সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১২২.
আজ আত্মজনকথা।এতদিন তো আত্মজনকথাই লিখে চলেছি। তবু নতুন করে মনে করিয়ে দিলাম নিজেকে।আজ বলব অশোককুমার দে- র কথা । এখন যারা আমার নতুন সঙ্গী তারা অনেকেই অশোক সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানেন না। এই না- জানার জন্য তাদের কোনো দায় নেই , বরং আমার দায়িত্ব ছিল অশোকের কথা বেশি বেশি করে প্রচার করা। কাজেই অশোক-কে অন্ধকারে রাখার জন্য আমিই দোষী , একমাত্র আমিই দোষী।
অশোককুমার দে-র প্রথম পরিচয় সে একজন
Photographer বা Cameraman.
এখন এই ইংরেজি শব্দদুটিকে বাংলায় রূপান্তর করলে পেয়ে যাব :
Cameraman = (প্রধানত চলচ্চিত্রের জন্য) আলোক- চিত্র- গ্রহণকারী।
Photographer = আলোকচিত্রকর।
আমার এই যে ইংরেজি শব্দের বাংলায় তর্জমা করার প্রবণতা , একে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন।
এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে তখন কবিতাপাক্ষিকের অনুষ্ঠানের জন্য ক্যামেরাম্যান ভাড়া করে আনতে হত না। একা অশোকই রক্ষা করত ছবি তোলার ভার। না বললেও বুঝতে পারছেন তখন ছবিতোলাফোন বাজারজাত হয়নি।
অশোকের ঠিকানা : ৬/ ২ মাধব লেন , কলকাতা ৭০০
০২৫। ল্যান্সডাউন-হাজরা ক্রশিং-এর খুব কাছে।আমি বহুবার ও বাড়িতে গেছি। গৃহশোভা শব্দটি অশোকের অপরিচিত ছিল।
কবিতাপাক্ষিকের এক অনুষ্ঠানে কলকাতার বাইরের কবিদের থাকার জন্য ওদের পাড়াতে ঘর ঠিক করে দিয়েছিল। নিজ উদ্যোগে।
তবে অশোক এবং তার ফোটোগ্রাফের হিসেবে কোনো গোঁজামিল করেন কবিতাপাক্ষিক।
এবার অশোকের কবিতার কথা। শেষে ভিন্নকথা।
কপা ৫০ - এ অশোকের আত্মপ্রকাশ ।কবিতার নাম দৃশ্যকল্প ১ ।
' ঠিক আলো নিভে যাবার মুহূর্তে/ এক ধরনের আলো।'...... "চাঁদের /আলোয় ভেসে যাচ্ছে বাড়ি / অথচ আজ পৃর্ণিমা নয় ।'
অশোকের দ্যাখার মধ্যে অলৌকিকতা ছিল। তখন ঠিক ধরতে পারিনি।
কপা ৭৪ - এ কবিতাটির নাম ' অলীক ভ্রমে ' !
অধিকাংশ কবি যখন লিখছেন ' অলীক প্রেমে ' তখন অশোক 'ভ্রম ' - কে রৃপান্তর করেছিল প্রেমে। ধন্যবাদ অশোক, তখন ঠিক বুঝতে পারিনি।
' কালো আলখাল্লা পরিহিত মাঝমাঠ থেকে এগিয়ে এল একজন মানুষ ।তার মুখে একটা নীলাভ রেফারির বাঁশি '।
শেষে পড়লাম -- ' সে কি তবে নির্দিষ্ট স্টেশন না পেয়েই নেমে গ্যালো।'
কপা ৮৮ - তে অশোকের দুটি কবিতা। কিছু চিহ্ন :
১॥ নীল মোজা চুরি গেলে, মেয়েটা হাসে । / হাত বাড়িয়ে যেই ধরতে যাই টিফিনবাক্স , জলের বোতল/অমনি জানলা দিয়ে বৃষ্টির ছাঁট ।
২॥ আমাকে ডাকছে হেয়ার ব্যান্ড , গন্ধ তেল। / আমাকে ডাকছে দেয়াল ঘড়ির/ থেমে পড়া কাঁটা
৩॥ আজ আমাকে ডাকছে সেই জাদুকর / যার হাতে ধরা দুটি রঙিন ফানুস ।
প্রিয় অশোক , তুমি সে ডাক শুনতে পেয়েছিলে। তুমি যে সত্যসত্যই সে ডাক শুনতে পেয়েছিলে এটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু প্রতিকারের কোনো চেষ্টা করতে পারিনি।তোমাকে তোমার পরিবার নিঃস্ব করে দিয়েছিল। তোমাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তুমি দৃশ্যের ভিতর অলৌকিক দৃশ্যাবলি দেখতে শুরু করেছিলে।
অনেকদিন না খাবার পর একদিন হঠাৎ চলে আসতে আমার কাছে। খাবার কাছে। আমি হোটেলে বলে রেখেছিলাম ওকে খাবার দেবার জন্য। আমি পটলডাঙায় চলে আসার পর আমার ছেলে রাজা বা গৌরব সে - দায়িত্ব পালন করছে বহুদিন।
বহুদিন আমি অশোককুমার দে-র কোনো খবর জানি না।
প্রভাত চৌধুরী
১২২.
আজ আত্মজনকথা।এতদিন তো আত্মজনকথাই লিখে চলেছি। তবু নতুন করে মনে করিয়ে দিলাম নিজেকে।আজ বলব অশোককুমার দে- র কথা । এখন যারা আমার নতুন সঙ্গী তারা অনেকেই অশোক সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানেন না। এই না- জানার জন্য তাদের কোনো দায় নেই , বরং আমার দায়িত্ব ছিল অশোকের কথা বেশি বেশি করে প্রচার করা। কাজেই অশোক-কে অন্ধকারে রাখার জন্য আমিই দোষী , একমাত্র আমিই দোষী।
অশোককুমার দে-র প্রথম পরিচয় সে একজন
Photographer বা Cameraman.
এখন এই ইংরেজি শব্দদুটিকে বাংলায় রূপান্তর করলে পেয়ে যাব :
Cameraman = (প্রধানত চলচ্চিত্রের জন্য) আলোক- চিত্র- গ্রহণকারী।
Photographer = আলোকচিত্রকর।
আমার এই যে ইংরেজি শব্দের বাংলায় তর্জমা করার প্রবণতা , একে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন।
এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে তখন কবিতাপাক্ষিকের অনুষ্ঠানের জন্য ক্যামেরাম্যান ভাড়া করে আনতে হত না। একা অশোকই রক্ষা করত ছবি তোলার ভার। না বললেও বুঝতে পারছেন তখন ছবিতোলাফোন বাজারজাত হয়নি।
অশোকের ঠিকানা : ৬/ ২ মাধব লেন , কলকাতা ৭০০
০২৫। ল্যান্সডাউন-হাজরা ক্রশিং-এর খুব কাছে।আমি বহুবার ও বাড়িতে গেছি। গৃহশোভা শব্দটি অশোকের অপরিচিত ছিল।
কবিতাপাক্ষিকের এক অনুষ্ঠানে কলকাতার বাইরের কবিদের থাকার জন্য ওদের পাড়াতে ঘর ঠিক করে দিয়েছিল। নিজ উদ্যোগে।
তবে অশোক এবং তার ফোটোগ্রাফের হিসেবে কোনো গোঁজামিল করেন কবিতাপাক্ষিক।
এবার অশোকের কবিতার কথা। শেষে ভিন্নকথা।
কপা ৫০ - এ অশোকের আত্মপ্রকাশ ।কবিতার নাম দৃশ্যকল্প ১ ।
' ঠিক আলো নিভে যাবার মুহূর্তে/ এক ধরনের আলো।'...... "চাঁদের /আলোয় ভেসে যাচ্ছে বাড়ি / অথচ আজ পৃর্ণিমা নয় ।'
অশোকের দ্যাখার মধ্যে অলৌকিকতা ছিল। তখন ঠিক ধরতে পারিনি।
কপা ৭৪ - এ কবিতাটির নাম ' অলীক ভ্রমে ' !
অধিকাংশ কবি যখন লিখছেন ' অলীক প্রেমে ' তখন অশোক 'ভ্রম ' - কে রৃপান্তর করেছিল প্রেমে। ধন্যবাদ অশোক, তখন ঠিক বুঝতে পারিনি।
' কালো আলখাল্লা পরিহিত মাঝমাঠ থেকে এগিয়ে এল একজন মানুষ ।তার মুখে একটা নীলাভ রেফারির বাঁশি '।
শেষে পড়লাম -- ' সে কি তবে নির্দিষ্ট স্টেশন না পেয়েই নেমে গ্যালো।'
কপা ৮৮ - তে অশোকের দুটি কবিতা। কিছু চিহ্ন :
১॥ নীল মোজা চুরি গেলে, মেয়েটা হাসে । / হাত বাড়িয়ে যেই ধরতে যাই টিফিনবাক্স , জলের বোতল/অমনি জানলা দিয়ে বৃষ্টির ছাঁট ।
২॥ আমাকে ডাকছে হেয়ার ব্যান্ড , গন্ধ তেল। / আমাকে ডাকছে দেয়াল ঘড়ির/ থেমে পড়া কাঁটা
৩॥ আজ আমাকে ডাকছে সেই জাদুকর / যার হাতে ধরা দুটি রঙিন ফানুস ।
প্রিয় অশোক , তুমি সে ডাক শুনতে পেয়েছিলে। তুমি যে সত্যসত্যই সে ডাক শুনতে পেয়েছিলে এটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু প্রতিকারের কোনো চেষ্টা করতে পারিনি।তোমাকে তোমার পরিবার নিঃস্ব করে দিয়েছিল। তোমাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তুমি দৃশ্যের ভিতর অলৌকিক দৃশ্যাবলি দেখতে শুরু করেছিলে।
অনেকদিন না খাবার পর একদিন হঠাৎ চলে আসতে আমার কাছে। খাবার কাছে। আমি হোটেলে বলে রেখেছিলাম ওকে খাবার দেবার জন্য। আমি পটলডাঙায় চলে আসার পর আমার ছেলে রাজা বা গৌরব সে - দায়িত্ব পালন করছে বহুদিন।
বহুদিন আমি অশোককুমার দে-র কোনো খবর জানি না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন