কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
অগ্নিকীট । তপন ভট্টাচার্য । আদম । বারো টাকা ।
আজ থেকে একত্রিশ বছর আগে প্রকাশিত তপন ভট্টাচার্যের কাব্যগ্রন্থ 'অগ্নিকীট ' এই আজকের কবিতার বাইরে কিছু অন্য স্বাদ দিয়ে যায়, যখন পাই:
' কামে দেহ লাল, রাত্রি তার কোলে/ ধাত্রী ঘুমমগ্ন, আয় জন্ম মেঘ ফুঁড়ে ' তখন শিরোনামহীন ছাব্বিশটি কবিতার টিউনিং ধরা পড়ে । বোঝা যায় জন্মস্বাদ, যৌনতা , প্রাণ ইত্যাদির মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে কবি তাঁর নিজস্ব সুরে কথা বলেন, যার বেশির ভাগই নিজের সুরে কথা বলা হয়ে যায়, তাতে পাই বিশেষ আকুতি । সে কারণে এই সব পংক্তি টানে: ' ' অন্ঞ্জলি ঢালো স্তনে, আর গর্ভফুল ফেটে/ রুদ্র এলো, শিশু রুদ্র- জটাজালে ঔদার্য দ্যুতি ' , ' বুভুক্ষু বাতাস গরম, অম্লগ্যাস - গান নেই- ওঁ কার ..../ কে হাসে বিশুদ্ধ ঝড় বেগে- ত্রাহিমাং, ত্রাহিমাং! '
কবি তাঁর কবিতায় যে চিন্তন সৃষ্টি করেছেন তার ভেতরে প্রাচীন বা তৎসম শব্দের আরোপ প্রকট । যা গোটা বইতে বিশেষ আবহ আনে। কবি ইচ্ছে করেই সাজিয়ে রাখেন এক বিশেষ রহস্য, যাতে ' অগ্নিকীট ' কে বিশেষভাবে মানুষের সামনে দাঁড় করানো যায় । এই ব্যতিক্রমী বইটির ভেতর থেকে তাই যৌনতার স্বাদ আলাদাভাবে পাই, যেখানে বাৎসায়ন ও কোকাপুরী বেশ দূরে রয়ে যায় ।
কবিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তাঁর শব্দসম্ভারের ভেতরে এক সুনিপুণ ভাবনার কারণে । যা, ' সূর্যের কেন্দ্রীভূত আগুন- স্পর্শ- আশ্লেষে/ অনুকণা তীব্র হলাহলে জীবপ্রাপ্ত- একবার ' এর মতো উচ্চারণ উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত । গৌতম ঘোষ দস্তিদারের প্রচ্ছদের নামাঙ্কনের হরফগুণ স্পর্শ করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন