কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
বাৎসল্য । প্রবীর মন্ডল । রূপকথা প্রকাশনী । পঁচিশ টাকা ।
কবি প্রবীর মন্ডল যখন কোন কাব্য পুস্তিকা প্রকাশ করেন তখন তিনি কোনো বিষয়ের ওপর জোর দেন । বর্তমান কাব্য পুস্তিকাটিতে বাৎসল্য তাঁর বিষয় । এছাড়া কাব্য পুস্তিকার নামও 'বাৎসল্য' । এখানে প্রতিটি কবিতা দার্শনিক থেকে সাদামাঠা সব কিছুর ওপর দাঁড়িয়ে তিনি বাৎসল্যের দিকটি ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তাঁর মতো করে । যখন তিনি বলেন: ' মানুষের হৃদপিন্ড থেমে গেলে মানুষ মারা যায়/ গাছের শিকড় কেটে দিলে গাছও মারা যায়/ অতএব গাছের শিকড় ' হৃৎপিন্ড ' বলেছে আমার ছেলে ' কিংবা ' শুধু দুষ্টু সে আমার দুঃখ বোঝে/ আমার চোখের জল ওরও চোখে ' -র মতো আবেগীয় দিকগুলি এখানে বেশি করে প্রত্যক্ষ করা যায় ।
কবির বাৎসল্য ভাবনা তাঁর শিশুপুত্র কেন্দ্রিক । তাই তিনি হয়তো একটু বেশি আবেগী হয়ে পড়েছেন , যার জন্য কখনো সখনো কবিতায় তার বিরূপ দিকটি দেখা গেলেও, বাৎসল্যকেন্দ্রিক বলে তা পুষিয়ে যায় ।
শিশুর চেতনা ও বাৎসল্যকে আঁকড়ে ধরতে কবি স্বাভাবিকভাবেই ছোট ছোট ঘটনার আশ্রয়ে তা মানবিক দিক থেকে উচ্চস্থানে নিয়ে যায় । ' আমি ফোনের মুখে চুমুর শব্দ করি/ দুষ্টু ঠিক কতখানি খুশি হল/ আমি জানতেও পারি না ' -র মতো এক পিতার অনুভূতি দাগ কাটে ।
কবি প্রবীরের ভেতরের কাব্যগুণকে বিষয়কৃত করে যে পথ চলা, তার মধ্যে কিছু বিশেষ দিক ধরা পড়ে । পৃথিবীতে বিষয় অনন্ত । সব দিকে তিনি যেতে পারবেন না তবু তাঁর চেষ্টা সফল হোক এই কামনা ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন