সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১৩৯.
আমার যে বয়স বেড়ে চলেছে , এই সত্যটি এতদিন বিশ্বাস করতাম না। ভাবতাম আমার বয়স এক বিন্দুতে স্থির থাকবে। কিন্তু ইদানীং ধরা পড়ে যাচ্ছি নিজের কাছে। কারণ সব স্মৃতি ফিরে আসতে চাইছে না। এটা সম্ভবত বয়স -বৃদ্ধির লক্ষণ। এই লেখার তথ্য সংগ্রহের জন্য মতি-কে , মুহম্মদ মতিউল্লাহ-কে ফোন করতে হচ্ছে। গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়-কে ফোন করতে হচ্ছে।
ঘটনাগুলো ছবির মতো মনে আছে। ভুলে যাচ্ছি নামগুলো। ব্যক্তির নাম , জায়গার নাম।
আজ যেমন হয়েছিল। উদ্ধার করল মতি। মতি-কে ধন্যবাদ দেবার মতো স্পর্ধা যেন আমার না হয়।
৯ আগস্ট ২০০৩ খাজুরডিহির অনুষ্ঠানের পর ফিরে এসেছিলাম কাটোয়ায়। লজ অশোক-এ।
বলে রাখা বা জানিয়ে রাখা কর্তব্য কাটোয়া এবং প্রভাত চৌধুরী এই দুটি নামপদের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুক্ত আছে লজ অশোক। আর লজ অশোক-এর সঙ্গে যুক্ত আছে অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় নামপদটি।
১০ আগস্ট সকালে ১০ বছর পূর্তি উৎসবের বাইরে একটা যাত্রাপথ নির্ধারিত ছিল। সেই মতো সকালের দিকে এসে গেলেন কবি ড : গোবিন্দরাম মান্না। আমরা চললাম খাজুরদিহি-র পথে বা গতকালের পথে।
ডা: হরমোহন সিংহ নামটি আমাদের খুবই পরিচিত নাম। এক সময় কাটোয়ার এম এল এ ছিলেন। পুরোনো বামপন্থী। চালাক-চতুর বামপন্থী নন। তিনি নিজ উদ্যোগে একটি সেবা প্রতিষ্ঠান বানিয়েছেন। আনন্দ নিকেতন। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না , ঠিক এই মাপের একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব। একক প্রচেষ্টায়।
[19/09, 7:52 pm] Kobi Prabhat Chowdhury: ১৩৯ ॥ শেষাংশ
বলা হয়নি এই তীর্থযাত্রায় মুহম্মদ মতিউল্লাহ-ও যুক্ত ছিল। আনন্দ নিকেতন স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি সংস্থা। সমাজসেবার প্রতিটি শাখা শাখা-বিস্তার করে বিরাজ করছে স্বমহিমায়।
ডা : মান্না খবর পাঠিয়েছিলেন ডাক্তার হরমোহন সিংহ- কে। তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে আমাদের ঘুরেঘুরে সব দেখালেন। কোনো অহংকারের চিহ্ন চোখে পড়ল না। মনে হচ্ছিল আমাদের দেখানোর জন্য উনি নিজে ধন্য হচ্ছেন। একটা কথা খুব ভয়ে ভয়ে বলছি , প্রকৃত বামপন্থী মানুষ বলেই এই কাজ করতে সমর্থ হয়েছেন। রাস্তার উলটো দিকে বেশ অনেকটা জায়গা নিয়ে একটা মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য একটা হাসপাতালও বানিয়েছেন। মনে রাখবেন , আমি আবার বলছি পুরো প্রকল্পটি একক প্রচেষ্টায়।
আজ বিকেলে মতি জানালো আনন্দ নিকেতনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন কমরেড হরমোহন সিংহ-র পুত্র , তিনি নিজেও ডাক্তার।
বিকেলে লজ অশোক-এর সভাঘরে ছিল ১০ বর্ষ পূর্তির ২৫ তম অনুষ্ঠান। আহ্বায়ক : তুষার পণ্ডিত মুহম্মদ মতিউল্লাহ এবং অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রগান শুনেছিলাম মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কবি জপমালা ঘোষরায়- এর কণ্ঠে ।
কবিতাপাক্ষিক ২৫৮ -র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন তুষার পণ্ডিত। উৎসব কমিটির পক্ষে তুষার পণ্ডিত সম্পাদিত ও প্রকাশিত ' স্মারক ' সংকলনটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে নাসের হোসেন । রুদ্র কিংশুক সম্পাদিত ইংরেজি পত্রিকা The Peripheral Window -এর প্রথম সংখ্যাটির প্রকাশ করেন চিরঞ্জীব মুখোপাধ্যায় ।
কবিতা সংবাদে নাসের হোসেন লিখেছিল : এই অনুষ্ঠানটির উচ্চতা এবং ঘনত্ব মনে রাখবার মতো ।
আগামীকাল আবার ফিরে যাচ্ছি মুর্শিদাবাদ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন