সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৭৪.
সব্যসাচী রায়চৌধুরী এই নামটি দেখতে পাচ্ছি , আমাদের কবিতাপাক্ষিক শীর্ষক তার লেখাটিও দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু তার মুখ মনে পড়ছে না। সে লম্বা না বেঁটে , ফরসা নাকি শ্যামবর্ণ সেসবও মনে পড়ছে না। ২০০৩ থেকে ২০২০ , মাত্র ১৭ বছরে সব উধাও হয়ে গেল !
সেসব নিয়ে ভাবতে বসছি না। লিখছি সব্যসাচী কী লিখেছিল , সেই লেখার কথা :
' পরের অ্যাসাইনমেন্ট কলকাতা বইমেলা '৯৩। কবিতা
-পাক্ষিকের স্টল পড়ল এস ২২৬ নম্বরে। সে এক খোশগল্পের মক্কা বিশেষ। মাঝে মাঝে সেটা ক্যাওস থিয়োরি ছুঁয়ে দিলে প্রভাতকাকু দূর করে দিত আমাদের , মানে কবিতাপাক্ষিক সি টিম , অর্ণব , বাপন, সৌমিত্র , রাজেশ।তখন আমরা সিগারেট , ট্যাপ আর কাউন্টারে মেলা প্রাঙ্গণ জমিয়ে রাখছি উদ্ভট তত্ত্ববাগ্মিতায় , বলা ভালোবাওয়ালিতে । শক্ত হচ্ছে মানবশৃঙ্খলের দৃঢ়বদ্ধতা তার সঙ্গে জানতে পারছি খুচরো ডিটেল । যেমন বাইরে গম্ভীর ভাব দেখালেও সুমিতেশদার মধ্যে অনেক দুষ্টুমি লুকানো। কী দুষ্টুমি সেটা অবশ্য লিখছি না, কারণ আছে। তাছাড়া আমার ' সি ড্রাইভ'টা নেহাতই জালি, তাই পরপর সব সাজানোর চেষ্টা বৃথা '।
এরপর সুব্রত চেল কথা। সুব্রত কীভাবে শুরু করেছিল লেখাটা :
' আমার কবিতাপাক্ষিক না আমাদের কবিতাপাক্ষিক এই টাইটেল স্থির করতে দশমিনিট লেগে গেল।'
... ... ... ' অনুষ্টানের পর তখন রাত্রি দশটা, প্রভাতদা , আমি , সম্ভবত সুজিত হালদার আর কেউ কি ছিল পোস্টার আঠার পাত্র নিয়ে চললুম রবীন্দ্রসদন। পোস্টারে ছয়লাপ করে দিতে হবে কাল পঁচিশে বৈশাখ রবীন্দ্রসদনের মানুষজন ঘুম থেকে উঠে যে নামটি পড়বে তা হল কবিতাপাক্ষিক। রাত্রি ১২টা । একটায় আমরা ফিরে এলুম কালীঘাটে। আমাদের যাত্রা হল শুরু।'
সুব্রত চেল আরো লিখেছিল :।
' সেই কবিতাপাক্ষিক আর আজকের কবিতাপাক্ষিকের বেসিকেলি কোনো পার্থক্য নেই সেদিনের যাত্রাসংগীত আজকের চলার পথের গান একই সুরে গলা মেলাচ্ছে । কবিতাপাক্ষিক প্রথম দিন থেকে ছিল তরুণদের ভাবনার প্রকাশ । আজও তাই আজকের কবিতার সঠিক প্রকাশ এবং যার চেষ্টাই তাই তার বিচ্যুতি ঘটেনি । যথার্থ সম্মান দিয়ে পরীক্ষা - নিরীক্ষা সে সবসময়ই করে যায় । একটা কাখজ যখন শুরু হয় তখন যে কতগুলো স্বপ্ন দেখাবে বলে মনে রাখে। আমিও মাঝে মাঝে বিস্মিত হই সত্যিই এতগুলো স্বপ্ন মানুষ দেখতে পারবে । যদি ঘুভ ভেঙে যায় । এই ১০ বছরে কবিতাপাক্ষিক কোথায় নেই ? ধুলোয় ফুঁ দিয়ে দেখার সাহস হয়নি ।'
সুব্রত আরো একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিল :
" ইতিমধ্যে যুগটার নামও চেঞ্জ হয়ে , হয়ে উঠল পোস্টমডার্ন ' ।
হ্যাঁ সুব্রত এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। লক্ষ্য আছে। সেদিনের অনেক সঙ্গী এখন আমাদের বিরোধিতায় নেমেছে। কিন্তু আমরা যে বাংলাকবিতাকে অলরেডি বদলে ফেলেছি , সেই বদলকে অস্বীকার করবে কীভাবে ! চোখ খোলা রেখে সাম্প্রতিক বাংলাকবিতাকে দেখতে হবে। শুধু দেখলেই হবে না, মনোযোগ দিয়ে পড়তেও হবে। তুলনামূলক আলোচনা করতে হবে। সেটা করতে পারলেই তোমার ঘোষণার সত্যতা প্রমাণিত হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন