অনামিকা
কমল কৃষ্ণ কুইলা
আমি অনামিকা
মা নেই বাপ নেই
ভাই নেই বোন নেই
ফুটপাতেতেই থাকি।
ঘর নেই দোর নেই
চাল নেই চুলো নেই
কাজ কাম কিছুই নেই
ভিক্ষা করেই বাঁচি।
তবে এবার বলি শোন ।
মরদটির নাম ছিল বাবলা
পাশের বস্তিতেই থাকে;
আমার কাছে এল ভাব করল
প্রেম নিবেদন করল ।
এমনকি সহবাসও করল ।
আমি আপত্তি করি নি ।
কেননা তাকে আমি
বিশ্বাস করেছি ভালবেসেছি।
কিন্তু হায়! শেষ পর্যন্ত সে
বিয়েই করতে রাজি হল না ।
আমি কারন জিজ্ঞাসা করলাম
সে বলল তার বাড়ির লোক
আমাকে মেনে নেবে না ।।
কারন কি?
আমি নাকি দেখতে খারাপ
গায়ের রঙ কালো;
আর আমার ঠিকানা হল ফুটপাত ।
আমি চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞাসা করলাম-
সহবাস করলে কেন ?
ও বলল ও আর এমনকি !
জাস্ট এনজয় করলাম;
দু-চারশ লাগলে বল-
দিয়ে দিচ্ছি ।।
আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল ।
চোখ ঝাপসা হয়ে এল ।
মাথা বন বন করে ঘুরতে লাগল,
কি করব বুঝেই উঠতে পারছি না ।
স্টেশনের সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম
হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম;
তারপর আর কোনও হুঁশ ছিল না ।।
আর তোমরা কি করলে;
পুরুষ শাসিত সমাজের ধ্বজাধারীরা ।
আমার মুখে এক ফোঁটা জল পর্যন্ত দিলে না ।
উল্টে কি করলে,
আমাকে পদদলিত করে গেলে ।।
ঘুরে একবার তাকালেও না
আমি বেঁচে আছি কিনা ।
এই তোমাদের মনুষ্যত্ব ?
ধিক্কার জানাই ধ্বজাধারীদের
ধিক্কার জানাই ভদ্রবেশীদের
তোমরা মানব জাতির কলঙ্ক ।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন