সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৫৫.
কবিতাপাক্ষিক ২৬০ সংখ্যার মলাটপাতা এবং ওই সংখ্যায় প্রকাশিত কিছু কিছু কবিতা নিয়ে কিছু কিছু কথাবার্তা বলছি।বলা ভালো -- বলে চলেছি। এখনো বলা বাকি আছে।
মাননীয় পাঠক , তাহলে অনুমান করুন , মাত্র একটি সংখ্যা নিয়ে যদি তিন-চার কিস্তি লেখা হয়, তাহলে পাক্ষিক পর্বের ৫০০ টি সংখ্যা নিয়ে আলোচনা কবে শেষ করব !
এই লেখার পাঠকেরা , যাঁরা ধারাবাহিকভাবে পড়ে চলেছেন , তাঁরা জানেন এই লেখার অনেকগুলি ধারা আছে। লেখাটি এক ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে না। বহুমুখী ধারা। এক এক রকম বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ বা প্রতিষ্টা করার জন্য ব্যবহার করছি ভিন্ন ভিন্ন ধারা।
আগে যেমন তরুণতম কবিদের আবির্ভাবক্ষণগুলিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি , পরে দশ বছর পূর্তি উৎসব -এর জৌলুশ-কে সামনে এনেছি , এখন চেষ্টা করছি মাত্র একটি সংখ্যাকে আমরা কীভাবে সুসজ্জিত করতাম। এতদিন তার একটি বিশ্লেষণ করতে বসেছি।
এব্যাপারে পৃথিবীর প্রথম অনলাইন সাহিত্য দৈনিক 'দৈনিক বাংলা '- র কর্মকর্তা সৌমিত্র রায় এবং এই লেখার পাঠকদের সমর্থন -কে সাধুবাদ জানাই। সকলের সমবেত প্রচেষ্টায় এই লেখাটি যদি কবিতা পাঠকের কাজে লাগে , তাহলে আমি ধন্য হব।
ফিরে যাই ঢাক বাজাতে।
সন্দীপ বিশ্বাস লিখেছিলেন ৩টি কবিতা। শিরোনামগুলি পড়ুন।
গাছ পাতা বনোৎসবের খুঁটিনাটি/ অঙ্কের উত্তরফল/গৃহস্থবাদী তাদের রান্নাবান্না ।
এইরকম শিরোনাম আধুনিক কবিতার সংকলনে দেখতে পাবেন না।
মাঝের পাতায় ছিল : রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায় -এর ম্যাসাঞ্জোরে লেখা কবিতা। যা আদতে একটি ভ্রমণ- কাহিনি। যেখানে রজত জানিয়েছিল :
' আর আমার মন বলছে, এরপর আমি একটা নদীকে ছদ্মবেশ নিয়ে ড্যাম ছেড়ে ব্যারেজের চোখে ধুলো দিয়ে, একটা বিরাট বড়ো ওয়েনডারার গাড়িতে চেপে উধাও হয়ে যেতে দেখব। যে গাড়িটার গায়ের রং হবে কপোতাক্ষের জলের চেয়েও ধূসর আর যার নম্বর হবে BLA 7169.'
রজতেন্দ্র-র এই কবিতা বা ভ্রমণকথা
সম্পর্কে যা বলার পাঠকরা বলবেন। যা বলার তা কবিতা-ই বলে যাবে।
গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতায় উঠে এসে ঘুমন্ত কামানের কথা , এটা মলাটপাতায় লেখা ছিল। এবার কবিতায় কী লেখা ছিল তা দ্যাখার চেষ্টা করা যাক :
' যেসব ঘুমন্ত কামানের সঙ্গে আপনাদের সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয় তাদের নাম হতে পারে দলমাদল কিংবা জাহানকোষা '।
গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় দুটি প্রাচীন ইতিহাসখ্যাত কামানের কথা বলেছে। গুরুদাসের আগে অসংখ্য কবি ওই কামানের কথা বলেছে। কিন্তু কেউ কি বলেছে ওই দুটি কামান ঘুমিয়ে আছে। গুরুদাস বলার পর বুঝতে পারলাম সত্যিই তো কামানদুটির ঘুমিয়ে থাকার কথা। কবিরা এই পথেই আবিষ্কার করেন জানা রাস্তা -কে নতুন করে জানাতে।
দীপংকর ঘোষ বাংলাকবিতা একজন প্রধান কবি । তাঁর ' আঠারো ঘর , নয় দরজা ' কবিতাটিতে বাউল বসবাস করে।
দীপংকরদা জানিয়ে দিলেন : ' আঠারো ঘরের সব কবিরা , সব লেখকরা মিলেই তো আমরা একটা গল্প কিংবা একটা কবিতা লিখে চলেছি ' , এভাবে শুরু করে শেষে জানালেন : ' নয় দরজা খোলাই থাকে ।পাখির যাওয়া আসা।ধরা তারে যায় না। উড়ে গেছে ময়না ।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন