পূরবী~২৭
অভিজিৎ চৌধুরী
তীর্থ কখনই খুব কমই ছেলের লেখাপড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।সবটাই দেখেছে দেবলীনা।এক অদ্ভুত আড়ালে সেবা করার প্রবণতা ছেলের মধ্য দেখে ভাল লেগেছে।আর এই প্রজন্মের হলেও বাংলা সাহিত্য নিয়ে বিশেষ করে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে এক আবেগ রয়েছে।মাঝেমাঝে সে মাকে অনুযোগ করে বাবা এখন পড়ার চেয়ে লেখে বেশী।।
সত্যি হয়তো তাই।কিছু লেখা তীর্থ পড়েছে একেবারে কৈশোরে। সতীনাথ ভাদুড়ির জাগরী ও ঢোঁড়াই চরিত মানস তখন পড়া।আবার পড়া উচিৎ। বাধা মনের।ফাঁক পেলেই এখন পূরবী।
রথীন্দ্রনাথ পিতৃদেবকে আগলে রাখতেন।রথীর ওপর রাগও করতেন রবীন্দ্রনাথ। তবে প্রকাশ করতেন না।কারণ অনেকটাই ব্রাহ্ম সম্ভ্রমবোধ।ভেঙে দিয়েছিলেন রথী।তাসের আড্ডায় বসতেন নিয়মিত।হইহল্লা কানে এলে বিরক্ত হতেন রবীন্দ্রনাথ।
সেটা কিছুটা বাবার ইচ্ছে,স্বপ্ন সফল করার বোঝা বহনের কারণেই।
রবীন্দ্রনাথ বললেন, রথী এতো ইমারত কেন!
বাবামশাইয়ের কণ্ঠস্বরের উল্টো ছিল রথীন্দ্রনাথের গলা।হলঘরে বক্তৃতা দিলে গমগম করত।
নতুন বউঠান বলতেন,তোমার গলা বড্ডো কর্কশ।সেই থেকে মিহি করার সাধনা করলেন।মিহি হল এতোটাই গলার স্বরে পুরুষ নারীর সম- মিশ্রণ থাকত কি!
পদ্মা পার করেছেন এক সময়।সহন করেছেন যাবতীয় লাঞ্ছনা। তাঁর বিরুদ্ধে কোন নিন্দাবাক্যের একটিরও জবাব দেননি।বরং তাঁর নিন্দুকের সৃজনের বাহবা দিতে অযখন মনে করেছেন দেওয়া দরকার- মুক্তকণ্ঠে করেছেন।
এই জীবনই মহাজীবন। যে জীবন হাতে কলমে দেখায় অপার ক্ষমার পথ।
কন্টক ক্ষুদ্র হলেও ব্যথা তো পেয়েছি।একান্তে বলতেন তিনি।
সেখানে রবীন্দ্রনাথ গান্ধী মহারাজেরও গুরু।তাই তিনি গুরুদেব।
এটুকু লেখার পর বাইরে ভোরের আলো ফুটল।তীর্থ দেখল আরেকজন তীর্থ এখনও বিছানায় শেষ রাতভোরের সুষুপ্তি উপভোগ করছে।সেই তীর্থের বিছানার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম আমি।বললাম,আবার অর্থহীন কাজের বেলা শুরু হল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন