সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৫৮.
আমি গলা উঁচু করে বলে থাকি :
আমি স্বজনপোষণ করি ।
এবং
আমি পক্ষপাতদুষ্ট ।
এই দুটি অপকর্ম-কে আমি গৌরবজনক মনে করি কেন ? তার জন্য অভিধানের কাছে গেলাম। অভিধান দেখিয়ে দিল শব্দদুটির অর্থ।
' স্বজনপোষণ ' একত্রে পেলাম না। ' স্বজন ' এবং 'পোষণ ' দু-ভাগে ভেঙে ফেলতে হল শব্দটি।
স্বজন = নিজের লোক ,আত্মীয় , বন্ধু , কুটুম্ব ।
পোষণ = পুষ্টিসাধন , পালন ॥ আনুকূল্য,ধারণ।
পক্ষপাত = অন্যায় সাহায্য, এক চোখোমি।
দুষ্ট = মন্দ ,অসৎ ,দোষযুক্ত , দূষিত , অশুভ , বিঘ্নকারী।
শব্দদুটির অর্থ বারবার পড়লাম। তবু নিজের অবস্থান থেকে সরে আসলাম না। আবার বলছি :
আমি স্বজনপোষণ করি। আমি পক্ষপাতদুষ্ট।
এই ধারাবাহিক লেখায় আমি আমার বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে চলেছি। এই লেখা এক অর্থ আমার পরিজনকথা।
কবিতাপাক্ষিক ২৫২ -র মলাট-লেখা ছিল :
মূলবিষয় : অসুখের দিনগুলি
বাংলাভাষার একজন সংবেদনশীল কবি নিখিলকুমার সরকার ।বসত মুর্শিদাবাদ জেলার দৌলতাবাদে। কিছুদিন আগে হৃৎপিণ্ডের অসুখে আক্রান্ত হন।মুকুন্দপুরের রবীন্দ্রনাথ ঠেগোর ইন্টার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্স(RTIIC
-এ তাঁর নম্বর হয় 16 C । ইনভেসটিগেশন এবং চিকিৎসা চলাকালীন কয়েকটি কবিতা লেখেন নিখিলকুমার , ' অসুখের দিনগুলি ' । শারীরিক অসুস্থতা থেকে যে মহৎ কবিতা লেখা সম্ভব এই লেখাগুলি তার জীবন্ত দৃষ্টান্ত ।
এবার কবিতাগুলির শিরোনামগুলো দেখে নেওয়া যাক।
১॥ হৃৎপিণ্ডের অসুখ রবীন্দ্রগান এবং কপিরাইট বিষয়ক কয়েকটি প্রশ্ন
২ ॥ প্রজাপতিরং অ্যাপ্রন এবং মালিনী সম্পর্কিত কিছু তথ্য
৩ ॥ ১৬ নম্বর কেবিন এবং জানালা সংক্রান্ত প্রতিবেদন
কবিতা তিনটি লেখার তারিখ এবং সময় :
০৭-০৩-২০০৩/ রাত ১০ টা
১৯- ০৩- ২০০৩ / সন্ধে ৭ টা
২০-০৩ - ২০০৩ / সন্ধে সাড়ে ৮-৩০
আগেই বলেছিলাম কবিতা তিনটি লেখা হয়েছিল RTIICS , কেবিন নম্বর ১৬ । নীচে মুকুন্দপুর লেখা।
কপিরাইট বিষয়ক কয়েকটি প্রশ্ন-র ১টি প্রশ্ন :
ওই রমণীর হৃৎপিণ্ডের অসুখের সঙ্গে কপিরাইট উঠে যাওয়া বা না যাওয়ার কোনো সম্পর্ক আছে কি ?
মালিনী সম্পর্কিত কিছু তথ্য -র মধ্যে ১টি তথ্য :
যতই কৌতূহল উদ্দীপক হোক না কেন , তপোবন থাকে আজ অব্দি মালিনী / কতবার প্রবাহপথ পরিবর্তন করেছে তা কিছুতেই টের পায় না
জানলা সংক্রান্ত প্রতিবেদন -এর একটা অংশ :
রাত ১০টা ।জানলায় আমি ১৬ সি ।মুকুন্দপুরের রাতের আকাশে/ একগুচ্ছ সবুজ নক্ষত্র দেখতে পাচ্ছি একটা ভাসমান স্ট্রেচারকে ঘিরে ওরা হেঁটে যাচ্ছি/ সাদা স্ট্রেচারে শোয়ানো একটা রক্তলাল হৃৎপিণ্ড। ওটা আমার।
একটা কবিতার গুটিকয় লাইন পড়ে কিছুই যথাযথ অনুমান করা যায় না। তবু কবিতাটি কথা এবং কবিতাটি সম্পর্কে কিছু তথ্য পেশ করতে পারলাম এটাই আমার কাছে বাড়তি পাওনা।
কপা ২৫২ - তে মাঝের পাতায় ছিল শঙ্করনাথ চক্রবর্তী-র কবিতা। দুটি কবিতা।
কবিতাদুটির নাম : নাট্যশালার লিফলেট।
আগামীকাল ওই লিফলেটদুটি পড়া যাবে। সঙ্গে শঙ্করনাথ সম্পর্কিত গুটিকয় কথাও বলা যাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন