ব্যক্তিত্ব
মণিকাঞ্চন রায়
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
পরিবেশ ও সমাজের স্বার্থে নিবেদিত এক চরিত্র – মনিকাঞ্চন রায়, পেশায় শিক্ষক,আর নেশায় অনেক কিছুই। কখনো ছাত্রের প্রয়োজনে বই লেখা , কখনো শিক্ষাঙ্গন বাদে বৃহত্তর সমাজের মধ্যে জ্ঞানের প্রসার ঘটাতে কুইজ পরিচালনা করা, কখনো আবার অজানাকে জানার উদ্দেশ্যে প্রাচীন রাজবাড়ীর কঙ্কাল সারে কান পেতে ইতিহাস খুঁজে বেড়ানো, নয়তো প্রকৃতিকে সবুজে মুড়ে দেওয়ার তাগিদে নিজে এবং অন্যকে অনুপ্রানিত করা,কখনো অসহায় মানুষের পাশে দারান-এইরকম এক ব্যাতিক্রমী সমাজের দৃষ্টান্তমূলক তরুন শিক্ষক হলেন মণিকাঞ্চন রায়।মেদিনীপুর থেকে প্রায় ৭৫ কিমি দূরে প্রতিদিন ১৫০ কিমি যাতায়াত করে সমাজ সেবা তথা প্রকৃতির সেবায় নিজেকে সদা ব্যাস্ত রাখার নাম মণিকাঞ্চন রায়। মেদিনীপুরবাসি এই শিক্ষক নব প্রজ্জন্মের কাছে এক দৃষ্টান্ত। মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে নিজের ভাবনায় শান্তিনিকেতনের সনাঝুরি আদলে গড়ে ওঠা সূর্যাস্তের হাট এনার প্রচেষ্টায় মেদিনীপুরের নব চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে প্রশাসনকে সহযোগী করে তুলতে পেরেছেন এই শিক্ষক, পরিবেশ প্রেমি সমাজসেবি। এখানেই শেষ নয় পরিবেশ বাঁচাতে কখনো ঝাঁটা হাতে শহর পরিষ্কার এ নিজেকে আন্যদের সাথে সামিল করেন, কখন সামুদ্রিক কাঁকড়া বাঁচাতে নিজের সংগঠনের সাথে ১৪০ কিমি চাঁদিপুর থেকে দিঘা কোস্টাল ট্রেকিং করেন, কখনো প্লাস্টিকের বিপক্ষে মেদিনীপুর থেকে নবান্ন সাইকেল রেলিতে অংশ,কিংবা দিঘার সি বিচ পরিষ্কারে নিজেকে সক্রিয়ভাবে নিজেকে বারে বারে নিযুক্ত করেন।একজন প্রথাগত শিক্ষকের বাইরে সমাজের স্বার্থে নিজেকে কিভাবে মেলে ধরা যায় সেটার প্রমান এই কোভিট পিরিওড ।করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ যখন লক ডাউনে গৃহবন্দী রেখে পরিবার রক্ষার তাগিদ খুঁজে চলেছেন সেইসময় একদল মানুষকে নিয়ে প্রতিদিন পৌরপ্রশাসক তথা মহকুমা শাসকের নির্দেশে নানান সমস্যার সমাধেনে ছুটে বেরিয়েছেন অকুতভয়ে। বাড়িতে শয্যাশায়ী মা এর কঠিন অশুখ থাকা সত্যেও নিজেকে সমাজের কল্যাণে সপে দিয়েছেন এই মানুষটি। একজন সাধারণ মানুষ হয়ে কিভাবে প্রশাসনের প্রিয় মানুষ হওয়া যায় সেটা ইনাকে দেখে,এনার কাজকে দেখে আগামী ভবিষ্যৎ শিখবে। বিদ্যালয় থেকে সমাজে ফাঁকা স্থান পেলে গাছ লাগানো এনার নেসাতে পরিনত হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠান বাড়ি হোক , কিংবা রক্তদান শিবির , কিংবা বিশ্ব পরিবেশ দিবস বা অরন্য সপ্তাহ সব ক্ষেত্রে নিজের উদ্যোগে , নিজের খরচে প্রতিনিয়ত গাছ বিলি করেন , গাছ লাগিয়ে পরিবেশ কে বাঁচাতে স্বচেস্ট থাকেন। সারাবছর শুধু শহরবাসী নয়, জেলা শাসক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, শহর থেকে গ্রাম,সর্বত্রই যখনই মানুষ গাছ চেয়েছেন ,তৎক্ষণাৎ পেয়েছেন। নিজের ঘরকে বানিয়ে ফেলেছেন নার্সারিতে , সারাবছর গাছ বিলির জন্য সর্বদাই গাছ থাকে এনার ঘরে, মেদিনীপুর কে পলাশে রাঙ্গিয়ে দেওয়ার কল্পনা থেকে বাস্তবে বিভিন্ন নার্সারিতে চারা তৈরি করে মানুষের মধ্যে বা প্রশাসনের মাধ্যমে এলাকায় ছড়িয়ে দিতে বধ্য পরিকর ইনি। শিশুমনে পরিবেশ কে বাঁচানোর তাগিদে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রজেক্ট ওয়ার্কে গাছ লাগানো এবং তাঁকে টিকিয়ে রাখার ভাবনাকে জাগরিত করে চলেছেন ইনি। গাছ পাগল এই মানুষটিকে কেউ ডাকেন বৃক্ষ মিত্র , কেউ ডাকেন গাছ দাদা, কেউ বলেন পরিবেশ প্রেমী। সূর্যাস্ত সপ্তাহান্তে মিলন হাট গঠন করে হস্তশিল্প ও লোকসংস্কৃতির এক মেলবন্ধন রচনার প্রধান কারিগর ইনি। প্রসাসনের সম্পূর্ণ সহযোগিতায় এক রুক্ষ ভূমি আজ সবুজে মোড়া,মেদিনীপুরবাসীর খোলা নিশ্বাস নেওয়ার এক অভিনব স্থান, প্রসাসনের চোখ যেখানে যায় নি এতদিন ,সেখানে প্রসাসন আজ জায়গাটি নিয়ে নতুন কিছু করার ভাবনা ভাবছে এখন । এমন এক মেল্বন্ধনের জায়গার প্রথম বীজটি রোপিত হয়েছে এনার হাত ধরে। আগামিদিনে এই স্থান মেদিনীপুরের এক গর্বের জায়গায় পরিনত হবে,সরকার নতুন করে সাজিয়ে তুল্বে হয়তো এই স্থান কে ,কিন্তু সেই সেতু বন্ধনটা মেদিনীপুর বাসি ভুলবে না এই তরুন শিক্ষকের সেই সেতু বন্ধনটা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন