'কনট্রাকচুয়াল'
অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়
কোলাহল মাঝে মাঝেই নির্জনের কাছে পৌঁছে যায়। একরকম উত্যক্ত করে বলা যায়। এ যাবৎ তার জীবনকৃতির সম্মানস্বরূপ সে কি কি সম্মান, সম্বর্ধনা পেয়েছে; আরও কি কি পেতে চলেছে ইত্যাদি....। স্বভাবসিদ্ধভাবেই নির্জন, কোলাহল থেকে একটু দূরেই থাকতে চায়। কিন্তু এ ভাবেই কোলাহল এসে নির্জনকে ধাক্কা মারে। নির্জনের কিশোরকুমারের সেই গানের কথা মনে পড়ে, কি যেন -- ' যা চেয়েছি কেন তা পাই না ; যা পেয়েছি কেন তা চাই না।' এ জন্যই কি নির্জনের বন্ধু -বান্ধব খুব একটা বেশী নেই! অন্যদিকে কোলাহলের বন্ধুত্ব সবার সঙ্গে । এমন কি চোর ছ্যঁচড়, মাতালদের সঙ্গেও।
কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে চায়ের আড্ডা শেষ করে হেঁটে হেঁটেই বাড়ির দিকে রওনা দিল নির্জন । পেছন থেকে তার নাম ধরে অচেনা গলায় কে যেন ডাকছে। দাঁড়িয়ে পড়ল। ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনের দিকে তাকাতেই দ্যাখে, তার দিকে ছুটে আসছে কোলাহল। কছে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল, এ্যই নির্জন, আজকের 'সোনার বাংলা' কাগজটা দেখেছিস ? নির্জন ঈষৎ বিরক্তি নিয়ে বলল, না দেখিনি। কেন? কোলাহল অত্ত্যুৎসাহে বলল, তুই অনেক পিছিয়ে আছিস্ দেখছি। 'আন্তর্জাতিক বিনিময় চক্র' এবার আমাকে সেরা ব্যক্তিত্বের সম্মাননা দিচ্ছে..। নির্জন বলল, বাহ, খুব ভাল। অসন্তুষ্ট কোলাহল বলল, দ্যাখ্ তুই ওই ফেসবুকের মত উত্তর দিবি না। কত বড় ঘটনা, তুই বল! নির্জন মুখে হাসি এনে বলল, নিশ্চয়। তুই আমাদের গর্বিত করলি । কোলাহল উৎসাহিত হয়ে একটা আন্তর্জাতিক হাসি উপহার দিল।
দু-এক দিন পর সেই চায়ের আড্ডাতেই নির্জন ও তার বন্ধুরা শুনতে পেল কোলাহলের সম্মাননার প্রসঙ্গ। একজন আরেকজনকে বলছে, এখন যত ছেলেমেয়ে চাকরিতে ঢুকছে, তার একটা বড় অংশ কনট্রাকচুয়াল। আরেকজন বলল, হ্যাঁ, তো কি হয়েছে ! লোকটি বলল, আমাদের কোলাহলবাবুও 'কনট্রাকচুয়াল'। প্রথমটায় বুঝতে না পেরে সবাই একটু যেন থমকে গেল। তারপর একসঙ্গে হো হো করে হেসে উঠল । একজন হাল্কা গলায় বলল, কি বললি বুঝতে পারলাম না। অন্যজন মুচকি হেসে বলল, সব কথায় কান দিতে নেই ।
অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়
কোলাহল মাঝে মাঝেই নির্জনের কাছে পৌঁছে যায়। একরকম উত্যক্ত করে বলা যায়। এ যাবৎ তার জীবনকৃতির সম্মানস্বরূপ সে কি কি সম্মান, সম্বর্ধনা পেয়েছে; আরও কি কি পেতে চলেছে ইত্যাদি....। স্বভাবসিদ্ধভাবেই নির্জন, কোলাহল থেকে একটু দূরেই থাকতে চায়। কিন্তু এ ভাবেই কোলাহল এসে নির্জনকে ধাক্কা মারে। নির্জনের কিশোরকুমারের সেই গানের কথা মনে পড়ে, কি যেন -- ' যা চেয়েছি কেন তা পাই না ; যা পেয়েছি কেন তা চাই না।' এ জন্যই কি নির্জনের বন্ধু -বান্ধব খুব একটা বেশী নেই! অন্যদিকে কোলাহলের বন্ধুত্ব সবার সঙ্গে । এমন কি চোর ছ্যঁচড়, মাতালদের সঙ্গেও।
কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে চায়ের আড্ডা শেষ করে হেঁটে হেঁটেই বাড়ির দিকে রওনা দিল নির্জন । পেছন থেকে তার নাম ধরে অচেনা গলায় কে যেন ডাকছে। দাঁড়িয়ে পড়ল। ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনের দিকে তাকাতেই দ্যাখে, তার দিকে ছুটে আসছে কোলাহল। কছে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বলল, এ্যই নির্জন, আজকের 'সোনার বাংলা' কাগজটা দেখেছিস ? নির্জন ঈষৎ বিরক্তি নিয়ে বলল, না দেখিনি। কেন? কোলাহল অত্ত্যুৎসাহে বলল, তুই অনেক পিছিয়ে আছিস্ দেখছি। 'আন্তর্জাতিক বিনিময় চক্র' এবার আমাকে সেরা ব্যক্তিত্বের সম্মাননা দিচ্ছে..। নির্জন বলল, বাহ, খুব ভাল। অসন্তুষ্ট কোলাহল বলল, দ্যাখ্ তুই ওই ফেসবুকের মত উত্তর দিবি না। কত বড় ঘটনা, তুই বল! নির্জন মুখে হাসি এনে বলল, নিশ্চয়। তুই আমাদের গর্বিত করলি । কোলাহল উৎসাহিত হয়ে একটা আন্তর্জাতিক হাসি উপহার দিল।
দু-এক দিন পর সেই চায়ের আড্ডাতেই নির্জন ও তার বন্ধুরা শুনতে পেল কোলাহলের সম্মাননার প্রসঙ্গ। একজন আরেকজনকে বলছে, এখন যত ছেলেমেয়ে চাকরিতে ঢুকছে, তার একটা বড় অংশ কনট্রাকচুয়াল। আরেকজন বলল, হ্যাঁ, তো কি হয়েছে ! লোকটি বলল, আমাদের কোলাহলবাবুও 'কনট্রাকচুয়াল'। প্রথমটায় বুঝতে না পেরে সবাই একটু যেন থমকে গেল। তারপর একসঙ্গে হো হো করে হেসে উঠল । একজন হাল্কা গলায় বলল, কি বললি বুঝতে পারলাম না। অন্যজন মুচকি হেসে বলল, সব কথায় কান দিতে নেই ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন