কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
বজ্রবিদ্যুৎ ঘুড়ি । মৃণালেন্দু দাশ । আলো পৃথিবী । ত্রিশ টাকা ।
১৯৮৬ সালের ' অহল্যা কণ্যা আমার ' কাব্যগ্রন্থের পর ২০১৮ সাল অর্থাৎ ৩২ বছরের এক দীর্ঘ ব্যবধানের ফসল মৃণালেন্দু দাশের দ্বিতীয় কাব্য পুস্তিকা 'বজ্রবিদ্যুৎ
ঘুড়ি ' তে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আরো পরিণত অবস্থান লক্ষ্য করি । 'অহল্যা... ' র ভেতরে সামান্য হলেও যে অমার্জিতের সন্ধান পেয়েছিলাম তা এ কাব্যগ্রন্থে প্রায় নির্মূল । সে কারণে তাঁর বেশিরভাগ পংক্তিতে সন্ধান পাই সেই বিন্দুতে সিন্ধুর , যা তৃপ্তি দেয় । সেই রকম পংক্তি : ' আগুনে পোড়ালে যা, সে তো কাঠামো এক/ এর বেশি আর কিছু নয়, / আগুন রহিত তুমি, অবিনাশী বীজ/ শুধু মাত্র ধ্বনি ' ( ' আগুন রহিত ') কিংবা , ' আমার মাথার চারপাশে এত চক্কর মারছে/ বজ্রবিদ্যুৎ ঘুড়ি, মাটিতে বসে যাচ্ছি/ যেন কর্ণের রথের চাকা- '( ' রথের চাকা ')।
কবির কবিতার ভেতর তাঁর সত্য সন্ধান , যৌক্তিকতা নিয়ে আসে এই পুস্তিকায় । মাত্র ১৬ পৃষ্ঠার ১২টি কবিতার ভেতরে তা বিশেষভাবেই ছুঁয়ে যায় । কলেবর বেশি হয়নি বলে পুস্তিকাটি টানটান হয়ে উঠেছে। নাহলে ' বজ্রবিদ্যুৎঘুড়ি'র সিরিজমাধুর্য লঙ্ঘিত হতো ।
তবে বিষয় ও যৌক্তিক দিকটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করতে গিয়ে শব্দচয়নের ক্ষেত্রে কোন কোন সময়
পুস্তিকার চিন্তনের ভারের সঙ্গে মেলেনা । ' যতই লাঠি খেলা হোক , চৌচির বায়ু/ মাথা যাক ফেটে, নড়ছি না ' - র মতো পংক্তি এ পুস্তিকায় মানায় না। ভবিষ্যৎ বলবে তিনি এর থেকে নিজেকে পরিশিলিত করবেন । অর্কদীপ দাশের প্রচ্ছদে বইটির মেজাজের সমাচার নির্দেশ করে । কবির ভবিষ্যৎ কাব্যগ্রন্থের দিকে তাকিয়ে রইলাম ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন