সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১১৭.
আজও দুর্গাপুরে। আজ ব্রজকুমার সরকার সম্পর্কিত সরকারি তথা বেসরকারি কথাবার্তা। ব্রজ তখন দুর্গাপুরের এ জোনের হর্ষবর্ধন রোডে থাকত। আমার কাদাকুলি/ বাসুদেবপুর যাওয়া পথে দ্যাখা হওয়া সঙ্গীদের মধ্যে এখন একমাত্র ব্রজকুমারই সেই পুরোনো ট্রাডিশন ধরে রেখেছে বা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। গতবারের পুজোর আগেও দ্যাখা হল। একই রকম। কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। কুড়িবছর আগে যেমন প্রাণময় ছিল , এখনো তেমনটাই তাজা এবং গার্ডেনফ্রেস রহে গেছে। এটা খুব জটিল একটি কাজ। ব্রজকুমার তার মনের মধ্যে কোনো ময়লা জমতে দেয়নি। এটাও খুব বড়ো কৃতিত্ব। আরো একটা কথা ব্রজ কখনোই , কোনোদিন নিজের কবিতা সম্পর্কে সবাক হয়নি। লিখে গেছে লেখার নিয়মে।
এখন পড়া যাক ব্রজকুমার সরকারের কিছু কবিতা।
আমার আলোচনার প্রথম কবিতাটির নাম ' কলকাতা থেকে সুতানুটি '। ভুল লিখলাম নাকি ! আগে তো সুতানুটি , পরে কলকাতা । এখানে ইতিহাসকে ব্রজ তার নিজের খেয়ালে পরিচালিত করেছে।
এটা একটি পারফেক্ট রিপোর্টাজ। ব্রজ এবং প্রদীপ , অনুমান করতে পারি প্রদীপ চক্রবর্তী , দুজনে দমদম-টালিগঞ্জ মেট্রোর যাত্রী। এই সফরে সন্ধান পেলাম কয়েকটি চিহ্ন । চিহ্নগুলি দ্যাখা যাক :
১॥ মঞ্জুষদার উদাস পাখিটা এইমাত্র উড়ে গেল।
এই মঞ্জুষদা : মঞ্জুষ দাশগুপ্ত।
২॥ কুরুক্ষেত্রের শরজালে
এই কুরুক্ষেত্র প্রদীপ চক্রবর্তী-র সৃষ্টিক্ষেত্র বা পত্রিকা।
৩॥ বিদ্ধ হচ্ছে দুটি ভিন্নমুখ।
এই ভিন্নমুখ ব্রজ-র নিজস্ব পত্রিকা।
৪॥ দুহাত উপরে তোলে শুভরাত্রি গায় আমাদের প্রভাতদা।
এই প্রভাতদা যে প্রভাত চৌধুরী এটা বলার জন্য ভৌগোলিক অভিধান খুলতে হবে না।
এই মেট্রো-যাত্রাটি কবিতার নতুন সংযোজন।কিন্তু কলকাতা থেকে সুতানুটি এই বাক্যচয়নটি ব্রজকুমারের আর্কাইভেই থাকুক। যেমন আমার
' কৃষিকাজ থেকে পশুপালন ' নামের গল্পটি।
ব্রজকুমারের দুটি ' যাপনপ্রণালী '- র সন্ধান আমার জানা আছে। তা আপনাদের জানানো যেতে পারে।
১॥ সারা বিছানায় প্রবালের আলপনা , মাছরমণীর প্রণয়চিহ্ন।
২॥ শীতের ডানায় ধূসর আয়না , ঘোরলাগা সাপ।
কুসুমকলির বিকেল।
ব্রজকুমারের যাপনপ্রণালীতে জলখননের কার্যক্রম দ্যাখা যাচ্ছে বা আমি দেখতে পাচ্ছি।
এবার ব্রজ -র বিনির্মাণ -এর প্রথম স্তবক :
' যে স্পর্শবিন্দু থেকে শুরু হয় বৃত্তের পরিভ্রমণ
তাকে আমি স্থাপনকেন্দ্র বলি।
নাভিজন্ম বলে কেউ কেউ।'
এই বলা এবং দ্যাখার মধ্যে কোনো মেকি আধুনিকতা নেই। এই দ্যাখার মধ্যে আধুনিকতার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দ্যাখা যাচ্ছে।
কবিতাটির নাম : বিবাহ।কয়েকটি লাইন :
' যা বহনযোগ্য তাকেই তোমরা বিবাহ কর ,
রমণীয় বলে সাজিয়ে রাখো ঘরের ভেতর।
যাবতীয় আসবাব , টিভি , রেফ্রিজারেটর ,
তৈজসপত্র --- বস্তুত সবই বহনযোগ্য ,
রমণযোগ বলেই রেখেছ অন্তঃপুরে ;
আর সব স্থবিরতা দিয়ে সাজিয়ে রেখেছ
বিবাহবাসর।'
আমরা কিন্তু ব্রজবুলি থেকে ব্রজকথা-য় পৌঁছে গেছি। এটুকুই জানাবার ছিল।
প্রভাত চৌধুরী
১১৭.
আজও দুর্গাপুরে। আজ ব্রজকুমার সরকার সম্পর্কিত সরকারি তথা বেসরকারি কথাবার্তা। ব্রজ তখন দুর্গাপুরের এ জোনের হর্ষবর্ধন রোডে থাকত। আমার কাদাকুলি/ বাসুদেবপুর যাওয়া পথে দ্যাখা হওয়া সঙ্গীদের মধ্যে এখন একমাত্র ব্রজকুমারই সেই পুরোনো ট্রাডিশন ধরে রেখেছে বা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। গতবারের পুজোর আগেও দ্যাখা হল। একই রকম। কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। কুড়িবছর আগে যেমন প্রাণময় ছিল , এখনো তেমনটাই তাজা এবং গার্ডেনফ্রেস রহে গেছে। এটা খুব জটিল একটি কাজ। ব্রজকুমার তার মনের মধ্যে কোনো ময়লা জমতে দেয়নি। এটাও খুব বড়ো কৃতিত্ব। আরো একটা কথা ব্রজ কখনোই , কোনোদিন নিজের কবিতা সম্পর্কে সবাক হয়নি। লিখে গেছে লেখার নিয়মে।
এখন পড়া যাক ব্রজকুমার সরকারের কিছু কবিতা।
আমার আলোচনার প্রথম কবিতাটির নাম ' কলকাতা থেকে সুতানুটি '। ভুল লিখলাম নাকি ! আগে তো সুতানুটি , পরে কলকাতা । এখানে ইতিহাসকে ব্রজ তার নিজের খেয়ালে পরিচালিত করেছে।
এটা একটি পারফেক্ট রিপোর্টাজ। ব্রজ এবং প্রদীপ , অনুমান করতে পারি প্রদীপ চক্রবর্তী , দুজনে দমদম-টালিগঞ্জ মেট্রোর যাত্রী। এই সফরে সন্ধান পেলাম কয়েকটি চিহ্ন । চিহ্নগুলি দ্যাখা যাক :
১॥ মঞ্জুষদার উদাস পাখিটা এইমাত্র উড়ে গেল।
এই মঞ্জুষদা : মঞ্জুষ দাশগুপ্ত।
২॥ কুরুক্ষেত্রের শরজালে
এই কুরুক্ষেত্র প্রদীপ চক্রবর্তী-র সৃষ্টিক্ষেত্র বা পত্রিকা।
৩॥ বিদ্ধ হচ্ছে দুটি ভিন্নমুখ।
এই ভিন্নমুখ ব্রজ-র নিজস্ব পত্রিকা।
৪॥ দুহাত উপরে তোলে শুভরাত্রি গায় আমাদের প্রভাতদা।
এই প্রভাতদা যে প্রভাত চৌধুরী এটা বলার জন্য ভৌগোলিক অভিধান খুলতে হবে না।
এই মেট্রো-যাত্রাটি কবিতার নতুন সংযোজন।কিন্তু কলকাতা থেকে সুতানুটি এই বাক্যচয়নটি ব্রজকুমারের আর্কাইভেই থাকুক। যেমন আমার
' কৃষিকাজ থেকে পশুপালন ' নামের গল্পটি।
ব্রজকুমারের দুটি ' যাপনপ্রণালী '- র সন্ধান আমার জানা আছে। তা আপনাদের জানানো যেতে পারে।
১॥ সারা বিছানায় প্রবালের আলপনা , মাছরমণীর প্রণয়চিহ্ন।
২॥ শীতের ডানায় ধূসর আয়না , ঘোরলাগা সাপ।
কুসুমকলির বিকেল।
ব্রজকুমারের যাপনপ্রণালীতে জলখননের কার্যক্রম দ্যাখা যাচ্ছে বা আমি দেখতে পাচ্ছি।
এবার ব্রজ -র বিনির্মাণ -এর প্রথম স্তবক :
' যে স্পর্শবিন্দু থেকে শুরু হয় বৃত্তের পরিভ্রমণ
তাকে আমি স্থাপনকেন্দ্র বলি।
নাভিজন্ম বলে কেউ কেউ।'
এই বলা এবং দ্যাখার মধ্যে কোনো মেকি আধুনিকতা নেই। এই দ্যাখার মধ্যে আধুনিকতার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দ্যাখা যাচ্ছে।
কবিতাটির নাম : বিবাহ।কয়েকটি লাইন :
' যা বহনযোগ্য তাকেই তোমরা বিবাহ কর ,
রমণীয় বলে সাজিয়ে রাখো ঘরের ভেতর।
যাবতীয় আসবাব , টিভি , রেফ্রিজারেটর ,
তৈজসপত্র --- বস্তুত সবই বহনযোগ্য ,
রমণযোগ বলেই রেখেছ অন্তঃপুরে ;
আর সব স্থবিরতা দিয়ে সাজিয়ে রেখেছ
বিবাহবাসর।'
আমরা কিন্তু ব্রজবুলি থেকে ব্রজকথা-য় পৌঁছে গেছি। এটুকুই জানাবার ছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন