অণুগল্প || লকডাউনের ডাক্তার
অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়
মনে হচ্ছে প্রত্যেকের এক বা একাধিক স্পেশাল ডিগ্রি আছে। কারুর মুখের সামনে দাঁড়ানো যাচ্ছেনা। একজন দু-তিনটে পদ্ধতি বা ঔষধের কথা বললে, অন্যজন বাড়তি আরো কয়েকটা গড়গড় করে বলে দিচ্ছে । প্রত্যেকে তার জ্ঞান ভাণ্ডার উন্মোচন করতে চায় । এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে অনেকেই চায় না। যদি একজন বলেন, ভাই, যদি মাস্ক, স্যানিটাইজার আর সোসাল ডিসট্যান্সিং সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন ; তাহলে আপনি ফোরেনও যেতে পারেন। তখন আরেকজন বলেন -- ওগুলোতে কিস্যু হবেনা। যদি না আপনার ইমিউনিটি গ্রো না করে। তার জন্য পুষ্টিমূল্যের খাবার চাই পাতে। নইলে পাততাড়ি গুটোতে হবে। সঙ্গে আরেকজন থাকলে তিনিও খুব স্বাভাবিকভাবেই কিছু বলবেন। হয়ত বলবেন, আরে ঐ বাবার বটিকা কিংবা মায়ের মহামারী কবচ না থাকলে লড়াই করার শক্তি থাকবে ! এটা হল অন্তর্নিহিত শক্তি । আর গ্যাং টা বড় হলে, কেউ না কেউ সাতান্ন ইঞ্চির ছাতি ফুলিয়ে বলবেন-- দেখুন, আসল ব্যাপার হল সাহস । শত্রুর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে মোকাবিলা । আমি তো নিরস্ত্র হয়েও সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছি। আবার রাজনীতির ভক্তরা থাকলে খামোকা তারা ময়দান খালি রাখবেন কেন ! হাঁটু ভাঁজ নাকি কনুই ভাঁজ, কোনটা বেশি ফলপ্রসু -- এ তর্কে বাকী সব কিছু কে পেছনে ফেলে দেবেন।
পাবলিকের মত এত ইনফরমেশন বোধহয় ডাক্তারের কাছেও নেই... । আবার তাঁরা তো খুব বেশী কথা বলেন না। হতে পারে, করে দেখুন, দেখা যাক্, করতে পারেন কিন্তু দেখে শুনে, খেতে পারেন যদি সহ্য হয়-- এ ধরনের ক্রমাগত বদলে যাওয়া প্রেসক্রিপশন । বক্তব্যগুলো বেশীরভাগই বেঁটে খাটো, সরু লিকলিকে কিংবা ভেন্টিলেশনের পথে ইত্যাদি । সেরকম কোন বেয়াড়া বিশেষজ্ঞ থাকলে হয়ত বলে দেবেন, আসলে অনেককিছুই 'স্ক্রিপ্ট' দেখে বলেন তো !
------------+++-----------+++-------------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন