কিছু বই কিছু কথা । নীলাঞ্জন কুমার
এইটুকু । তাপস সরদার । মৌহারি । পন্ঞ্চাশ টাকা ।
কখনো কখনো কোনো কোনো কবি তেমন উল্লেখযোগ্য কবিতা না লিখতে পারলেও মাঝে মধ্যে অবাক করা কবিতা লেখেন, যেমন কবি তাপস সরদার তাঁর 'এইটুকু ' কাব্যগ্রন্থে একগাদা একঘেয়ে কবিতার মাঝে কিছু কিছু অনাস্বাদিত কবিতা আমাদের দেন । তাই তাঁর কাছ থেকে পাই : ' ও নিয়তি! ও পণ্য সময়! ও পথঘাট! / সারারাত খোলা শরীরে আবিলতায় । ভেসে যায় মধ্যরাত! ' ( ' মধ্যরাত ' ), ' যে পাখি রাত্রির আকাশে খড়ি দিয়ে উড়ে যায়/ তাকে চেনা হয় না '( ' তাকে চেনা হয় না ') -র মতো উজ্জ্বল পংক্তি ।
কবি তাপস সরদারের দোষের দিক, তিনি কবিতা নিয়ে কম ভাবনা চিন্তা করেন । তার লক্ষণ বইটির পরতে পরতে । গুণের দিক, অজান্তে অসাধারণ পংক্তি তাঁর ভেতরে ছুটে এলে যা দিয়ে তিনি কবিতা লেখেন । তাই তাঁর অবাঞ্ছিত উচ্চারণ : ' এখানে নদীর ভেতর স্রোতের মধ্যে/ দাঁড়িয়ে থাকে সময় ' - এর পাশাপাশি : ' কই এখন তো আর গোরুর পায়ে/ ধুলো উড়তে উড়তে আকাশটা কৃষ্ণচূড়ার মতো দুলে ওঠে না/ ওসব ভেসে ওঠে এখন স্ক্রিনে , ডিস্ক থেকে নেমে আসে নদী । ' ( ' ডিস্ক ')-র মতো পংক্তি অবাক করে ।
একথা সত্যি, একজন কবিকে পন্ডিত বা সর্বজ্ঞাণী হতেই হবে এমন কথা নেই কিন্তু কবিতা নামক শীর্ষশিল্পের চর্চা যাঁরা করেন তাঁদের অবস্থান গভীরতার দিকে যেতে হবেই । না হলে পাঠকমন থেকে সরে যেতে হবে । ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়সারা প্রচ্ছদের বদলে সাদা কাগজে কাব্যগ্রন্থ ও কবির নাম লেখা থাকলে আনন্দ পেতাম ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন