সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
৯৫.
টিম বেলিয়াতোড়ের সেই সময়ের নবীন প্রজন্মের কবিদের কবিতার কথা বলার কথা। ভুলে যাইনি সেকথা। এখন প্রাসঙ্গিক একটি কথা বলে রাখতে চাইছি। সেই প্রাসঙ্গিক কথাটি হল কবিতাপাক্ষিক ১১২ সংখ্যার কথা।
এই প্রথম ' এই প্রজন্মের কবিতা ' মলাটনামে প্রকাশিত হয়েছিল মোট ১১ জন নবীনের কবিতা।ওই সময় প্রতিদিন আমি পাতিরাম -এ যেতাম সন্ধের সময়। সঙ্গে একটি প্রশ্ন নিয়ে যেতাম : এই সংখ্যার বিক্রি ঠিক আছে তো । তাপস আশ্বস্ত করত প্রতিদিন। আমার পরিকল্পনা সার্থক। পত্রিকা বিক্রির জন্য নবীন প্রজন্মের কবিরাই যথেষ্ট। নামী-দামিদের অহেতুক গুরুত্ব দিতে যাবো কেন !
এবার কপা ১১২ সংখ্যার ১১ জনের নাম ঘোষণা করছি :
অংশুমান কর জয়দীপ চক্রবর্তী নয়ন রায় প্রলয় মুখোপাধ্যায় ভূদেব কর মানসকুমার চিনি রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায় সব্যসাচী ভৌমিক সুদীপ বসু সুবীর সরকার এবং স্নেহাশিস সৈয়দ।
আমি ভরসা রেখেছিলাম এদের ওপর।আজকের আলোচ্য কবিদের মধ্যে নয়ন রায় এবং প্রলয় মুখোপাধ্যায়ের নামও ওই ১১ জনের মধ্যে ছিল।বলা বাহুল্য এই দুজনও আমাকে তৃপ্ত করেছিল।
নয়ন রায় - এর কবিতা এর আগে কবিতাপাক্ষিক ৩৯/ ৪৮/ ৯৩ / ১০০ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল কবিতাপাক্ষিক -এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশ অনুষ্ঠানেও নয়ন উপস্থিত ছিল ।
এখন নয়ন রায় - এর কবিতার কাছে যাওয়া যাক।
১॥ তুমি যে ভাবেই হাঁটো পড়ে থাকে পথ
আর পথের ওপর মানুষ !
২॥ আবার নীললিপিগুলিই শুধু কবিতা নয়
৩॥ কথকতার কোনো অনুবাদই আজ মনে নেই
৪॥ অভিমানের পাথরগুলি লিপিগান লিখে রাখে।
৫॥ ছদ্মনামে সমস্ত / পাহাড় এবং বর্ণান্ধ আলো ---
কুহকের মোমবাতি জ্বেলে দেয়।
৬॥ পালছেঁড়া নৌকোগুলি ডেকে আনে সাইবেরিয়ার
পাখি ----
৭॥ লিরিকের দাবি নিয়ে বেঁচে আছে গাছ, গাছ আর
মাংসের পদ্যগুলি ----
নয়ন রায় বিরচিত এই সাতটি উদ্ধৃতির মধ্যে কোনো আলোচক যদি এগুলির মধ্যে কোনো গ্রাম্যতা কিংবা মফস্ সলি গন্ধ বের করতে পারেন , আমি সম্পাদনা ছেড়ে দিয়ে সেই আলোচকের বাড়িতে বাসন মেজে দেবো তিনমাস।
আবার এই কবিতাগুলির মধ্যে গিমিক অনুপস্থিত। নাগরিক কবিদের মধ্যে যার ব্যবহারের কোনো সীমা- পরিসীমা নেই।
এই নয়ন রায় কিন্তু চেনে বীজতলা । জানে বীজ টানা। এবং কৃষিকাজের যাবতীয় কৃৎকৌশল। এসব জানার পরেরও লিখতে পারে :
অভিমানের পাথরগুলি লিপিগান লিখে রাখে।
অথচ রাঢ়ভূমির জনপ্রিয় কবির গ্রাম্যতা নির্ভর মোহগুলিকে সযত্নে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে ।তথা বাংলাকবিতাকে গ্রাম্যতা থেকে মুক্ত রাখতে পেরেছে।
এখন নয়নের কবিতাযাপনের কথা বলছি। নয়ন কবিতার হোলটাইমার। ওর ধ্যানে কবিতা।দানেও কবিতা। ও কবিতা থেকে বিচ্ছিন্ন হবার মন্ত্র জানে না। জানে কবিতায় ডুবে থাকতে , ভেসে থাকতেও ।
নয়ন জয়দেবের মেলার আগে কপা দপ্তরে আসতো। উদ্দেশ্য কিছু বইপত্র নিয়ে যাওয়া।সেইসব ব্যাগে ভর্তি করে সে পৌঁছে যেত জয়দেবের মেলায়। সারারাত কবিতা পড়ত আর বিক্রি করত বইপত্র। এই নজির বাংলাকবিতায় খুঁজে পাবেন না।
আগামীকাল প্রলয়ের কথা।প্রলয় মুখোপাধ্যায়ের কথা ।
প্রভাত চৌধুরী
৯৫.
টিম বেলিয়াতোড়ের সেই সময়ের নবীন প্রজন্মের কবিদের কবিতার কথা বলার কথা। ভুলে যাইনি সেকথা। এখন প্রাসঙ্গিক একটি কথা বলে রাখতে চাইছি। সেই প্রাসঙ্গিক কথাটি হল কবিতাপাক্ষিক ১১২ সংখ্যার কথা।
এই প্রথম ' এই প্রজন্মের কবিতা ' মলাটনামে প্রকাশিত হয়েছিল মোট ১১ জন নবীনের কবিতা।ওই সময় প্রতিদিন আমি পাতিরাম -এ যেতাম সন্ধের সময়। সঙ্গে একটি প্রশ্ন নিয়ে যেতাম : এই সংখ্যার বিক্রি ঠিক আছে তো । তাপস আশ্বস্ত করত প্রতিদিন। আমার পরিকল্পনা সার্থক। পত্রিকা বিক্রির জন্য নবীন প্রজন্মের কবিরাই যথেষ্ট। নামী-দামিদের অহেতুক গুরুত্ব দিতে যাবো কেন !
এবার কপা ১১২ সংখ্যার ১১ জনের নাম ঘোষণা করছি :
অংশুমান কর জয়দীপ চক্রবর্তী নয়ন রায় প্রলয় মুখোপাধ্যায় ভূদেব কর মানসকুমার চিনি রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায় সব্যসাচী ভৌমিক সুদীপ বসু সুবীর সরকার এবং স্নেহাশিস সৈয়দ।
আমি ভরসা রেখেছিলাম এদের ওপর।আজকের আলোচ্য কবিদের মধ্যে নয়ন রায় এবং প্রলয় মুখোপাধ্যায়ের নামও ওই ১১ জনের মধ্যে ছিল।বলা বাহুল্য এই দুজনও আমাকে তৃপ্ত করেছিল।
নয়ন রায় - এর কবিতা এর আগে কবিতাপাক্ষিক ৩৯/ ৪৮/ ৯৩ / ১০০ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল কবিতাপাক্ষিক -এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশ অনুষ্ঠানেও নয়ন উপস্থিত ছিল ।
এখন নয়ন রায় - এর কবিতার কাছে যাওয়া যাক।
১॥ তুমি যে ভাবেই হাঁটো পড়ে থাকে পথ
আর পথের ওপর মানুষ !
২॥ আবার নীললিপিগুলিই শুধু কবিতা নয়
৩॥ কথকতার কোনো অনুবাদই আজ মনে নেই
৪॥ অভিমানের পাথরগুলি লিপিগান লিখে রাখে।
৫॥ ছদ্মনামে সমস্ত / পাহাড় এবং বর্ণান্ধ আলো ---
কুহকের মোমবাতি জ্বেলে দেয়।
৬॥ পালছেঁড়া নৌকোগুলি ডেকে আনে সাইবেরিয়ার
পাখি ----
৭॥ লিরিকের দাবি নিয়ে বেঁচে আছে গাছ, গাছ আর
মাংসের পদ্যগুলি ----
নয়ন রায় বিরচিত এই সাতটি উদ্ধৃতির মধ্যে কোনো আলোচক যদি এগুলির মধ্যে কোনো গ্রাম্যতা কিংবা মফস্ সলি গন্ধ বের করতে পারেন , আমি সম্পাদনা ছেড়ে দিয়ে সেই আলোচকের বাড়িতে বাসন মেজে দেবো তিনমাস।
আবার এই কবিতাগুলির মধ্যে গিমিক অনুপস্থিত। নাগরিক কবিদের মধ্যে যার ব্যবহারের কোনো সীমা- পরিসীমা নেই।
এই নয়ন রায় কিন্তু চেনে বীজতলা । জানে বীজ টানা। এবং কৃষিকাজের যাবতীয় কৃৎকৌশল। এসব জানার পরেরও লিখতে পারে :
অভিমানের পাথরগুলি লিপিগান লিখে রাখে।
অথচ রাঢ়ভূমির জনপ্রিয় কবির গ্রাম্যতা নির্ভর মোহগুলিকে সযত্নে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে ।তথা বাংলাকবিতাকে গ্রাম্যতা থেকে মুক্ত রাখতে পেরেছে।
এখন নয়নের কবিতাযাপনের কথা বলছি। নয়ন কবিতার হোলটাইমার। ওর ধ্যানে কবিতা।দানেও কবিতা। ও কবিতা থেকে বিচ্ছিন্ন হবার মন্ত্র জানে না। জানে কবিতায় ডুবে থাকতে , ভেসে থাকতেও ।
নয়ন জয়দেবের মেলার আগে কপা দপ্তরে আসতো। উদ্দেশ্য কিছু বইপত্র নিয়ে যাওয়া।সেইসব ব্যাগে ভর্তি করে সে পৌঁছে যেত জয়দেবের মেলায়। সারারাত কবিতা পড়ত আর বিক্রি করত বইপত্র। এই নজির বাংলাকবিতায় খুঁজে পাবেন না।
আগামীকাল প্রলয়ের কথা।প্রলয় মুখোপাধ্যায়ের কথা ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন