সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
৮২.
মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ সম্পর্কে হয়ত অনেক আগেই বলতে হত। কিন্তু একটা কথা খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে রাখতে চাই মতি কোনো অর্থেই ' কবিতাপাক্ষিক ' প্রোডাক্ট নয়। মতিউল্লাহ্ কবিতাপাক্ষিকের একজন আমন্ত্রিত কবি বা লেখক নয়। বহু ক্ষেত্র আমাদের পরামর্শদাতা। সর্বোপরি কাটোয়া নামক প্রাচীন জনপদটির সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতার মূল সূত্রধর মুহম্মদ মতিউল্লাহ্।
মতি-র মাধ্যমেই বিশিষ্ট কবি-কথাকার দীপংকর ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ। মতি-র জন্যই কাটোয়ার সংস্কৃতি জগতের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা তুষার পণ্ডিত সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। এমনকী জপমালা ঘোষরায় - এর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম মতি-র সৌজন্যেই।
সবথেকে বড়ো কথা কাটোয়ার যেকোনো অনুষ্ঠানে কবিতাপাক্ষিক তথা প্রভাত চৌধুরী-র একটা স্থায়ী আসন পাতা থাকত।
আরো একটা কথা কাটোয়ার ছোটো-বড়ো- মাঝারি সব কবিই কবিতা কবিতাপাক্ষিক পরম যত্নে সঙ্গে প্রকাশ করে ধন্য হয়েছে।
এমনকী সর্বশেষ সংযোজন শুভজিৎ সেনশর্মাদের লিটল ম্যাগাজিন মেলায় গিয়েছিলাম মতি-র আমন্ত্রণেই।
এবার বলতে হবে ' শতভিষা ' সংকলন সম্পাদনা করেছিল মতি। মতির একটি বিশিষ্ট বই ' মেধাবী বন্ধুত্ব ' ।এইসব নিয়েই আষ্টেপৃষ্ঠে যুক্ত আছি মতির সঙ্গে। সেই 1993 থেকে। আধুনিকতার ধারক-বাহকরা মতি-কে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি। এতটাই অটুট বন্ধন। বরং মুখে পোস্টমডার্নিজমের কথা বলে আর আঁতাত করে আধুনিকদের সঙ্গে , এরকম ছবিই বেশি দেখতে পাই।
মতি-প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পারিপার্শ্বিক বহু কু-কথা বলে ফেললাম। আমাকে মার্জনা করবে মতি।
কপা-র ১ সংখ্যায় মতির কবিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা মতি - নিয়াজুল দুজনে বর্ধমান তিনকোণিয়া বাস স্টান্ড থেকে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল ৩৭ নম্বর কানলা রোডে। শ্যামলবরণ-সঞ্চয়িতার বাড়ি। তার আগে ওদের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না।
মতি-র প্রথম সংখ্যার কবিতাটির নাম : দরজা। আমার অজানা নয় , দরজার মুখের সংখ্যা দুই। একটা ভেতরে ঢোকার। অন্যটা বাইরে যাবার।
দরজা। আমার অজানা নয় , দরজার মুখের সংখ্যা দুই। একটা ভেতরে ঢোকার। অন্যটা বাইরে যাবার।
আমি তো আমার মতো করে আমাকে দেখলাম। আমার দরজা-র সঙ্গে মতির দরজার মিল-অমিল খুঁজতে যাবো কেন ! এক একজনের দরজা -জানলা- আকাশ - সমুদ্র -র সঙ্গে অপর একজনের পার্থক্যের কথা তো সেই কোন ভোরবেলা থেকে বলে আসছি।
এখন দ্যাখা যাক মতি-র দরজাটা ঠিক কেমন !
' একাধিক দরজার মাথায় পালটেছে নামের ফলক '
এই নামের ফলক বা নেমপ্লেটের পরিবর্তন দেখতে পাওয়াটাই আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি ছিল।এবং ঠিক এই কারণেই কাটোয়ায় আমার হাঁটার সঙ্গী থেকে গেছে মতি।
কপা ২০ -তে ' যুবকের প্রতি '। রানঅন বা টানা গদ্যে লেখা। মাঝামাঝি জায়গা থেকে কিছুটা :
' একদিন আমার সমস্ত হৃদয় হইতে আমার অশ্রুবিন্দুর অহংকার হইতে তোমাকে ছুড়িয়া ফেলিয়াছিলাম তোমার হইতে ফিরিয়া রইলাম ছবি আঁকার রং-তুলি কবিতার খাতা। '
আমিও তো এর থেকে একবিন্দু বেশি কিছু চাইনি।
১৯৯৩ থেকে ২০২০। কত বছর ! তার জন্য ক্যালকুলেটরের আবশ্যক নেই। কাগজ-কলমও লাগবে না। এই এতগুলো বছরের জন্য কত লাইন ! এভাবে হয় না। একটা বড়ো লাফ দিলাম।
' ২০১৫ র ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর জীবনমৃত্যুর মধ্যবর্তী এক অস্তিত্বে থাকতে হয়েছিল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে , আই সি ইউ- তে। '
সেই অভিজ্ঞতা হল :
মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ - র হাসপাতাল লেখা কবিতাগুচ্ছ।
তাও নিজের লেখা নয়। কয়েকজন নার্স এগিয়ে নিয়ে গেছেন কবিতাকে।
আমরা ভাগ্যবান : কলকাতা বইমেলা ২০১৬ -তে প্রকাশ করেছিলাম এই ছোটো কবিতার বড়ো বইটি।এই বইটি কাছে রাখার বই। একারণে এখনো কাছেই আছে। এই বইটি থেকে খুব বেশি দূরে যাওয়া যায় না। এটুকুই জানি।
প্রভাত চৌধুরী
৮২.
মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ সম্পর্কে হয়ত অনেক আগেই বলতে হত। কিন্তু একটা কথা খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে রাখতে চাই মতি কোনো অর্থেই ' কবিতাপাক্ষিক ' প্রোডাক্ট নয়। মতিউল্লাহ্ কবিতাপাক্ষিকের একজন আমন্ত্রিত কবি বা লেখক নয়। বহু ক্ষেত্র আমাদের পরামর্শদাতা। সর্বোপরি কাটোয়া নামক প্রাচীন জনপদটির সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতার মূল সূত্রধর মুহম্মদ মতিউল্লাহ্।
মতি-র মাধ্যমেই বিশিষ্ট কবি-কথাকার দীপংকর ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ। মতি-র জন্যই কাটোয়ার সংস্কৃতি জগতের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা তুষার পণ্ডিত সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। এমনকী জপমালা ঘোষরায় - এর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম মতি-র সৌজন্যেই।
সবথেকে বড়ো কথা কাটোয়ার যেকোনো অনুষ্ঠানে কবিতাপাক্ষিক তথা প্রভাত চৌধুরী-র একটা স্থায়ী আসন পাতা থাকত।
আরো একটা কথা কাটোয়ার ছোটো-বড়ো- মাঝারি সব কবিই কবিতা কবিতাপাক্ষিক পরম যত্নে সঙ্গে প্রকাশ করে ধন্য হয়েছে।
এমনকী সর্বশেষ সংযোজন শুভজিৎ সেনশর্মাদের লিটল ম্যাগাজিন মেলায় গিয়েছিলাম মতি-র আমন্ত্রণেই।
এবার বলতে হবে ' শতভিষা ' সংকলন সম্পাদনা করেছিল মতি। মতির একটি বিশিষ্ট বই ' মেধাবী বন্ধুত্ব ' ।এইসব নিয়েই আষ্টেপৃষ্ঠে যুক্ত আছি মতির সঙ্গে। সেই 1993 থেকে। আধুনিকতার ধারক-বাহকরা মতি-কে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি। এতটাই অটুট বন্ধন। বরং মুখে পোস্টমডার্নিজমের কথা বলে আর আঁতাত করে আধুনিকদের সঙ্গে , এরকম ছবিই বেশি দেখতে পাই।
মতি-প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পারিপার্শ্বিক বহু কু-কথা বলে ফেললাম। আমাকে মার্জনা করবে মতি।
কপা-র ১ সংখ্যায় মতির কবিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা মতি - নিয়াজুল দুজনে বর্ধমান তিনকোণিয়া বাস স্টান্ড থেকে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল ৩৭ নম্বর কানলা রোডে। শ্যামলবরণ-সঞ্চয়িতার বাড়ি। তার আগে ওদের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না।
মতি-র প্রথম সংখ্যার কবিতাটির নাম : দরজা। আমার অজানা নয় , দরজার মুখের সংখ্যা দুই। একটা ভেতরে ঢোকার। অন্যটা বাইরে যাবার।
দরজা। আমার অজানা নয় , দরজার মুখের সংখ্যা দুই। একটা ভেতরে ঢোকার। অন্যটা বাইরে যাবার।
আমি তো আমার মতো করে আমাকে দেখলাম। আমার দরজা-র সঙ্গে মতির দরজার মিল-অমিল খুঁজতে যাবো কেন ! এক একজনের দরজা -জানলা- আকাশ - সমুদ্র -র সঙ্গে অপর একজনের পার্থক্যের কথা তো সেই কোন ভোরবেলা থেকে বলে আসছি।
এখন দ্যাখা যাক মতি-র দরজাটা ঠিক কেমন !
' একাধিক দরজার মাথায় পালটেছে নামের ফলক '
এই নামের ফলক বা নেমপ্লেটের পরিবর্তন দেখতে পাওয়াটাই আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি ছিল।এবং ঠিক এই কারণেই কাটোয়ায় আমার হাঁটার সঙ্গী থেকে গেছে মতি।
কপা ২০ -তে ' যুবকের প্রতি '। রানঅন বা টানা গদ্যে লেখা। মাঝামাঝি জায়গা থেকে কিছুটা :
' একদিন আমার সমস্ত হৃদয় হইতে আমার অশ্রুবিন্দুর অহংকার হইতে তোমাকে ছুড়িয়া ফেলিয়াছিলাম তোমার হইতে ফিরিয়া রইলাম ছবি আঁকার রং-তুলি কবিতার খাতা। '
আমিও তো এর থেকে একবিন্দু বেশি কিছু চাইনি।
১৯৯৩ থেকে ২০২০। কত বছর ! তার জন্য ক্যালকুলেটরের আবশ্যক নেই। কাগজ-কলমও লাগবে না। এই এতগুলো বছরের জন্য কত লাইন ! এভাবে হয় না। একটা বড়ো লাফ দিলাম।
' ২০১৫ র ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর জীবনমৃত্যুর মধ্যবর্তী এক অস্তিত্বে থাকতে হয়েছিল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে , আই সি ইউ- তে। '
সেই অভিজ্ঞতা হল :
মুহম্মদ মতিউল্লাহ্ - র হাসপাতাল লেখা কবিতাগুচ্ছ।
তাও নিজের লেখা নয়। কয়েকজন নার্স এগিয়ে নিয়ে গেছেন কবিতাকে।
আমরা ভাগ্যবান : কলকাতা বইমেলা ২০১৬ -তে প্রকাশ করেছিলাম এই ছোটো কবিতার বড়ো বইটি।এই বইটি কাছে রাখার বই। একারণে এখনো কাছেই আছে। এই বইটি থেকে খুব বেশি দূরে যাওয়া যায় না। এটুকুই জানি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন