' , নয়তো, ' উদ্ভিদ বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই বলে / এতদিন স্বজন চিনিনি ।' ( ' প্রকৃত স্নেহচ্ছায়া ' ) -র ভেতরে আপাত সরলতা লেগে থাকলেও তার ভেতরের জটিল বিষয়টি যিনি চুপিসারে ঢুকিয়ে দিতে সিদ্ধহস্ত সেই কবি খগেশ্বর দাস তাঁর কবিতার পকেট বুক ' জ্যোৎস্না জরিপ ' এর ভেতর সেই কাজটি করেছেন । ঠিক সে রকমই কবিতার ভেতরে তিনি আমাদের ডুবিয়ে দেন : ' আমি ব্যারোমিটারের ভাষা জেনে নেব/ বৃষ্টি প্রিয় মেঘলা কদম ফুলে । ' ( ' ব্যারোমিটারের ভাষা ') , বিষণ্ণ ঝড়ের রাতে /জল - ঝর্ণা জানে ভীষণ মরণ আলিঙ্গন । ' (' দুঃসাহস ') , ' মানুষের কাছে গেলে/ সেরে যায় হৃদয়ের/ আজন্ম অসুখ ' ( ' মানুষের কাছে গেলে ') - তে ।
কবির এই পকেট বুকটি সেই অর্থে ভালো উদ্যোগ প্রতিপন্ন করে তা কবির লেখনীর গুণে । কবির ভাবনাকে তাড়িত করে বাস্তবতা, আবেগীয় স্মৃতি, প্রকৃতি প্রেম আর তার মধ্যে জড়িয়ে থাকে নীতিবোধ । আসলে কবি কুৎসিৎ কিছু তাঁর কবিতায় জানাতে নারাজ শুধু নয় , নিষ্ঠুরতা তাঁর কবিতা থেকে সরিয়ে রাখেন ।
'যে খোঁজে নদীর কপটতা / সে কি জানে পাখির গানে জ্যোৎস্না জরিপ ' ( ' জ্যোৎস্না জরিপ ') , সংকীর্ণ স্বভাবদোষে / দুরদৃষ্টি আটকে থাকে/ নিকটবর্তী ঘাটে/ অলক্ষ্যে দূরের পানসি/ ভেসে চলে যায় ।' (' দূরের পানসি ' ) -র সঙ্গে বসবাসকারী এই কবির কবিতার মধ্যে বসবাস করতে গিয়ে আনন্দই লাগে ।
কবির কবিতার স্বাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন পরিচিত হওয়ার কারণে ও এই কাব্যগ্রন্থ পুণঃপাঠের পর কবির কবিতা আরো নতুনভাবে পেতে ইচ্ছে করে । মলি লাহার প্রচ্ছদ জ্যোৎস্নার পরিবেশ চেনাতে চেষ্টা করেছেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন