সৌমিত্র রায় -এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১১৯.
আজ আমার সমরমাস্টারের কথা।
সমরমাস্টার = সমরেন্দ্রনাথ রায়।
শান্তিময় মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমরেন্দ্রকে নাথহীন করেছিল নাসের হোসেন।
চণ্ডী মণ্ডলের চরণদুটিকে লুপ্ত করেছিলাল আমি।
আর বিষ্ণু দে-র পদযুগলকে কে ছেঁটে দিয়েছিলেন তা আমার জানা নেই।
জানি আমার কিরণ-কে সহস্তে ঢেকে দিয়েছিলাল আমি ।
এই মধ্য-নামের বিলুপ্তি নিয়ে একটা বড়ো গদ্য লিখতে হবে , তবে সেটা এখন নয়। এখন সমরমাস্টার -এর কথা। সেই কথা শুরু করবো কীভাবে , আর শেষই বা করব কোথায় !
সমরেন্দ্র রায় -এর ঠিকানা দিয়ে শুরু করছি লেখাটা।
৬৪ ইলা ভবন , ১৪৭ স্বর্ণময়ী রোড , বহরমপুর।
ঠিকানা দেখে ঘরের বিচার করতে যাবেন না। কানা ছেলের নাম যখন পদ্মলোচন হয় , তখন সমরমাস্টারের ঠিকানায় স্বর্ণরেণু-র সন্ধান পাওয়া যাবে , এটা ধরে নিতেই পারি। সেসব উড়িয়ে দিলাম। এই লেখাটি একটু অন্যরকমভাবে লিখব। আমার যতদূর মনে আছে ' সাক্ষাৎকার '- এর কবিতাগুলি প্রথম যে -কজন গ্রহণ করেছিল তার মধ্যে অন্যতম একজন সাগরি , সমরমাস্টারের মেয়ে। শুধু গ্রহণ নয় প্রধানতম প্রচারও ছিল। কীভাবে !
সমরেন্দ্র রায় আমাদের অনেকের কাছে ' সমরমাস্টার ' , তার কারণ সমরমাস্টার সংসার চালায় মাস্টারি করে। না , কোনো স্কুলে নয় । সমরমাস্টারের বাইরের ঘরটাই টোল। একদল যায় তো নতুন একদল আসে। বিরাম নেই।
সাগরি-র তখন স্কুলের শেষ পর্ব। সাগরিও সমরমাস্টারের ছাত্রী। ও নিজ উদ্যোগে 'সাক্ষাৎকার ' -এর মহত্ব প্রচার শুরু করে। সম্ভবত রাজনের সঙ্গেও সাক্ষাৎকার -এর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল সাগরি।
অনেকক্ষণ ধরে নিজের কথাই বলে গেলাম। এবার সমরমাস্টারের কথায় প্রবেশ করা যাক।
কবিতাপাক্ষিক ৬৩ সংখ্যায় প্রথম আত্মপ্রকাশ সমরেন্দ্রনাথ রায়ের।ওই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল প্রভাত চৌধুরী ২০ টি সাক্ষাৎকার। এই ঘটনাটির সঙ্গেও সমরমাস্টার যুক্ত হয়ে ছিল।
'সংরক্ষণ ' -এর দুটি বাক্যাংশ :
১॥ নামগোত্র নিয়ে আজকাল কেউ নাক গলায় না।
২॥ গলি গলি বিক্রি করি উৎসব মুখর করমর্দন।
মাত্র এই দুটি মৌলিক লাইন সৃষ্টি করাই একজন কবির কাজ।
এরপর নাথহীন করা হয়েছিল । কপা ৭২ - এ সময়সূচি । এখানে সমরেন্দ্র রায় কয়েকটি সময়মাপক যন্ত্র আবিষ্কার করেছিল। সেগুলি হল :
মোরগের কণ্ঠনালি ,চৌকিদার ,জেগে থাকা বাতি , সূর্যরশ্মি আর দুটি কাঠি , ইত্যাদি ইত্যাদি ।
কপা ৮২ -তে ছিল ১০ টি টুকরো খবর। খবরগুলি দ্যাখা যাক / শোনা যাক।
১॥ শিশুদের করমণ্ডলে এখন আর ফুলরেখা নেই।
২॥ বাতাসের দেশে আমরা নগ্ন ,
৩॥ বিষুবরেখা অতিক্রান্ত হতেই কালো তাওয়াটা স্থির।
এত পর্যন্ত আসার পর আমার কাছে দুটি অফশন।প্রথমটি সমরমাস্টার প্রভাত চৌধুরী এবং বহরমপুর বিষয়ক অরূপকথাগুলি। দ্বিতীয় অফশন : চোখ : অন্তর্জাল , সমরেন্দ্র রায় বিরচিত কাব্যগ্রন্থটি।
প্রথম অফশনটি এখন লোকমুখে শোনা যায়। কান পেতে শুনে নিন।
বইটি 4 ফর্মার।ক্রাউন সাইজের।
উৎসর্গ : কবিতাপাক্ষিক পরিবার ।
নাসের হোসেন শুরুর কথা লিখেছিল। আমি যাচ্ছি কবিতায়। তুলে দিচ্ছি কবিতার পঙ্ ক্তি।
১॥ যারা পালন করে পদতল , ধুলোপথ নিজস্ব নিয়ম।
২॥আমাদের কনটিনিউএশন ধীরে ধীরে পুতুলনাচের জাদুকর বনে যায়
৩॥আমাদের চোখ সবসময়ই খোলা থাকে।
৪॥ চোখের অন্তর থাকে না , যেটা থাকে--- /অবকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
৫॥ আমাদের অক্ষিকোটরে যে নদীটি বয়ে চলে তার ঘোলাটি জল ক্রমান্বয়ে পরিণত কুয়াশাশরীর। ঘ
এগুলি পড়তে থাকুন।
সমরমাস্টার মানেই ' সমিধ ' । একটি স্বাধীন পত্রিকা ।আর জ্যৈষ্ঠসংক্রান্তি মানেই সমিধ-এর জন্মদিন সংখ্যা ৷ সম্ভবত রাজনে আমার থেকে ভাগ্যবান কোনো কবি আর একজনও নেই।
প্রভাত চৌধুরী
১১৯.
আজ আমার সমরমাস্টারের কথা।
সমরমাস্টার = সমরেন্দ্রনাথ রায়।
শান্তিময় মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমরেন্দ্রকে নাথহীন করেছিল নাসের হোসেন।
চণ্ডী মণ্ডলের চরণদুটিকে লুপ্ত করেছিলাল আমি।
আর বিষ্ণু দে-র পদযুগলকে কে ছেঁটে দিয়েছিলেন তা আমার জানা নেই।
জানি আমার কিরণ-কে সহস্তে ঢেকে দিয়েছিলাল আমি ।
এই মধ্য-নামের বিলুপ্তি নিয়ে একটা বড়ো গদ্য লিখতে হবে , তবে সেটা এখন নয়। এখন সমরমাস্টার -এর কথা। সেই কথা শুরু করবো কীভাবে , আর শেষই বা করব কোথায় !
সমরেন্দ্র রায় -এর ঠিকানা দিয়ে শুরু করছি লেখাটা।
৬৪ ইলা ভবন , ১৪৭ স্বর্ণময়ী রোড , বহরমপুর।
ঠিকানা দেখে ঘরের বিচার করতে যাবেন না। কানা ছেলের নাম যখন পদ্মলোচন হয় , তখন সমরমাস্টারের ঠিকানায় স্বর্ণরেণু-র সন্ধান পাওয়া যাবে , এটা ধরে নিতেই পারি। সেসব উড়িয়ে দিলাম। এই লেখাটি একটু অন্যরকমভাবে লিখব। আমার যতদূর মনে আছে ' সাক্ষাৎকার '- এর কবিতাগুলি প্রথম যে -কজন গ্রহণ করেছিল তার মধ্যে অন্যতম একজন সাগরি , সমরমাস্টারের মেয়ে। শুধু গ্রহণ নয় প্রধানতম প্রচারও ছিল। কীভাবে !
সমরেন্দ্র রায় আমাদের অনেকের কাছে ' সমরমাস্টার ' , তার কারণ সমরমাস্টার সংসার চালায় মাস্টারি করে। না , কোনো স্কুলে নয় । সমরমাস্টারের বাইরের ঘরটাই টোল। একদল যায় তো নতুন একদল আসে। বিরাম নেই।
সাগরি-র তখন স্কুলের শেষ পর্ব। সাগরিও সমরমাস্টারের ছাত্রী। ও নিজ উদ্যোগে 'সাক্ষাৎকার ' -এর মহত্ব প্রচার শুরু করে। সম্ভবত রাজনের সঙ্গেও সাক্ষাৎকার -এর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল সাগরি।
অনেকক্ষণ ধরে নিজের কথাই বলে গেলাম। এবার সমরমাস্টারের কথায় প্রবেশ করা যাক।
কবিতাপাক্ষিক ৬৩ সংখ্যায় প্রথম আত্মপ্রকাশ সমরেন্দ্রনাথ রায়ের।ওই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল প্রভাত চৌধুরী ২০ টি সাক্ষাৎকার। এই ঘটনাটির সঙ্গেও সমরমাস্টার যুক্ত হয়ে ছিল।
'সংরক্ষণ ' -এর দুটি বাক্যাংশ :
১॥ নামগোত্র নিয়ে আজকাল কেউ নাক গলায় না।
২॥ গলি গলি বিক্রি করি উৎসব মুখর করমর্দন।
মাত্র এই দুটি মৌলিক লাইন সৃষ্টি করাই একজন কবির কাজ।
এরপর নাথহীন করা হয়েছিল । কপা ৭২ - এ সময়সূচি । এখানে সমরেন্দ্র রায় কয়েকটি সময়মাপক যন্ত্র আবিষ্কার করেছিল। সেগুলি হল :
মোরগের কণ্ঠনালি ,চৌকিদার ,জেগে থাকা বাতি , সূর্যরশ্মি আর দুটি কাঠি , ইত্যাদি ইত্যাদি ।
কপা ৮২ -তে ছিল ১০ টি টুকরো খবর। খবরগুলি দ্যাখা যাক / শোনা যাক।
১॥ শিশুদের করমণ্ডলে এখন আর ফুলরেখা নেই।
২॥ বাতাসের দেশে আমরা নগ্ন ,
৩॥ বিষুবরেখা অতিক্রান্ত হতেই কালো তাওয়াটা স্থির।
এত পর্যন্ত আসার পর আমার কাছে দুটি অফশন।প্রথমটি সমরমাস্টার প্রভাত চৌধুরী এবং বহরমপুর বিষয়ক অরূপকথাগুলি। দ্বিতীয় অফশন : চোখ : অন্তর্জাল , সমরেন্দ্র রায় বিরচিত কাব্যগ্রন্থটি।
প্রথম অফশনটি এখন লোকমুখে শোনা যায়। কান পেতে শুনে নিন।
বইটি 4 ফর্মার।ক্রাউন সাইজের।
উৎসর্গ : কবিতাপাক্ষিক পরিবার ।
নাসের হোসেন শুরুর কথা লিখেছিল। আমি যাচ্ছি কবিতায়। তুলে দিচ্ছি কবিতার পঙ্ ক্তি।
১॥ যারা পালন করে পদতল , ধুলোপথ নিজস্ব নিয়ম।
২॥আমাদের কনটিনিউএশন ধীরে ধীরে পুতুলনাচের জাদুকর বনে যায়
৩॥আমাদের চোখ সবসময়ই খোলা থাকে।
৪॥ চোখের অন্তর থাকে না , যেটা থাকে--- /অবকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
৫॥ আমাদের অক্ষিকোটরে যে নদীটি বয়ে চলে তার ঘোলাটি জল ক্রমান্বয়ে পরিণত কুয়াশাশরীর। ঘ
এগুলি পড়তে থাকুন।
সমরমাস্টার মানেই ' সমিধ ' । একটি স্বাধীন পত্রিকা ।আর জ্যৈষ্ঠসংক্রান্তি মানেই সমিধ-এর জন্মদিন সংখ্যা ৷ সম্ভবত রাজনে আমার থেকে ভাগ্যবান কোনো কবি আর একজনও নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন