পূরবী~ ২৪
অভিজিৎ চৌধুরী
একদিন ভৃত্যের দল চারিদিকে খড়ির গণ্ডি এঁকে দিয়ে চলে যেত।সেই গণ্ডিতে বসেও এক বালক বাইরের উদার পৃথিবীর কল্পনাকরত।হয়তো সেই পৃথিবীর দুর্মর কল্পনাই তাঁর ধর্ম,সাধনা।
তীর্থের আমাদের অনেকেরই তাই।আমরা তো চাই ভালোবাসার খেলাঘরে বসবাস করতে।সেখানে আবার অনেক অভিভাবকত্ব।সংসারের হাজার বাধা।কথা বলায় লেখায় সেন্সার।
দুপুরবেলার জাজিমপাতা ঘরে যে ছবি আঁকার শুরু সে যে শেষবেলায় তাঁকে পটুয়া করে ছাড়বে - কে জানত!
এক প্রভাতে যখন মায়ের মৃত্যুর কথা জানতে পেরেছিলেন,তখনও টের পাননি মৃত্যু কতো ভয়ংকর।কতো প্রদাহ তাঁকে জীবনভর অতিক্রম করতে হবে।
সেদিন ছিল এক কনিষ্ঠা বধূ যিনি বালকের ভার নিয়েছিলেন।চিরকালই তিনি পৃথিবীর ভার তেমন একটা অনুভব করেননি।চব্বিশ বছরে এক মৃত্যুর সঙ্গে পরিচয় হল।সে বড় ভয়ংকর।তারপর থেকে মমত্যু আর জীবন বিচ্ছেদের মালা দীর্ঘ করে চলেছে।
মায়ের মৃত্যু শোকের নতুন অর্থ নির্মাণ করল।স্তাবকেরা আসে যায়।বন্ধু নেই,সখা নেই।উৎসবে আলো জ্বলে কিন্তু হৃদয়ের প্রদোষে অন্ধকার আর অন্ধকার।
তীর্থের ঠাকুরমার মৃত্যুতে বাড়িতে হালুইকরের পাঠ চুকলো।এলো ক্যাটারিং।অনেক কান্নাকাটির মধ্যেও নব্বই উত্তীর্ণা বিধবার মৃত্যু নতুন জীবনের জয়গান গাইল।কিন্তু বাবা যখন মারা গেলেন ব্যস্ত পৃথিবী যেন গ্রাস করল তীর্থকে।কে যেন নেই।পুলিশের টিয়ার গ্যাসে চোখে জল আসা বালকের চির সহায় হারিয়ে গেল চিরতরে।
তবুও কি জীবন থেমে রইল! সে কখনও বিবেকানন্দের মতোন ভেবেছে ভগবানই সত্য।তখন রবীন্দ্রনাথ এসেছেন,মুচকি হেসেছেন।বলেছেন- তাই"
ঠাকুর বললেন,লরেন,রাখালের বিশ্বাস ভাঙলি কেন! তুই বড় অবাধ্য। নরেন রাখালকে বলছেন,তুমি কিন্তু কেশব সেনকে বলেছিলে,পুতুলে তোমার বিশ্বাস নেই।কথা দিয়েছিলে।
কোন ভগবান- নিরাকার না সাকার!
গিরীশ বললেন,মন খারাপ কেন! নরেন আসছে না বলে! ঝগড়া করেছেন।
সে বড় বিশ্বেস নষ্ট করে।আমি বললুম,তুই আর আসিস নাকো"
আবার ডাকতে হবে!
লাজুক মুখে ঠাকুর বললেন,হ্যাঁ- গা গিরীশ, সে আসবে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন