কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
স্বপ্নসুন্দরের জগৎযাত্রা । অদীপ ঘোষ । ইসক্রা । চল্লিশ টাকা ।
' সঙ্গমের অনুবাদ করেছে শিশুর জন্ম/ এ সব অবশ্য অসম্পূর্ণ অনুবাদ/ আমি গোটা মহাভারত অনুবাদ করতে চাইছি '( ' এটা ভূমিকাও হতে পারে ') চিনিয়ে দেয় কবির ইপ্সিত ইচ্ছে , যা স্বপ্নসুন্দরের সন্ধানে যেতেই পারে, আর পারে বলেই কবি অদীপ ঘোষের কবিতা পড়তে মুখিয়ে উঠি । কবির কাব্যগ্রন্থ 'স্বপ্নসুন্দরের জগৎযাত্রা ' -র ভেতরের অদ্ভুত সহজতা অথবা পুরো কবিতা হয়ে যাওয়া সৃষ্টিগুলির সামনে দাঁড়িয়ে অনেক কিছু ভাবতে ইচ্ছে হয় । কেঠো চালের নয়তো জিলিপির প্যাচ মারা কবিতাদের পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে ওঠা মন আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠে যখন পাই: '
এখানে বালির ভাষা জলের প্যারডি/ ফণিমনসার ঝোপ অরণ্যের সবুজ খেউড়/ রক্ত নয়- পতনের শিরা উপশিরা ফুঁড়ে বালিস্রোত হাঁটে ' ( ' মরুভবন' ) এর মতো সফল উচ্চারণ ।
অদীপের সমস্ত কাব্যগ্রন্থ পড়ে ফেলার কারণে তাঁর কবিতার নাড়িজ্ঞান আমার আছে । কবির গুণ তিনি প্রতিটি কাব্যগ্রন্থের টিউনিং নিয়ে মাথা ঘামান । তাঁর ভেতরে যথেষ্ট সম্পাদনা গুণ থাকার জন্য তিনি অক্লেশে অপছন্দের কবিতা বাদ দিতে জানেন, ফলে কাব্যগ্রন্থের আকর্ষণ আরো বাড়ে ।
' একবার তুমিও উদ্ধত হও/ ভেঙে দাও পরিচিত প্রিয় বর্ণমালা ' ( ' ম্যাজিক্যাল বসন্ত ') যেভাবে অচিরে কবিতা হয়ে ভেতরে সংবহিত হয়, তেমনি হরেক কিসিমের পংক্তি পাই তাঁর এই কাব্যগ্রন্থে। কবির কাছে সম্পূর্ণ মহাভারতের অনুবাদ চাই না, নিজস্ব কবিতা চাই, যা দেওয়ার যোগ্যতা কবির আছে ।কত সুন্দর সহজ অথচ মর্মস্পর্শী প্রচ্ছদ হয়ে উঠেছে এ গ্রন্থে অদীপ ঘোষ ও অশোক রায়ের হাতের গুণে , তাঁরা ধন্যবাদার্হ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন