বর্ষার কবিতা
রুদ্র কিংশুক
১.
মানিকহার
ধরমঠাকুরের নিমগাছ
বজ্রগর্ভ মেঘ
আষাঢ় শেষের সূর্যাস্ত পাথার মাঠে মাঠে
মানিকহারের ফকির
গলায় বহুবর্ণ সোলেমানি পাথর
সূর্য ডুবে গেলে সেও ঢুকে যাবে
প্রাচীন ভারতবর্ষের গুহায়
নিমগাছের তলায় আমাদের দেখা
নক্ষত্র বিনিময় ,
মুরুম-বিছানো রাস্তা চলে গেছে কাজুবাদামি গির্জায়
শ্যাওলাজমা রোদ
জটিল বক্রগতি বটগাছ
প্রাচীন বাইস্কোপ, তার ভেতরে
খেজুর ফলের সুগন্ধ লাটিম হাতে
দাঁড়িয়ে থাকে
মানিকহারের ফকির
রাবেতা রাবেতা বলে
কিছুটা তার বুঝি, কিছুটা ভঙ্গুর ভেবে
ফেলে দিই মাটির দিকে, যেন জীর্ন কাপড়, নাভিফুল
২.
মেদগাছি
মেদগাছি মাঠে অন্ধকার
খড়গেশ্বরী নদীর দিকে আমাদের বাড়ি ফেরা,
সহজপুরে উড়ে যাচ্ছে দলছুট শামুকখোল
নদীর চরে শেয়াল ডেকে উঠবে
তার চোখের আলো আহ্বান নিরপেক্ষ , অস্পষ্ট
কোন কালে কি ছিলাম এখানে,
পাথরে , জলে, শ্যাওলায়
তন্ত্রশাস্ত্রীর ছলনা-চিহ্ন?
বুকের ভেতর থেকে
পাখির গন্ধ ভেসে আসে
মাটির গন্ধ ভেসে আসে
আলোবিচ্ছুরক আমলকী ফলের
পূর্বস্মৃতি ভেসে আসে
মনে হয় এ জীবন সেমিকোলন নয়...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন