পূরবী~ ৩৮
অভিজিৎ চৌধুরী।
রাণু যখন শান্তিনিকেতনে এলো প্রথম বয়স ১১।এখনকার হিসেবে নাবালিকা কিন্তু তখনকার দিনে তো ওরকমটা নয়।
নতুন বউঠান তো জ্যোতিদাদা আর রবির ওপর গিন্নিপনা করেছেন এরকমই কোন বয়সে।
তীর্থের সঙ্গে শিশুদের বরাবরই ভাব।সে কখন বালিকা হয়ে যায় তীর্থ টের পায় না।তার কাছে সে তখনও গলায় আঁকড়ে ধরে থাকা সেই ছোট্ট মেয়েটা।বয়স বাড়ে,কলেবর বাড়ে - তীর্থ টের পায় না।
ইন্দিরা ছিল রবির চিত্রকলার সঙ্গিনী।কখনও নতুন বউঠানের কথা মনে পড়ায়।তবে রাণুর উচ্ছলতা বউঠানের ছিল না।রাণুকে ভানু চিঠি লিখেছেন।ফিরে এসেছে ভানুসিংহের পদাবলী।গহন কুসুম কুঞ্জে ইন্দিরা যেন রাইকিশোরী।
প্রতিমা আর রাণু দুজনেই কবির শেষ জীবনের সখী।বিসর্জনে জয়সিংহ সাজলেন রবীন্দ্রনাথ। বয়স তখন ৬৩।যৌবন যেন ফিরে এল।
তার বিয়ে হল।কিন্তু ডাকলেই সে আসে।ছবিতে ছবিতে সেই মুখমণ্ডল যেন ঘুরেফিরে আসে।
কবিতা খুব কম লেখা হয়।সবচেয়ে বেশী সংশোধন হল পূরবী কাব্যগ্রন্থে।নানা বিমূর্ত ছবি আড়ালে থাকে।তাই রেখায় রূপ পেলো।
মৃত্যু জীবনে এক নবায়ন ঘটায়।যিনি ছিলেন,যিনি রইলেন না- এক অখণ্ড সত্তার হয়তো বয়ে যাওয়া।তাঁর সঙ্গে আর দেখা হয় না।এই জীবনের মতোন ইতি হয়।সম্ভাবনাও থাকে আর দেখা হয় না।এটাও সম্পর্কের সম্পূর্ণতা।যে নদী চলে গেল সে তো হারিয়ে যায় না বরং বইতে থাকে মনের মন্দিরে।
তাই ভালোবেসে সখীর নাম লেখা রইল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন