বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ১০৮ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী

১০৮.
আমার বয়স বাড়ছে। সকলেরই বাড়ে। আমি ভাবতাম আমার কোনো দিন বয়স বাড়বে না। অন্য সকলে বৃদ্ধ হয়ে যাবেন , এমনকী ভগবানও বৃদ্ধ হয়ে যাবেন ; আমি কোনোদিন বৃদ্ধ হব না। আমার সাদাদাড়ি আর কালোচুল যতদিন বজায় থাকবে ততদিন আমার বৃদ্ধ হবার কোনো গল্প নেই।
আমার এতদিনকার ধারণা গতকাল পালটে গেল।এই লেখায় অনেকবার বেলেতোড়ের কথা লিখেছি। বেলেতোড়ের সকলের কথা-ই লিখেছি। আর একবারের জন্যও স্বরূপ চক্রবর্তীর নামটাও মনে এল না । কাজেই আমিও যে অবশেষে বৃদ্ধ হলাম , এটা স্বীকার করতেই হল।
আর একটা কথা খুবই বিনয়ের সঙ্গে , খুবই বেদনার সঙ্গে লিখতে বাধ্য হচ্ছি , আমার ধারাবাহিকটি যাঁরা পড়ছেন ,তাঁদের মধ্যে কি একজনও বেলিয়াতোড়বাসী নেই , যিনি বলতে পারতেন আমি স্বরূপ চক্রবর্তী- র কোনো উল্লেখ করিনি এই রচনায়। আর যদি এই ধারাবাহিকটি কেউ না পড়েন , তাহলে আমাকে ভাবতে হবে এই লেখাটি চালিয়ে যাব , না এখানেই থেমে যাব।
আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বরূপের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। রাজকল্যাণ চেল - এর কাছেও মার্জনা চাইছি।

এখন কবিতাপাক্ষিক ২৬৭ সংখ্যার মলাট থেকে  একটি বাক্য আপনাদের পড়াতে চাইছি। সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৩ ডিসেম্বর , ২০০৩ ।ওখানে ১৮ পয়েন্টে ছাপা হয়েছিল :
বেলিয়াতোড়ের কলেজছাত্র তরুণতম কবি স্বরূপ চক্রবর্তী লিখে ফেলল ২৫০ লাইনের একটি কবিতা : একটি ককটেল স্বপ্ন।
' এভাবে নয় বিপাশা একটু ঘুরে ,সিগারেট নেবেন , ডগ মানে কুকুর দেখলে/ভয় পান , ইয়েস , স্বপ্পের প্রথম দিকটা ছিল এরকম '
স্বরূপ নিজেই শুরু করার কথা লিখেছিল লেখার শুরুতেই। এটা মনে রাখতে হবে।
এটাকে ১ নম্বর মনে রাখা।
' রং নাম্বারের দ্বিতীয় সংখ্যায় আমন্ত্রিত গদ্য লিখেছিলেন/ প্রভাত চৌধুরী তরুণ কবিরা এতে উপকৃত/ ধন্যবাদ - ধন্যবাদ প্রভাত চৌধুরী আশা করি ভালো আছেন '
আমাকে ডবল ধন্যবাদ জানিয়ে ছিল স্বরূপ।
এটি ২ নম্বর মনে রাখা।
' এই জায়গাটি একটি কালো অংশ...
এই জায়গাটি একটি কালো অংশ...
এই জায়গাটি একটি কালো অংশ...
এই জায়গাটি একটি কালো অংশ...
চোখ বন্ধ করে এই কালো অংশটির দিকে তাকান কবিতা অনুভবের জন্য '
এটি হল তৃতীয় মনে রাখা।
' স্বপ্ন- স্বপ্ন- স্বপ্ন নিয়ে আর কিছু বলব না, পাউরুটি খেতে ইচ্ছে করছে/ এখন খুব ইচ্ছে করছে মায়ের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে /খুব ইচ্ছে করছে , আনন্দ তোর সাথে একটু কথা বলতে পারব/ তিমির তুই জাস্ট পাঁচমিনিট আমাকে দিবি , ব্যাপারটা খুলে বলাই ভালো/অফসেটের পাশে সেদিন যে পুকুরটা দেখেছিলাম '
এটি চতুর্থ মনে রাখা।
এবার পঞ্চম  মনে রাখা তথা কবিতার শেষটা পড়ে দেখুন :
' পূর্বেই বলিয়াছি সোজা পাঁচ মিনিটের মাথায় একটা ড্রইংস্টল / ড্রইংস্টলের ঠিক সামনে পাবলিক টয়লেট আর সেখানেই আমার / একটা বায়োডাটা ঝুলছে উৎসাহী পাঠক কিংবা পাগল কিংবা/ অদ্ভুত স্বপ্ন  দেখতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা পড়ে নেবেন । '
স্বরূপ চক্রবর্তীর কবিতা থেকে যে পাঁচটি ভালোলাগা -কে নির্বাচন করলাম, সেগুলিকে মান্যতা দিতে হবে।
আর সেটা দিতে পারলেই আমরা বাংলাকবিতার পাঠকেরা উপকৃত হব। আর যার শুরুটা এরকম বিস্ফোরক , তাকে ভুলে যাওয়ার পাপটা কি কিছুটা হলেও কমলো!
আর একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে স্বরূপ যুক্ত ছিল সেটা জানিয়ে রাখতে চাই।
২০০৪ -এর ২৪  -২৫ জুলাই আমাদের ' মাদল ' -এ  লেখা হয়েছিল একটি সমবায়ী কবিতা । অংশগ্রহণ করেছিলেন মোট ১৭ জন কবি । লিখেছিল মোট ১০০ টি কবিতা । চারটি অধিবেশন ছিল এই লেখাটির ।
এই ১৭ জন কবির মধ্যে স্বরূপের ভূমিকার কথা উল্লেখযোগ্য। সম্ভবত সব থেকে তরুণ ছিল স্বরূপ এবং তিমিরকান্তি।
স্বরূপের পরবর্তী লেখালেখির কথা অন্য কোনো দিন।
আগামীকাল যেতে হবে কীর্ণাহার । ভাবছেন এই লকডাউনে যাবো কীভাবে। কীর্ণাহার অর্থে কীর্ণাহারের টিম কবিতাপাক্ষিকের কবিদের কবিতায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...