কিছু বই কিছু কথা। নীলাঞ্জন কুমার
সাতাশ তারার আলো । অসীমকুমার বসু । পাঠক । আশি টাকা ।
অসীমকুমার বসু সেই কবি যিনি পার্থিব দিক লক্ষ্য করে নির্বিবাদে অপার্থিবের সন্ধান গড়ে তুলতে পারেন । তাঁর কাব্যগ্রন্থ ' সাতাশ তারার আলো ' তে পাই: ' তিনি কি তাঁর নিজের জীবনের আনন্দ ও ব্যর্থতা/ চাপিয়ে দিয়েছেন এই ছবির মানুষটির উপর? ' ( ' ছবির মানুষ '), ' তাই এই হিমরাতে আগুনের পাশে বসে/ মায়া ঝলসানো উষ্ণতায় / ধূসর পাণ্ডুলিপির মতো/ তাদের বিবর্ণ অনুজ্জ্বল রেশটুকু টের পাই ।' ( ' প্রত্নতত্ত্ব ') এর মতো পংক্তি তার জানান দেয় । এবাদেও পেয়ে যাই তাঁর আরো কিছু উজ্জ্বল উচ্চারণ: ' তবুও অপেক্ষা থাকে ডাকপিওনের / গাছে জল দিতে দিতে ভাবি/ দরজার ওপারে ছোট্ট ঘড়িটি কি এখনই বেজে উঠলো? ' ( ' হ্রদের পাশের জীবন ') , ' হয়তো ভুলেও গেছে/ মোমবাতির আলোয়/ সকলে গোল হয়ে বসে/ একটি সম্পূর্ণ কবিতা পড়ার কথা ছিল । ' ( ' ছেঁড়া কবিতার কড়চা ')।
কবির চিন্তার বিস্তার তাঁর অতীতের অনেক কাব্যগ্রন্থে দেখতে পাই । তাঁর পরিশিলিত কাব্যিক দ্যোতনার ভেতরে তেমন জটিলতা নেই, আছে সারল্য ও মন্ত্রমুগ্ধ করার কৌশল ।
চার ফর্মার বইটির ভেতরে কাব্যভাষা ও সামগ্রিক নৈসর্গিক প্রেম মাথাচাড়া দেয় । অনুভূতি প্রবণ এই কবির বহু উচ্চারণ তাই ছেড়ে যেতে চায় না । ভালো লাগে তাঁর নিঃসঙ্গ বোধ, রুচিময় অনুষঙ্গের সঙ্গে মাখামাখি করা উচ্চারণ । বিপ্লব মন্ডলের প্রচ্ছদ নতুন কিছুর সন্ধান দিতে চেয়েছেন সাধারণ পটভূমিকায় । তৃপ্তি পাই তাঁর প্রচ্ছদের কালার কম্বিনেশনের গুণে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন