বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য ৬৬ || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক বিভাগ

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী

৬৬.
আজ বলব অনিন্দ্য রায় সম্পর্কিত কথাবার্তা। অনিন্দ্য-র সঙ্গে আমার প্রথম দ্যাখা হয় কবিতাপাক্ষিক ৩  প্রকাশ অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানের কথা আগে লিখেছি । আগ্রহীরা পাতা উলটে পড়ে নিতে পারেন। আর বার্তাটি হল ওই দেখা হবার সময়কালে অনিন্দ্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের হাউসস্টাফ অথবা ইন্টান। তখনো ছাত্রকাল শেষ হয়নি। বাড়িও বাঁকুড়ায়।
 কবিতাপাক্ষিক ৪ -এ অনিন্দ্য-র প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ।কবিতাটির নাম : মনে রেখ ।
অনিন্দ্য ওখানে লিখেছিল : ' তুমি যদি পার তবে মনে কর বালকের ভুলে আসার সুতোর রুমাল ।'
কবিতাপাক্ষিক -এ ' এই পক্ষের কবি '  আরম্ভ হয়েছিল ১৩ তম সংখ্যা থেকে। আর ১৬ সংখ্যার 'এই পক্ষের কবি ছিল অনিন্দ্য রায়। হাতের পাঁজিটিতে এমনটাই লেখা আছে। কবিতাগুলির নাম দেখে নেওয়া যাক।
শ্রেণিধর্ম ॥ চেয়ার ॥ সেলাই ॥ সিঁড়ি
এই চারটি কবিতা। এই চারটি কবিতাকে চিনতে গেলে যা করতে হয় , তাই করছি।অর্থাৎ উদ্ধৃতি :
১ . চাকা নিয়ে লিখব না আর , তাই নিজেই গড়াতে
      থাকি ( শ্রেণিধর্ম ) ।
২. হাঁটু মোড়ার লালসা / আমাদের চেয়ারে বসাবে
      ( চেয়ার ) ।
৩.   সূচের কলায় যাও / তুমি কি ফোঁড়ের বোধ উপলব্ধি কর ? (সেলাই )
৪.  এই সিঁড়ি , ওঠা বা নামার ছল আমাকে শেখালো
       ( সিঁড়ি ) ।
অর্থাৎ সূচনাতেই অনিন্দ্য রায় জানিয়ে দিয়েছিল সে মফসসলের কবি নয়।বা পাঁচ মাত্রা সাত মাত্রার শহুরে কবি নয় । সে লিখতে এসেছে নতুন কবিতা ।নতুন সময়কালের কবিতা তার অর্থ এই নয় যে ছন্দে লিখলেই তা প্রাচীনকালের কবিতা হয়ে যাবে ! আর পাঁচমাত্রা - সাতমাত্রার বাইরেও ছন্দ আছে।সেই ছন্দেও কবিতা লেখা সম্ভব। এমনকী নতুন কবিতাও লেখা যায় । তার যথারীতি প্রমাণ পাওয়া গেল অনিন্দ্য-র ' কাগজের হারপুন '
কবিতা সিরিজটিতে। প্রকাশিত হয়েছিল কবিতাপাক্ষিক ৩৮ -এ। ওই সিরিজে মোট ১৮টি কবিতা ছিল। প্রতিটি কবিতা ৩ লাইনের। প্রতিটি কবিতাতেই প্রথম দু-লাইনের পর স্পেস। তারপর আরো একটা লাইন।
এভাবে বলার অর্থ এই লেখার পাঠক অনিন্দ্য-র কবিতাগুলিকে যেন সশরীরে দেখতে পান। আর সব থেকে উল্লেখযোগ্য কথাটি হল ,কবিতাগুলি নির্ভুল ছন্দে লেখা। এবং এটাও বলা যেতে পার এগুলি পরাকল্পিত লেখা। না হলে আকার -আয়তনের ভিন্নতা হত। এবার এই  ১৮ টির মধ্যে আমাকে নির্বাচন করতে হবে ১ টি কবিতা , যেটি আমি নমুনা হিসেবে আপনাদের কাছে পেশ করব।  করছি ৭ নম্বরটি :

গণিত নির্ভুল যদি তুমি তবে উপার্জিত রোদে
ক্ষুব্ধ কতদিন আর , মুদ্রা ভীতি মুখোশে থাকে না

শালিক, শালিক , তুমি তুলে নিও শিশিরের সোনা।

প্রতিটি কবিতাই একই রকম দেখতে, আগেই লিখেছি।এখন বলছি প্রতিটি কবিতাতেই নির্দিষ্ট কিছু প্রেরিতবার্তা আছে । যা পাঠককে সমৃদ্ধ করবে।
 অনিন্দ্য রায় - কে ধরতে গেলে পাঠককে তার অবস্থান বদল করতে হবে। কিছুটা উঠে এসে কথা বলতে হবে। তাহলেই অনিন্দ্য-কে ধরা যাবে । ছোঁয়াও যাবে। অনিন্দ্য-র গণিত চিন্তার কথা অন্য কোনো এপিসোডে বলা যাবে।
আগামীকাল উত্তরবঙ্গ। আর উত্তরবঙ্গ বলতে সেসময় তো সুবীর সরকার একাই ছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...