সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
১০৭.
আজ যাচ্ছি বিষ্ণুপুর। না , মন্দির দর্শনে নয়। কবিতার খোঁজে।আরো স্পষ্ট করে বলছি সুশীল হাটুই-এর কবিতার খোঁজে।
বিষ্ণুপুর সম্পর্কে প্রথম কথাটি হল কবিতাপাক্ষিক-এর প্রথম সংখ্যাটি থেকে শেষতম সংখ্যাটি যে গুটিকয় জেলা-স্টলে পাওয়া গিয়েছে এবং যাচ্ছে তার মধ্যে জ্ঞানভাণ্ডার অন্যতম।যাত্রাপথটি হল :
পাতিরাম থেকে বিষ্ণুপুর।এবং জ্ঞানভাণ্ডার ।
আরো একটি খবর আমার পরিচিত জায়গাগুলির মধ্যে বিষ্ণুপুর-ই একমাত্র জায়গা যেখানে কবিতাপাক্ষিকের কোনো বড়ো অনুষ্ঠান হয়নি। এটা থেকে স্পষ্ট যে বিষ্ণুপুর কখনোই কবিতাপাক্ষিকের তথা পোস্টমডার্ন চিন্তাচেতনার কেন্দ্রস্থল ওঠেনি। তাহলে কপা ১ থেকে পাতিরাম থেকে যে বিষ্ণুপুর যেত , তার সব কপিগুলোই যে ফেরত আসতো এমনটা নয়। সংগঠন না থাকলেও কিন্তু পাঠক ছিল। অনেক পরে বেশ কিছু গ্রাহক সংগ্রহ করেছিল সুশীল হাটুই এবং কার্তিক ঢক-এর উদ্যোগে। সেটা অন্য পর্ব।
সুশীল হাটুই স্টেট ব্যাংকে কাজ করত। আমি একবার আমার বোনের বাড়িতে গিয়েছিলাম , বিষ্ণুপরে। ২০০৮ -এ ।তখন সুশীল হাটুই-এর সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ । সেটা ছিল নেহাৎই সৌজন্য সাক্ষাৎ। কেননা
তার চার বছর আগে থেকে সুশীল হাটুই কবিতাপাক্ষিকে লেখালেখি শুরু করে দিয়েছে ।দ্যাখা যাক কেমন ছিল সুশীলের কবিতা :
' বাথরুমে কমোড না বসলে দোয়েল আমাদের বাড়ি আসবে না ।আমি তাই পুরোনো হারমোনিয়াম উড়িয়ে বসিয়ে দিয়েছি সিডাকটিভ পিয়ানো। ' এখন বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। কবিতাপাক্ষিক প্রথম সংখ্যা থেকেই বিষ্ণুপুরে সঠিকভাবে উপস্থিত ছিল।
সুশীলের পরবর্তী কবিতাটির নাম ' শেফালি বিশ্বাস কিংবা টবের বেলফুল '।যার একটি ছোটো বাক্য পড়ে নেওয়া যাক :
মরা - বেড়ালের গন্ধ ডেথ - সার্টিফিকেট নিয়ে এগিয়ে আসে
সুশীল হাটুই -এর এই দুটি কবিতা-ই প্রমাণ করেছিল বিষ্ণুপুরে পোস্টমডার্ন পর্ব শুরু হয়ে গেল। এর থেকে আমি বলতেই পারি বিষ্ণুপুরে পোস্টমডার্ন কবিতার পথিকৃৎ সুশীল হাটুই।
কবিতাপাক্ষিক ৫০০ সংখ্যাটি বাংলাকবিতার বাঁকবদলের অন্যতম প্রধান দলিল। ওই সংখ্যায় সুশীল হাটুই সম্পর্কে লেখা হয়েছিল :
পোস্টমডার্ন কালখণ্ডে যে-কজন কবিগ
বাংলাকবিতাকে এক নতুন ভূখণ্ডে স্থাপন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন--- সুশীল হাটুই তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
প্রচারবিমুখ স্বল্পভাষী এই কবি নিজেকে আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন।
কোনো কবিসভায় তাঁকে দেখা যায় না।অনেকটাই আত্মকেন্দ্রিক।
ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের কর্মী। থাকেন বাঁকুড়ার মন্দিরময় বিষ্ণুপুরে।
আমি এবার কপা ৫০০ সংখ্যা থেকে গুটিকয় দৃষ্টান্ত তুলে ধরলাম :
১॥ ত্রিকোণ প্রেমের গল্পে কোণগুলির কোনো নাম নেই/ তাই আমি ওদের নাম দিয়েছি কৃষ্ণকোণ রাধাকোণ / আর আয়ানকোণ
২॥ এই বৃষ্টিবিন্দুগুলি যদি সত্যি হয় /তাহলে আকাশে মেঘের পালকিটিও সত্যি /আর পালকিটি সত্যি হলে নদীজলের কত্থকনাচও সত্যি
৩॥ হ্যাঙ্গারে ঝোলানো স্বপ্নগুলি প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে / থেকেই ঘরে থাকতে চায় না।
৪॥ একটি সরলরেখা কত আলোকবর্ষ পার হবার পর/ ক্লান্ত হয়ে ওঠে তার হিসাব বৃত্তটি জানে নাকি ত্রিভুজ ?
সুশীল হাটুই সম্পর্কে লেখালেখি শুরু করলাম আমি। এখন থেকে এটা চলতেই থাকবে।
প্রভাত চৌধুরী
১০৭.
আজ যাচ্ছি বিষ্ণুপুর। না , মন্দির দর্শনে নয়। কবিতার খোঁজে।আরো স্পষ্ট করে বলছি সুশীল হাটুই-এর কবিতার খোঁজে।
বিষ্ণুপুর সম্পর্কে প্রথম কথাটি হল কবিতাপাক্ষিক-এর প্রথম সংখ্যাটি থেকে শেষতম সংখ্যাটি যে গুটিকয় জেলা-স্টলে পাওয়া গিয়েছে এবং যাচ্ছে তার মধ্যে জ্ঞানভাণ্ডার অন্যতম।যাত্রাপথটি হল :
পাতিরাম থেকে বিষ্ণুপুর।এবং জ্ঞানভাণ্ডার ।
আরো একটি খবর আমার পরিচিত জায়গাগুলির মধ্যে বিষ্ণুপুর-ই একমাত্র জায়গা যেখানে কবিতাপাক্ষিকের কোনো বড়ো অনুষ্ঠান হয়নি। এটা থেকে স্পষ্ট যে বিষ্ণুপুর কখনোই কবিতাপাক্ষিকের তথা পোস্টমডার্ন চিন্তাচেতনার কেন্দ্রস্থল ওঠেনি। তাহলে কপা ১ থেকে পাতিরাম থেকে যে বিষ্ণুপুর যেত , তার সব কপিগুলোই যে ফেরত আসতো এমনটা নয়। সংগঠন না থাকলেও কিন্তু পাঠক ছিল। অনেক পরে বেশ কিছু গ্রাহক সংগ্রহ করেছিল সুশীল হাটুই এবং কার্তিক ঢক-এর উদ্যোগে। সেটা অন্য পর্ব।
সুশীল হাটুই স্টেট ব্যাংকে কাজ করত। আমি একবার আমার বোনের বাড়িতে গিয়েছিলাম , বিষ্ণুপরে। ২০০৮ -এ ।তখন সুশীল হাটুই-এর সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ । সেটা ছিল নেহাৎই সৌজন্য সাক্ষাৎ। কেননা
তার চার বছর আগে থেকে সুশীল হাটুই কবিতাপাক্ষিকে লেখালেখি শুরু করে দিয়েছে ।দ্যাখা যাক কেমন ছিল সুশীলের কবিতা :
' বাথরুমে কমোড না বসলে দোয়েল আমাদের বাড়ি আসবে না ।আমি তাই পুরোনো হারমোনিয়াম উড়িয়ে বসিয়ে দিয়েছি সিডাকটিভ পিয়ানো। ' এখন বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। কবিতাপাক্ষিক প্রথম সংখ্যা থেকেই বিষ্ণুপুরে সঠিকভাবে উপস্থিত ছিল।
সুশীলের পরবর্তী কবিতাটির নাম ' শেফালি বিশ্বাস কিংবা টবের বেলফুল '।যার একটি ছোটো বাক্য পড়ে নেওয়া যাক :
মরা - বেড়ালের গন্ধ ডেথ - সার্টিফিকেট নিয়ে এগিয়ে আসে
সুশীল হাটুই -এর এই দুটি কবিতা-ই প্রমাণ করেছিল বিষ্ণুপুরে পোস্টমডার্ন পর্ব শুরু হয়ে গেল। এর থেকে আমি বলতেই পারি বিষ্ণুপুরে পোস্টমডার্ন কবিতার পথিকৃৎ সুশীল হাটুই।
কবিতাপাক্ষিক ৫০০ সংখ্যাটি বাংলাকবিতার বাঁকবদলের অন্যতম প্রধান দলিল। ওই সংখ্যায় সুশীল হাটুই সম্পর্কে লেখা হয়েছিল :
পোস্টমডার্ন কালখণ্ডে যে-কজন কবিগ
বাংলাকবিতাকে এক নতুন ভূখণ্ডে স্থাপন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন--- সুশীল হাটুই তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
প্রচারবিমুখ স্বল্পভাষী এই কবি নিজেকে আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন।
কোনো কবিসভায় তাঁকে দেখা যায় না।অনেকটাই আত্মকেন্দ্রিক।
ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের কর্মী। থাকেন বাঁকুড়ার মন্দিরময় বিষ্ণুপুরে।
আমি এবার কপা ৫০০ সংখ্যা থেকে গুটিকয় দৃষ্টান্ত তুলে ধরলাম :
১॥ ত্রিকোণ প্রেমের গল্পে কোণগুলির কোনো নাম নেই/ তাই আমি ওদের নাম দিয়েছি কৃষ্ণকোণ রাধাকোণ / আর আয়ানকোণ
২॥ এই বৃষ্টিবিন্দুগুলি যদি সত্যি হয় /তাহলে আকাশে মেঘের পালকিটিও সত্যি /আর পালকিটি সত্যি হলে নদীজলের কত্থকনাচও সত্যি
৩॥ হ্যাঙ্গারে ঝোলানো স্বপ্নগুলি প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে / থেকেই ঘরে থাকতে চায় না।
৪॥ একটি সরলরেখা কত আলোকবর্ষ পার হবার পর/ ক্লান্ত হয়ে ওঠে তার হিসাব বৃত্তটি জানে নাকি ত্রিভুজ ?
সুশীল হাটুই সম্পর্কে লেখালেখি শুরু করলাম আমি। এখন থেকে এটা চলতেই থাকবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন