কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
বাক নদী মায়া জল । চিত্তরঞ্জন হীরা । অতএব । কুড়ি টাকা ।
কবিতা যাপন বড় আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে বলে যিনি একবার সে স্বাদ গ্রহণ করেন তিনি তার থেকে বেরোতে চান না । কবি চিত্তরঞ্জন হীরার অবস্থাও তাই । ১৯৯৫ সালে তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'বাক নদী মায়া জল ' -এ বোঝা যায় তিনি সেই আনন্দে ভেসে চলেছেন । আর তা পেরেছেন বলে লিখে ফেলেন জীবন প্রসঙ্গে : ' জীবন একটি নদী, মৃত্যু নদীর কূল/ জীবন একটি দাহ, মৃত্যু শোকের ফুল/ জীবন একটি ক্ষুধা, মৃত্যু পরিত্রাতা ( 'নদীকূল ') , ' শ্বেত জবা চন্দন, তিল তুলসী ওং/ ওই দেখো আমারও যে ভিজে গেল/ জীবন যাপন ' ( ' দুধ মন্ত্রপাঠ'-৪') -এর মতো উজ্জ্বল অনুভব ।
দীর্ঘ পঁচিশ বছর আগের কাব্যগ্রন্থটিকে পুণঃপাঠের পর বুঝে ফেলি এ সময় কবির ধীরে ধীরে অনেক অগ্রগতি হলেও সে সময়েও তিনি শব্দ চিন্তন মনন নিয়ে পাঠককে আকর্ষণ করতে কতটা ক্ষমতাশালী ছিলেন । কবির কবিতায় যে রহস্যময়তা পাই তাকে ছুঁতে ইচ্ছে করে বলে এই সব পংক্তির সামনে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়: ' চাঁদের হোমপাত্র থেকে সন্ত্রাস গলা অন্ধকার/ আলোছায়া ঘুর্ণি হাওয়ায় ...' ( ' জন্ম পরিধি') , ' আত্মার বৈভবে মেধাবিনী খুশি; খুশির গিমিক, / চুমু খেতে খেতে শব্দের পাশে সকাল বিকেল । ' ( ' উৎসব ছাই '), ' আর সব মদ্যপান কিংবা মিথুন আগুন/ ডুবে যায় ডুবে যায় অপরাধ কেবিনে ....' ( ' ব্রহ্মসুহৃদ ' ) এর কাছে ।
চিত্তরঞ্জন হীরার পড়লে বোঝা যায় শব্দের আকর্ষণ কত গভীর হতে পারে । অতি সংক্ষেপে তা হয়তো পুরোপুরি আলোচনা করা যায় না । তবু একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে এই কাব্যগ্রন্থ পাঠে নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায় ।নিলাদ্রী মজুমদার প্রচ্ছদ ইঙ্গিতবাহী ও আকর্ষক ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন