সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৪৩.
দু-বারের উত্তরবঙ্গ সফরের মধ্যবর্তী বেশ কয়েকটি শনি-রবিবার ছিল যেগুলি আমরা নিকটের কয়েকটি পয়েন্টে আমাদের কর্মসূচি পালন করেছিলাম। তার কিছু কিছু খবরও লেখা থাকুক এই দীর্ঘ লেখাটিতে। না-হলে নিকট-কে দূরে সরিয়ে দিলাম মনে হবে। সেটা আমার অভিপ্রায় নয়।
এখন হুগলি জেলার কয়েকটি প্রান্তের টুকরো খবর।
১৫ জুন ২০০৩ , রবিবার বিকেল ৫ টায় শ্রীরামপুরে কবি- নজরুল বিশেষজ্ঞ বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এক অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠানের স্মৃতি এখনো মনে আছে।
মূলত বুদ্ধদেবের প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠানে গান-কবিতাপাঠ-আলোচনা সবই হয়েছিল খুবই পারিবারিক পরিবেশে।
আজ সকালে বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় উপস্থিতির একটা আদল পেলাম। গর্বিত হলাম সেই আসরে উপস্থিত ছিলেন মৃদুল দাশগুপ্ত সোমনাথ মুখোপাধ্যায় সমর মুখোপাধ্যায় রমা ঘোষ প্রমূখ বিশিষ্ট কবিজনেরা। জানতে পেরে।
১২ জুলাই ২০০৩ শনিবার বিকেল ৫ টায় হুগলি বালিকা মহাবিদ্যালয় সভাগৃহে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। আয়োজক ছিলেন মিলন প্রামাণিক , অতিরিক্ত জেলাশাসক ও জেলা ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক।
এই অনুষ্ঠানের সম্পর্কে কোনো তথ্য কারো জানা থাকলে জানাবেন। পরে যুক্ত করে নেব।
১৯ জুলাই২০০৩ শনিবার বিকেল ৫ টায় কালীমাতা ব্যায়ামাগার , চাঁপদানি , বৈদ্যবাটিতে যে অনুষ্ঠানটি হয়েছিল তার আয়োজক ' সেই সন্দীপন ' - এর সম্পাদক কাশীনাথ ঘোষ। সেই অনুষ্ঠানের ছবি পুরো মুছে যায়নি। বুদ্ধদেবের সাহায্যে জানতে পারলাম অমর ঘোষ চন্দ্রশেখর ঘোষ তারক ভড় প্রমূখ কবিদের সহযোগিতায় এটি স্মরণযোগ্য হয়েছিল। আমার মনে হচ্ছে এই অনুষ্ঠানে কবি কানাইলাল ঘোষও উপস্থিত ছিলেন।
উত্তরবঙ্গের দুই সফরের মধ্যবর্তী ছিল না গুড়াপের উৎসবটি।
৭ সেপ্টেম্বর ২০০৩ রবিবার দুপুর ৩ টেয় গুড়াপের শীতলকুমার বালিকা বিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠানটি নানাকারণে মনে রেখেছি।
যাদের উদ্যোগে এটি হয়েছিল তারা হল সন্দীপ লাহা আফজল আলি এবং সঞ্জয় লাহা । প্রতিষ্ঠানগুলির নাম : কথাকলি , সুচেতনা , মিড় এবং খ ।
হাওড়া - বর্ধমান কর্ড লাইনের একটি উল্লেখযোগ্য স্টেশন গুড়াপ। পশ্চিমবঙ্গের একটি উন্নত তথা অভিজাত অঞ্চল হল গুড়াপ। দীর্ঘদিন গুড়াপের ওপর দিয়ে গেছি। তা শান্তিনিকেতন হোক বা দেশের বাড়ি , প্রায় প্রতিবারই গুড়াপ আসলেই মনটা চঞ্চল হয়ে ওঠে। ট্রেনের জানলা দিয়ে দেখি গুড়াপ অটোমোবাইল , যূথিকার মামা-র বড়ো মেয়ে ঘাগর বা আশিসকণা-র বিয়ে হয়েছে গুড়াপ অটোমোবাইলের মালিক অসিত ঘোষের সঙ্গে।
সেদিন অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৩ যখন তখন স্টেশনে উপস্থিত ছিল অসিত। প্রথমে ওদের বাড়ি । তারপর অনুষ্ঠানস্থল , সবটাই অসিতের ঠান্ডা গাড়িতে। যূথিকা এবং ঘাগরের দ্যাখা হওয়াটাও উৎসবের অঙ্গ ধরে নিয়েছিলাম।
আরো একটি বৃহত্তর মিলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল গুড়াপের উৎসব।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে এসেছিল শ্যামাশ্রী , কবিতাপাঠ ছিল কল্যাণের , কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের।
কল্যাণের পছন্দ হয়েছিল শ্যামাশ্রী-র গান। আর শ্যামাশ্রী-র ভালো লেগেছিল কল্যাণের কবিতা।
কিছুদিন পর লোকজানাজানি হয়েছিল কল্যাণের পছন্দ হয়েছে শ্যামাশ্রীকে। আর শ্যামাশ্রীরও পছন্দ কল্যাণ-কে। অতএব শুভদিনক্ষণ টুকু নির্ধারণ করাটা ছিল সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
কাজেই গুড়াপের জয়গান করতেই থাকব। চিরকাল।
বাকি যাঁরা কবিতা পড়েছিলেন কিংবা গান গেয়েছিলেন , তাঁরা সকলেই আমাদের আত্মজন , তাঁদের হাসিমুখ দ্যাখাটাও আমার একটি অন্যতম প্রধান কাজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন