সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
৬৯.
আমার বাঁকুড়া চ্যাপ্টারের সঙ্গে যেমন যুক্ত আছে রাজকল্যাণ চেল স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ সত্তরের কবিরা , ঠিক সেভাবেই কবিতাপাক্ষিক -এর প্রথম পর্বে নয়ের দশকের অনিন্দ্য রায় প্রলয় মুখোপাধ্যায় নয়ন রায় অগ্নিবর্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় উৎপল মান নির্মল রায় আশিসকুমার রায় আনন্দ দাস স্বরূপ চন্দ প্রদীপ কর প্রদীপ হালদার ভূদেব কর এবং অংশুমান কর সহ আরো অনেকেই কবিতাপাক্ষিক-কে এগিয়ে নিয়ে যেতে একান্তভাবে সচেষ্ট ছিল। এটাকে অস্বীকার করা যাবে না। তার মধ্যে আবার কয়েকজন বেলিয়াতোড় ভিত্তিক , এর উৎসে রাজকল্যাণ চেলের ভূমিকা দেখতে পাচ্ছি। এসব বৃত্তান্ত পরে অন্য কোনো লেখায়। এখন অংশুমান কর সম্পর্কিত তত্ত্বতালাশ ।
অংশুমানকে কবিতাপাক্ষিকের ১০ তম সংখ্যায় প্রথম দেখা যায়। ওই সংখ্যায় প্রকাশিত কবিতা : অন্বেষণ , যার শেষ পঙ্ ক্তিটি পড়া যাক :
আমাকে খুঁজো না হেথা ; পারো যদি দেখে নিও শব্দের অলস বিশ্রাম ।
এই অংশুমান কপা ৩০ - উপহার দিল বেলিয়াতোড় ১০ -এর ক থেকে ঙ ,পাঁচটি কবিতা। যার চিহ্ন :
লাল মাটি নীরবে গোপন করে হলুদ বিষাদ
কিংবা
গতির কাছে পরাজিত হলে বলেই তোমার স্থিরতার/
দুঃখগুলি মাত্রহীন হল
দুটি কবিতার দুটি চিহ্ন।অংশুমান ক্রমশ নিজেকে গঠন করে নিচ্ছে , এটা স্পষ্ট হল।
এবার পড়ে দেখুন একটি পঙ্ ক্তি :
স্টাটিং পয়েন্ট থেকে একশ হাত দূরে দাঁড়িয়ে আমি
দিয়ে শুরু হচ্ছে একটি কবিতা। কবিতাটির নাম ' স্টাটিং পয়েন্ট '। এটি পাঁচ পর্বের কবিতা। আমি কিছু কিছু উদ্ধৃতি করতে বাধ্য হলাম :
নোনা কিছু বালির ভেতর বোনের ইজেরের গন্ধ খুঁজে পাই
আগুনে পুড়ে যাওয়ার পৌরাণিক গল্পগুলি লেখা হয় ৷
এনরন প্রকল্পের ছেঁড়া চুক্তির নীচে দাঁড়িয়ে আমি দেখি
এই স্টাটিং পয়েন্ট কবিতাটি শেষ হচ্ছে অদ্ভুত একটি ঘোষণা দিয়ে :
যদিও তেমন কোনো বাঁশি নেই যার আওয়াজ শুনে /
প্রকৃত দৌড় শুরু করা যেতে পারে।।
তাহলে কি দৌড় এই ক্রিয়াপদটির জন্য অপেক্ষা করে আছে একটি উত্তমপুরুষ !
আরো একটু হাঁটা যাক কবিতাপাক্ষিক-এর পাতায় পাতায় , কিংবা ডালে ডালে ।
কপা ৯৬ -এ অংশুমানের চারটি কবিতা। ওই চারটি থেকে কিছু পঙ্ ক্তি :
১॥ ওষুধের মধ্যেই ঝিলিক ঝিলিক ডুবসাঁতার
২॥ বন্ধু নেই / কেবল সাইকেল থেকে ভলপিন খুলে
যাওয়ার শব্দ / কিছুক্ষণ সান্ত্বনা দেয়
৩॥ ' নীল ' একটি মেয়ের নাম দেওয়া যেতে পারে /
তাহলে ছেলেটির নাম হয় : কমলা
৪॥ বেশ তবে গ্রামোফোন বাজিয়ে দিলাম
আর আছে আমার ব্যক্তিগত গ্রামোফোনটির কয়েকটি ভাঙা রেকর্ড। সেগুলি বাজানো যেত। কিন্তু সেসব শুনতে শুনতে আমার নিজের কানই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কাজেই আপনাদের ক্লান্ত করতে যাবো কোন আনন্দে।যেখানে আনন্দ একটি ভাববাচক বিশেষ্য মাত্র।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন