শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ৬১ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী



 ৬১.
নবপল্লি , বারাসত থেকে গোটা গোটা অক্ষরে কবিতা লিখে পাঠাতো আবীর সিংহ।  বারাসত নামটি পরিচিত ছিল। নবপল্লি পরিচিত না হলেও পল্লি আমার কাছে সুপরিচিত। পশ্চিমবঙ্গে কমপক্ষে ৬৭ টি নবপল্লি আছে , এটা হিসেব না করেও বলা যেতে পারে। প্রথমে চিঠি আসেছিল , পরে সশরীরে প্রতি রবিবার নবপল্লি , বারাসত থেকে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের ৩৬ ডি নম্বর বাড়িটিতে উপস্থিত হয়ে যেত আবীর সিংহ স্বয়ং। বেশ রোগা- ফর্সা প্রায় কিশোর আবীর আমার খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিল অচিরেই।
আগের প্যারাতে ৬৭ নম্বরটি নবপল্লির কথা লিখেছিলাম, কারণ আবীর-এর একটি কবিতার শিরোনামে বসানো ছিল --- ' সাতষট্টি নম্বর পাতা '। কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল কবিতাপাক্ষিক ২৯ - এ।প্রকাশকাল 09 জুলাই 1994 । ওই সংখ্যায় ' এই পক্ষের কবি ' ছিলেন : শান্তিকুমার ঘোষ প্রদীপচন্দ্র বসু শান্তিময় মুখোপাধ্যায় আবীর সিংহ এবং রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
আর ওই সংখ্যাতে আবীর -এর মোট চারটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল। আরো জানিয়ে রাখি কবিতাপাক্ষিক ২৯ - এর আগে কবিতাপাক্ষিক ২১- এ প্রকাশিত হয়েছিল আবীর-এর মোট ৮ টি কবিতা।তা সত্ত্বেও ৬৭ নম্বর -কে কেন এগিয়ে আনলাম, তার কারণ এই কবিতাটি ছিল সেই সময়ের খুব আলোচিত একটি কবিতা।এখন কবিতাটির শেষ প্যারাটি পড়ে নিতে পারেন। আমি উদ্ধৃত করছি :
অরিন্দম নামের এক স্মৃতিটান ' তেইশবছর '
'আরণ্যক ' দিয়ে বলেছিল, ' পরশু দিলেই হবে
আর সাবধান।সাতষট্টি নম্বর পাতাটা খোলা আছে .....'
কেন মুগ্ধ হয়েছিলাম , আজও তা জানি না। তবে এটুকু বলতে দ্বিধা নেই , সেই মুগ্ধতা এখনো মুছে যায়নি। আসলে কোনো মুগ্ধতাই মোছা যায় না। মোছা সম্ভব নয় বলেই।
আর সেকারণে এর বহুবছর পর বারাসত গিয়ে মনে হয়েছিল এই কবিতার শিরোনামটি।আর বাসনা হয়েছিল আবীরের সঙ্গে দ্যাখা করার। কারণ আবীর তখন কবিতা থেকে বিচ্ছিন্ন । ওকে আবার কবিতায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
গিয়েছিলাম কবি বাপন চক্রবর্তীর বাড়ি। ওখানেই দুপুরের খাওয়া-দাওয়া। বাপন-কে বলেছিলাম , আমাকে আবীরের বা। ওখানেই দুপুরের খাওয়া-দাওয়া। বাপন-কে বলেছিলাম , আমাকে আবীরের বাড়ি নিয়ে চল। আবীর নিয়ে গিয়েছিল। সেই দ্যাখা হবার ডিটেলে যাচ্ছি না। অবশেষে যখন দ্যাখা হল তখন সেই আবীরকেড়ি নিয়ে চল। আবীর নিয়ে গিয়েছিল। সেই দ্যাখা হবার ডিটেলে যাচ্ছি না। অবশেষে যখন দ্যাখা হল তখন সেই আবীরকে আমি চিনতে পারিনি। একদম অচেনা মনে হয়েছিল। কিন্তু ৬৭ নম্বর পাতাটা যে এখনো খোলা আছে , তার জন্য যথেষ্ট সাবধনতা অবলম্বন করি।
তবে এখনো বিশেষ করে কোনো দিন দ্যাখার প্রয়োজন বোধ করিনি আরণ্যক-এর ৬৭ নম্বর পাতাতে ঠিক কী লেখা আছে !
সত্যই কি বিপদজনক কিছু ! জানি না। জানতে চাইও না। কেবলমাত্র আরণ্যক-এর ৬৭ নম্বরের পাতাটি মাথা উঁচু করে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
আগামীকাল কত নম্বর পাতা , তা জানা যাবে আগামীকালই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...