অণুগল্প
অবিচার || দীপক মজুমদার
সুজন মজুমদার । জলপাইগুড়ি জেলার উত্তরডাঙ্গাপাড়া গ্রামের এক হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে।বাবা ভাগচাষী। ওর একটাই স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা করে একদিন শিক্ষক হবে সে। 2000-এ HS পাশ করতে করতে অভাবের সংসারে একমাত্র রোজগারে বাবা যখন প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায় তখন ওর মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।তবুও অদম্য জেদ নিয়ে সে পড়াশুনা চালিয়ে যায় । খুব ভাল মার্কস নিয়ে সে একে একে BA অনার্স , MA এবং শেষে BEd ট্রেনিংও কমপ্লিট করে।কিন্তু নিজের পড়াশুনার জন্য শেষ আশ্রয়টুকু বিক্রি করে দিতে হয়।পড়াশুনার পাঠ শেষ করার পর শুরু হয় SSC -র প্রস্তুতি। তাও এর ওর বাড়ীতে থেকে ।তখন ওর পকেটে একটা কানাকড়িও ছিলনা । ছিলনা মাথাগোঁজার জায়গা বা দুবেলা খাবার । বন্ধুদের সামান্য সাহায্য ছিল ওর ভরসা । ভেবেছিল চাকরী পেলে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ওর স্বপ্ন অধরা থেকে গেল । চাকরীতো পেলই না বরং ভাগ্যে জুটল কঠিন নির্মম বাস্তব। 2011-এ SSC-TET পাশ করে কম্বাইনড্ মেরিট লিষ্টে পিজি ক্যাটেগুরিতে ভাল রেন্ক করা সত্ত্বেও ওর চাকরী হলনা।অথচ ওর পরে রেন্ক করা অনেকেরই চাকরী হয়ে গেল । বঞ্চিত হল সুজন ।ফলে সে মনের দিক থেকে আরও ভেঙ্গে পড়ল ।এভাবেই অতিরিক্ত দূঃশ্চিন্তায় কিছুদিন পর যথারীতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। দিনের পর দিন পাগলের মত অনাহারে অসহায় ভাবে কখনো স্কুলের বারান্দায় কখনো বা খোলা আকাশের নীচে সে রাত কাটাতে থাকে। ও যেন আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রায় বিড়বিড় করে কিছু বলে।ওর প্রতি যে অবিচার হয়েছে ঈশ্বরের কাছে হয়ত বা তারই বিচার চায় ।রাষ্ট্র ওর সাথে একরকমের প্রতারণা করল বলা চলে। রাষ্ট্রের মদতে চাকরী দেওয়ার নামে যারা চাকরী বিক্রি করে তাদের কাছে ওর মেধা হেরে গেল। আজ ওর থেকে কম যোগ্যরা মেধাতালিকা কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষকতা করছে ।এটি হল আজকের দিনে শিক্ষার মূল্যায়ণের নমুনা! হতভাগা শিক্ষা ব্যবস্থা! একটা ছেলে উচ্চশিক্ষিত হতে গিয়ে সব হারাল।বাবা-মা-ভিটে-বাটি-বাঁচার স্বপ্ন .....! একজন পরাজিত সৈনিকের মত সে আজ মৃত্যুর সম্মুখে দাঁড়িয়ে ।
অবিচার || দীপক মজুমদার
সুজন মজুমদার । জলপাইগুড়ি জেলার উত্তরডাঙ্গাপাড়া গ্রামের এক হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে।বাবা ভাগচাষী। ওর একটাই স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা করে একদিন শিক্ষক হবে সে। 2000-এ HS পাশ করতে করতে অভাবের সংসারে একমাত্র রোজগারে বাবা যখন প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায় তখন ওর মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।তবুও অদম্য জেদ নিয়ে সে পড়াশুনা চালিয়ে যায় । খুব ভাল মার্কস নিয়ে সে একে একে BA অনার্স , MA এবং শেষে BEd ট্রেনিংও কমপ্লিট করে।কিন্তু নিজের পড়াশুনার জন্য শেষ আশ্রয়টুকু বিক্রি করে দিতে হয়।পড়াশুনার পাঠ শেষ করার পর শুরু হয় SSC -র প্রস্তুতি। তাও এর ওর বাড়ীতে থেকে ।তখন ওর পকেটে একটা কানাকড়িও ছিলনা । ছিলনা মাথাগোঁজার জায়গা বা দুবেলা খাবার । বন্ধুদের সামান্য সাহায্য ছিল ওর ভরসা । ভেবেছিল চাকরী পেলে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ওর স্বপ্ন অধরা থেকে গেল । চাকরীতো পেলই না বরং ভাগ্যে জুটল কঠিন নির্মম বাস্তব। 2011-এ SSC-TET পাশ করে কম্বাইনড্ মেরিট লিষ্টে পিজি ক্যাটেগুরিতে ভাল রেন্ক করা সত্ত্বেও ওর চাকরী হলনা।অথচ ওর পরে রেন্ক করা অনেকেরই চাকরী হয়ে গেল । বঞ্চিত হল সুজন ।ফলে সে মনের দিক থেকে আরও ভেঙ্গে পড়ল ।এভাবেই অতিরিক্ত দূঃশ্চিন্তায় কিছুদিন পর যথারীতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। দিনের পর দিন পাগলের মত অনাহারে অসহায় ভাবে কখনো স্কুলের বারান্দায় কখনো বা খোলা আকাশের নীচে সে রাত কাটাতে থাকে। ও যেন আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রায় বিড়বিড় করে কিছু বলে।ওর প্রতি যে অবিচার হয়েছে ঈশ্বরের কাছে হয়ত বা তারই বিচার চায় ।রাষ্ট্র ওর সাথে একরকমের প্রতারণা করল বলা চলে। রাষ্ট্রের মদতে চাকরী দেওয়ার নামে যারা চাকরী বিক্রি করে তাদের কাছে ওর মেধা হেরে গেল। আজ ওর থেকে কম যোগ্যরা মেধাতালিকা কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষকতা করছে ।এটি হল আজকের দিনে শিক্ষার মূল্যায়ণের নমুনা! হতভাগা শিক্ষা ব্যবস্থা! একটা ছেলে উচ্চশিক্ষিত হতে গিয়ে সব হারাল।বাবা-মা-ভিটে-বাটি-বাঁচার স্বপ্ন .....! একজন পরাজিত সৈনিকের মত সে আজ মৃত্যুর সম্মুখে দাঁড়িয়ে ।
সুজন সত্যিই গল্পের একজন ট্র্যাজিক চরিত্র। ও মহাকালের কাছে যে বিচার চেয়েছে তার সুবিচার "ঈশ্বর প্রদান করুন"।
উত্তরমুছুনঅসাধারণ উপস্থাপনা ।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি সুজন আবার সুস্থ জীবনে ফিরে আসুক ।
উত্তরমুছুন