রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১০৪ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী

১০৪.
আমাদের যা লক্ষ্য ছিল , সেগুলিকেই তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এই প্রসঙ্গে একটা কথা খুবই বিনয়ের সঙ্গে লিখে রাখতে চাইছি , আমি সেসময় যেসব অঞ্চলে যাতায়াত করতাম সেই সব অঞ্চলের অনেকেই আমার মতামতকে যথাযথ মর্যাদা দিতেন।এবং বহুরৈখিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে যাবতীয়কে বিশ্লেষণ করতেন। সর্বোপরি তাঁদের কবিতায় তার চিহ্নগুলি ধরা পড়েছিল। এই যাত্রাপথেই পেয়েছিলাম দশঘরা নামক অঞ্চলকে। এর কৃতিত্ব গদাধর দাস -এর যেমন, আফজল আলি-র ও কোনো অংশে কম নয়।
আর সেই পথেই দ্যাখা হয়েছিল  জুলফিকর এ খলিফা এবং সেখ আজেহার -এর।
এই দ্যাখা হওয়াটাকে সেলিব্রেট করতে চাইছি , এখন , এতদিন পরে।
লেখা বা রচনা কখনোই মুছে যায় না।  বহু প্রস্তরফলক এখনো টিকে আছে। সেই চিহ্নগুলি থেকে আমরা জানতে পেরেছি সেই সময়কে।
এখন জুলফিকর-এর কবিতা থেকে দেখুন কী সম্পদ উঠে আসে !
১॥ ভোর বিষয়ক বারান্দায় যে মুখচোরা আবছা আয়না মেলা থাকে তাতে / খুব সহজেই ধরা পড়ে অন্তর্বাস পরিহিতা ও পোষা বেড়াল সম্পর্কের ভালোবাসা গন্ধের / স্মৃতিচিত্র
২॥ পিঠসংক্রান্ত সৌন্দর্যশিল্পে কোনো আবরণ থাকে না যা দেখে / অবুঝ শস্যখেত লাগাম দেবে।
৩॥ রাতে যে সমুদ্র দেখা/ যায় সবকিছু কালো আর ধূসর কিন্তু দিগন্তে ভোরের আলো লেগে থাকে স্যাঁতসেঁতে বারান্দায়।
৪॥ ভ্যারাইটি স্টোর্সে যে নারীহৃদয় ঝুলে থাকে প্রতিনিয়ত সে জানে/ আন্তর্জাতিক নারীদিবসের মর্মবেদনা
৫॥ ইমারতশৈলীর গোড়াতে যে রন্ধনশিল্পের শিলান্যাস রয়েছে তাতে / আগ্রহী কিছু পাখিজন্ম বাবুইশিল্পে তৎপর হয়ে ওঠে।
৬॥ যাযাবর শব্দটার মধ্যে একটা অ্যাডভেঞ্চার গন্ধ মিশে থাকে/ ঠিক খরস্রোতা নদীটির মতো স্বচ্ছ।জুলফিকার এ খলিফা-র এই রচনাশেলীর সঙ্গে আধুনিক কালখণ্ডের কবিতার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই কবিতা কখনোই হারিয়ে যেতে পারে না। যাঁরা পরবর্তীকালে কবিতা নিয়ে সৎভাবে কাজ করবেন তাঁরা ঠিক খুঁজে বের করবেন জুলফিকারের কবিতার নিজস্বতা।
এখন সেখ আজেহার -এর কবিতায় আসা যাক।
১॥  বাজারের /কোনো ছাপাখানা থেকেই কৌটো নাড়ার কোনো শব্দ/ তখনো ছাপা হয়নি।
২॥ খালি গেলাস উলটে ধূপের গন্ধকে অনায়াসেই বলতে পারে গুডবাই ...
৩॥ কিছু গন্ধের ভাষা কিছু মানুষের কাছে চিরকালই দুর্বোধ্য তবুও কেউ না কেউ গন্ধসুখে বেঁচে থাকে গান গায় নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে ও নির্জন ঝাউবনের কাছে ছুটে আসে বছরে দু একবার।
৪ʼ॥ প্রথম বৃষ্টি ভেজা মাটি গন্ধের সঙ্গে তোমার শরীর গন্ধ মিশিয়ে আমিই প্রথম রামধুন গেয়েছিলাম কোনো এক ধর্মনিরপেক্ষ ঘণ্টার নীচে
৫॥  রাত বাড়তেই মায়াবী মই বেয়ে উঠে এল বেশকিছু নিষিদ্ধ চারপাশ
৬॥ পেন্ডুলামের সঙ্গে অনায়াসেই রাতজাগা যেতে পারে
সেখ আজেহার -এর এসব কবিতা আমার এখনকার নবীন কবিবন্ধুরা পড়ার সুযোগ পেল না , এজন্য আমি নিজেকেই দোষী ঘোষণা করলাম। এবং প্রতিজ্ঞা করলাম এইসব কবিতা আবার নতুন করে সংকলনভুক্ত করে নতুন পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য। তাদের জানা দরকার এইসব কবিরা বাংলাকবিতাকে কোন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল।কীভাবে বাংলাকবিতাকে আপডেট করেছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...